শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গ্রিন টি কি সত্যিই মেদ ঝরায়?

ছবি: সংগৃহীত

এক কাপ গ্রিন টির কাপ হাতে নিয়ে অনেকেই ভেবে থাকেন—এই এক কাপ গ্রিন টিই বুঝি পেটের মেদ কমানোর জাদুকাঠি। আর এ জন্য অনেকেই খাদ্যতালিকায় যুক্ত করেন গ্রিনটি। আসলেই এই পানীয় মেদ কমায় কিনা সেটা নিয়ে কম গবেষণা হয়নি। সম্প্রতি একটি গবেষণা করা হয়েছে, যাতে উঠে এসেছে গ্রিন টি পানের বিভিন্ন দিক। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন চিকিৎসক।

মেদ ঝরানো বা ‘ফ্যাট বার্নিং’ বলতে আমরা বোঝাই শরীরের লিপিডের ভাঙন যা ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয় এবং জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা ওজন কমানো বা শরীরের গঠন পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন, অর্থাৎ চর্বি কমিয়ে পেশি বৃদ্ধি করা। এটি জানিয়েছেন লাফবরো ইউনিভার্সিটির পারফরম্যান্স নিউট্রিশনিস্ট বেথান ক্রাউস।

নিয়মিত ব্যায়াম ফ্যাট অক্সিডেশনের হার বাড়াতে সাহায্য করে। কম বা মাঝারি মাত্রার ব্যায়ামে মূলত চর্বিই হয় শরীরের জ্বালানি। তবে ব্যায়ামের তীব্রতা বাড়লে শরীর কার্বোহাইড্রেটকে বেশি ব্যবহার করতে শুরু করে। বেথান বলেন, এমন কোনো খাবার নেই যা নিজে নিজেই মেদ ঝরাতে পারে। কারণ কোনো খাবারকে যদি মেদ ঝরাতে হয়, তাহলে সেটিকে ব্যায়ামের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে হবে শরীরে—যা প্রায় অসম্ভব।

বেথান বলেন, এমন কোনো খাবার নেই যা নিজে নিজেই মেদ ঝরাতে পারে। কারণ কোনো খাবারকে যদি মেদ ঝরাতে হয়, তাহলে সেটিকে ব্যায়ামের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে হবে শরীরে—যা প্রায় অসম্ভব।

তাহলে গ্রিন টিকে ঘিরে এত আলোচনার কারণ কী: বেথান ক্রাউস জানান, এর পেছনে মূল কারণ ক্যাফেইন। গ্রিন টিতে থাকা ক্যাফেইন কখনো কখনো ফ্যাট অক্সিডেশন বাড়াতে পারে। ক্যাফেইন শরীরে ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার ফলে অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিনের মতো হরমোন নিঃসরণ হয় এবং শরীরের শক্তি ভাণ্ডার সক্রিয় হয়ে ওঠে।

তবে, বেথান স্পষ্ট করে বলেন, এই প্রভাব খুবই সামান্য এবং গবেষণাগুলোও তেমন জোরালো নয়। কেউ যদি শরীরের গঠন পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে কেবল গ্রিন টির ওপর নির্ভর করাটা একদমই যুক্তিযুক্ত নয়।

অতিরিক্ত ক্যালোরি মানেই বাড়তি ওজন: অনেকেই ভাবেন, ব্যায়াম করলেই ওজন কমে। কিন্তু যদি আপনি বেশি ক্যালোরি খান এবং সেটি ব্যায়ামের মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলতে না পারেন, তাহলে শরীরের ওজন কমবে না। আপনি চর্বি পুড়িয়েও ওজন কমাতে নাও পারেন, যদি আপনি ক্যালোরি ঘাটতিতে না থাকেন, বলেন বেথান।

ওজন নিয়ন্ত্রণে করণীয়

সুপারফুড, সাপ্লিমেন্ট বা গুজব নয়—

সচেতন ডায়েট

নিয়মিত ব্যায়াম

ধীরে ধীরে ক্যালোরি ঘাটতি

বেথান বলেন মূলত এগুলোই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার আসল পন্থা। এক কাপ গ্রিন টি খারাপ না, বরং উপকারী। কিন্তু ওজন কমানোর অলৌকিক সমাধান নয়—এটা মনে রাখা জরুরি।

জনপ্রিয়

টাঙ্গাইলের শাড়ি পরে বড়দিন উদযাপন করলেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার

গ্রিন টি কি সত্যিই মেদ ঝরায়?

প্রকাশের সময় : ০৪:১১:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫

এক কাপ গ্রিন টির কাপ হাতে নিয়ে অনেকেই ভেবে থাকেন—এই এক কাপ গ্রিন টিই বুঝি পেটের মেদ কমানোর জাদুকাঠি। আর এ জন্য অনেকেই খাদ্যতালিকায় যুক্ত করেন গ্রিনটি। আসলেই এই পানীয় মেদ কমায় কিনা সেটা নিয়ে কম গবেষণা হয়নি। সম্প্রতি একটি গবেষণা করা হয়েছে, যাতে উঠে এসেছে গ্রিন টি পানের বিভিন্ন দিক। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন চিকিৎসক।

মেদ ঝরানো বা ‘ফ্যাট বার্নিং’ বলতে আমরা বোঝাই শরীরের লিপিডের ভাঙন যা ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত হয় এবং জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা ওজন কমানো বা শরীরের গঠন পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন, অর্থাৎ চর্বি কমিয়ে পেশি বৃদ্ধি করা। এটি জানিয়েছেন লাফবরো ইউনিভার্সিটির পারফরম্যান্স নিউট্রিশনিস্ট বেথান ক্রাউস।

নিয়মিত ব্যায়াম ফ্যাট অক্সিডেশনের হার বাড়াতে সাহায্য করে। কম বা মাঝারি মাত্রার ব্যায়ামে মূলত চর্বিই হয় শরীরের জ্বালানি। তবে ব্যায়ামের তীব্রতা বাড়লে শরীর কার্বোহাইড্রেটকে বেশি ব্যবহার করতে শুরু করে। বেথান বলেন, এমন কোনো খাবার নেই যা নিজে নিজেই মেদ ঝরাতে পারে। কারণ কোনো খাবারকে যদি মেদ ঝরাতে হয়, তাহলে সেটিকে ব্যায়ামের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে হবে শরীরে—যা প্রায় অসম্ভব।

বেথান বলেন, এমন কোনো খাবার নেই যা নিজে নিজেই মেদ ঝরাতে পারে। কারণ কোনো খাবারকে যদি মেদ ঝরাতে হয়, তাহলে সেটিকে ব্যায়ামের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে হবে শরীরে—যা প্রায় অসম্ভব।

তাহলে গ্রিন টিকে ঘিরে এত আলোচনার কারণ কী: বেথান ক্রাউস জানান, এর পেছনে মূল কারণ ক্যাফেইন। গ্রিন টিতে থাকা ক্যাফেইন কখনো কখনো ফ্যাট অক্সিডেশন বাড়াতে পারে। ক্যাফেইন শরীরে ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার ফলে অ্যাড্রেনালিন ও নরঅ্যাড্রেনালিনের মতো হরমোন নিঃসরণ হয় এবং শরীরের শক্তি ভাণ্ডার সক্রিয় হয়ে ওঠে।

তবে, বেথান স্পষ্ট করে বলেন, এই প্রভাব খুবই সামান্য এবং গবেষণাগুলোও তেমন জোরালো নয়। কেউ যদি শরীরের গঠন পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে কেবল গ্রিন টির ওপর নির্ভর করাটা একদমই যুক্তিযুক্ত নয়।

অতিরিক্ত ক্যালোরি মানেই বাড়তি ওজন: অনেকেই ভাবেন, ব্যায়াম করলেই ওজন কমে। কিন্তু যদি আপনি বেশি ক্যালোরি খান এবং সেটি ব্যায়ামের মাধ্যমে পুড়িয়ে ফেলতে না পারেন, তাহলে শরীরের ওজন কমবে না। আপনি চর্বি পুড়িয়েও ওজন কমাতে নাও পারেন, যদি আপনি ক্যালোরি ঘাটতিতে না থাকেন, বলেন বেথান।

ওজন নিয়ন্ত্রণে করণীয়

সুপারফুড, সাপ্লিমেন্ট বা গুজব নয়—

সচেতন ডায়েট

নিয়মিত ব্যায়াম

ধীরে ধীরে ক্যালোরি ঘাটতি

বেথান বলেন মূলত এগুলোই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার আসল পন্থা। এক কাপ গ্রিন টি খারাপ না, বরং উপকারী। কিন্তু ওজন কমানোর অলৌকিক সমাধান নয়—এটা মনে রাখা জরুরি।