
সম্পর্ক মানেই শুধু সুখ আর আনন্দ নয়, এর মাঝেই লুকিয়ে থাকতে পারে মানসিক চাপে ভরা কঠিন মুহূর্ত। বর্তমানে ‘টক্সিক রিলেশনশিপ’ শব্দটি সামাজিক মাধ্যমে বেশ আলোচিত। মূলত যখন মানসিক শান্তি হারিয়ে যায়, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়, সেটিকেই সহজভাবে টক্সিক বা বিষাক্ত সম্পর্ক বলা যায়।
প্রশ্ন হচ্ছে, এমন সম্পর্ক থেকে কি বেরিয়ে আসাই একমাত্র সমাধান? না কি ভালোবাসা, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক প্রচেষ্টায় এই সম্পর্কও নতুন করে গড়ে তোলা সম্ভব? হেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে মনোবিদরা বলছেন, টক্সিক সম্পর্ক শুধুমাত্র তখনই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, যদি উভয় পক্ষ নিজ নিজ ভুল বুঝে তা ঠিক করতে চায়। একক চেষ্টায় সম্পর্ক সুস্থ করা প্রায় অসম্ভব।
যেভাবে টক্সিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রূপ দেয়া সম্ভব: মনোবিদরা টক্সিক সম্পর্ক ঠিক করার বেশকিছু উপায় জানিয়েছেন। এগুলো হলো:
দায় স্বীকার ও আত্মসমালোচনা: মনোবিজ্ঞানী ড. কারলা ম্যানলির মতে, সম্পর্কের উন্নতির প্রথম ধাপ হলো নিজের আচরণের দোষ খুঁজে তা স্বীকার করা। নিজের অনুভূতি বোঝা এবং পারস্পরিক সমস্যা নিয়ে খোলামেলা কথা বলা সম্পর্ককে ইতিবাচক পথে নিতে সাহায্য করে।
সম্পর্কের জন্য সময় ও শ্রম বিনিয়োগ: সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে শুধু ভালোবাসা যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সময় এবং পারস্পরিক প্রচেষ্টা।
একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধানে আলোচনা
নিয়মিত মানসম্পন্ন সময় কাটানো
নতুন অভ্যাস গড়ে তোলা
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে শুধু ভালোবাসা যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন সময় এবং পারস্পরিক প্রচেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত
দোষারোপ নয়, বোঝাপড়ার ভিত্তিতে আলোচনা: সম্পর্কে টানাপোড়েন এড়াতে একে অপরকে দোষারোপ না করে বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
নিজের ভুল স্বীকারে আগ্রহ
সঙ্গীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা
প্রতিক্রিয়া নয়, প্রতিফলন—এটাই সমাধান
পেশাদার সাহায্য নেয়া: যদি নিজেদের মধ্যে সমাধানে পৌঁছানো কঠিন হয়, তাহলে পেশাদার কাউন্সেলিং নেয়া কার্যকর হতে পারে।
নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষের পরামর্শ
সুস্থ ও সম্মানজনক যোগাযোগে সহায়তা
সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা
একটি টক্সিক সম্পর্ক মানেই তা শেষ করে দিতে হবে—এই ধারণা সবসময় ঠিক নয়। বরং সম্পর্ক যদি ভালোবাসার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে এবং উভয়েই নিজেকে বদলাতে প্রস্তুত থাকে, তাহলে সেই সম্পর্ক নতুন করে সাজানো সম্ভব। দুজনই যদি দায় স্বীকার করে, দোষারোপের পথ বাদ দেয়, একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করে এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়, তবে বিষাক্ত সম্পর্কও একসময় হয়ে উঠতে পারে সুস্থ, শান্তিপূর্ণ এবং স্থায়ী।
লাইফস্টাইল ডেস্ক 







































