
শুরুর ধাক্কাটা সামলে নেওয়ার পথেই ছিলেন স্টিভেন স্মিথ ও জশ ইংলিশ। দুনিথ ওয়েল্লালাগের বলে ইংলিশ বোল্ড হতেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের এশিয়ায় সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ডুবিয়ে রেকর্ড গড়া জয়ে ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিল শ্রীলঙ্কা।
আগের ম্যাচে ১৬৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া এবার গুটিয়ে গেছে ২৪.২ ওভারে স্রেফ ১০৭ রানে। ২৮২ রান তাড়ায় তারা ম্যাচ হেরেছে ১৭৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রানের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় জয় এটি। এর আগে সর্বোচ্চ ৮২ রানে জিতেছিল তারা ২০১৬ সালে কলম্বোতে।
এশিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার আগের সর্বনিম্ন ছিল ১৩৯, ১৯৮৫ সালে শারজাহতে ভারতের বিপক্ষে ও ১৯৮৯ সালে মুম্বাইয়ে (তখনকার বোম্বে) পাকিস্তানের বিপক্ষে।
তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। ২০১৩ সালে ঘরের মাঠ ব্রিসবেনে স্রেফ ৭৪ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।
নিজেদের টানা দুই সিরিজে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এবং রানার্স আপ ভারতকে ২-০ ব্যবধানে হারাল লঙ্কানরা। অথচ এই দলটিই নেই কদিন পর শুরু হতে যাওয়া আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।
কলম্বোয় এদিন ২৮ রানে শেষ ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম তিন উইকেট নেন আসিথা। পরের সাত উইকেটই ভাগ করে নেন দুই স্পিনার ওয়েল্লালাগে ও ওয়ানিন্দু হারারাঙ্গা। ওয়েল্লালাগে নেন ৩৫ রানে ৪টি, ২৩ রানে তিনটি নেন হাসারাঙ্গা।
তবে ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ১১৫ বলে ১০১ রানের ইনিংসে ম্যাচের নায়ক কুসল মেন্ডিস।
আগের ম্যাচে ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে সেঞ্চুরি করা চারিথ আসালাঙ্কা অপরাজিত থাকেন ৬৬ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৮ রানে। দুই ম্যাচে ২০৫ রান করে সিরিজের সেরা লঙ্কান অধিনায়ক।
এদিন ৭০ বলে ৫১ রানের ইনিংস আসে ওপেনার নিশান মাদুশকার ব্যাট থেকে। ২১ রানে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন জানিথ লিয়ানাগে। ৪ উইকেটে ২৮১ রান তোলে স্বাগতিকরা।
সাত বোলার ব্যবহার করেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথ। কিন্তু সুবিধা করতে পারেননি। ব্যাটিংয়েও করতে পারেনি কিছুই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতিটা তাই মনের মতো হলো না দলটির।
রান তাড়ায় আগের ম্যাচে ৩১ রানে ৪ উইকেট হারানো অস্ট্রেলিয়া এদিন ৩৩ রানে হারা ৩ উই উইকেট। এরপর সেই স্মিথ আর ইংলিশের ৫০ বলে ৪৬ রানের জুটি। জুটি ভাংতেই সব শেষ হয়ে যায় মুহূর্তেই।
৩ উইকেটে ৭৯ থেকে মুহূর্তেই স্কোরবোর্ড হয়ে যায় ৯ উইকেটে ৯৪। একশ পার করতে পারে শেষ দুই ব্যাটারের কল্যাণে। তাতে অবশ্য লজ্জা এড়ানো যায়নি।
অস্ট্রেলিয়ার তিনজন ব্যাটার যেতে পারেন দুই অঙ্কে। সর্বোচ্চ ২৯ রান স্মিথের।
অস্ট্রেলিয়া এবার উড়াল দেবে পাকিস্তানে। লাহোরে আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে তারা শুরু করবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অভিযান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৮১/৪ (নিসাঙ্কা ৬, মাদুশকা ৫১, কুসাল মেন্ডিস ১০১, কামিন্দু মেন্ডিস ৪, আসালাঙ্কা ৭৮*, লিয়ানাগে ৩২*; ডোয়ার্শিস ১০-১-৪৭-১, হার্ডি ৯-০-৬০-১, অ্যাবট ১০-০-৪১-১, শর্ট ৪-০-২৫-০, স্যাঙ্ঘা ৫-০-৩৪-০, জ্যাম্পা ৮-০-৪৭-১, ম্যাক্সওয়েল ৪-০-২৩-০)
অস্ট্রেলিয়া: ২৪.২ ওভারে ১০৭ (শর্ট ২, হেড ১৮, ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক ৯, স্মিথ ২৯, ইংলিস ২২, হার্ডি ০, ম্যাক্সওয়েল ১, অ্যাবট ২, ডোয়ার্শিস ৯, জ্যাম্পা ৮, স্যাঙ্ঘা ৫*; আসিথা ৪-০-২৩-৩, থিকশানা ৩-০-১১-০, ওয়েলালাগে ৭.২-০-৩৫-৪, মালিঙ্গা ৩-০-১৫-০, হাসারাঙ্গা ৭-২-২৩-৩)
ফল: শ্রীলঙ্কা ১৭৪ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজ ২-০তে জয়ী শ্রীলঙ্কা
ম্যান অব দা ম্যাচ: কুসাল মেন্ডিস
ম্যান অব দা সিরিজ: চারিথ আসালাঙ্কা
স্পোর্টস ডেস্ক।। 



















