
দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা ব্যুরো।।
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের ইকুরিয়া মিনার মসজিদে শালিসি বৈঠক চলার সময় দুই পক্ষের উত্তেজনা ও ঝগড়ার কারণে জরিফ নামে এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই মৃত্যু নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ।
সালিসে উপস্থিত ব্যক্তি ও এলাকাবাসী এই প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যে, গত ২৮ মার্চ শুক্রবার ২০২৫ তারিখে ইকুরিয়া মিনার মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় শিশুদের দুষ্টামি সময় শিশুদের বাধা দিলে ও ধমক দিলে তাদের অভিভাবকরা একে অপরের সাথে তর্ক ও ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার বিচারের জন্য ১লা এপ্রিল মঙ্গলবার সালিসি বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই বিচারপ্রার্থী দুই পক্ষ একে অপরের সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়িয়ে পড়ে । এ সময় ডেকোরেটর ব্যবসায়ী জরিপ হঠাৎ আকস্মিকভাবে মসজিদের বারান্দায় অসুস্থ হয়ে ঢলে পড়ে। পরে তাকে মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি ও সদস্যরা সহ এলাকাবাসী মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী আরো জানিয়েছেন যে, মৃত জরিফ স্থানীয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শুভাকাঙ্ক্ষী ও নিবেদিত সুধী ছিলেন।
তার মৃত্যুতে স্থানীয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছেন।
উল্লেখ্য যে, পবিত্র রমজান মাসের শেষ শুক্রবার গত ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ইকুরিয়া মিনার মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় মসজিদে আগত শিশুদের একে অপরের সাথে দুষ্টামি ও ঝগড়ার বিষয়টি মুসল্লীরা ধমক দিলে ও শাসন করলে তাদের অভিভাবকের মধ্যে এ বিষয় নিয়ে প্রথমে তর্ক বিতর্ক ও করে ঝগড়া বিবাদ এর সৃষ্টি হয়। এ সময় একে অপরের সাথে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ১লা এপ্রিল মঙ্গলবার সালিসি বৈঠকের আয়োজন করে।
উক্ত সালিশি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, ইকুরিয়া মিনার মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি বিশিষ্ট সমাজসেবী মোহাম্মদ হানিফ, আরো উপস্থিত ছিলেন মসজিদ কমিটির সদস্য, মোহর চান আলী । এছাড়া উক্ত সালিশি বৈঠকে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন ।
শালিসি বৈঠকে উপস্থিত এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশুদের সাথে ঝগড়ার বিষয় নিয়ে মীমাংসার উদ্দেশ্যে বসা বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই উভয়পক্ষই একে অপরের সাথে তর্ক-বিতর্ক ও ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় উপস্থিত গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করার জন্য বারবার অনুরোধ করেন এবং একে অপরকে শান্ত থাকার জন্য ধমক দেন। তারপরও উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন ধরনের গালমন্দ করতে থাকেন । একপর্যায়ে উপস্থিত ডেকোরেটর ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবেদিত সুধী ও শুভাকাঙ্ক্ষী জরিফ মিয়া বয়স আনুমানিক ৫৬ বছর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি মসজিদের বারান্দায় ঢলে পড়েন। এ সময় উপস্থিত ব্যক্তিরা তাকে দ্রুত মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যায় । হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় উপস্থিত আলমগীর ও শাইকের শশুর বলেন যে, মৃত জরিপকে কেউ আঘাত করে নাই, এবং মারধর করে নাই।
জরিপ বিচারের সময় মসজিদের বারান্দায় হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পরে। তাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ বিচার দাবি করে মিছিল করেছে।
এদিকে মৃত জরিফের মেয়ের জামাই বিশাল ও তার বড় ভাই শরীফ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উক্ত লিখিত অভিযোগে, তারা স্থানীয় বিএনপি নেতা মকবুল, মোজাম্মেল, মুজাহিদ, আহাদ এর নাম উল্লেখ করেছেন ।
লিখিত অভিযোগ দায়ের এর প্রেক্ষিতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
থানা পুলিশ বলছেন ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনায় বিরাজ করছে।
দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা ব্যুরো।। 







































