
আল মোজাহিদ বাবু ,বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারনে উপজেলার মেরুরচর ও সাধুরপাড়ার দিয়ে বয়ে যাওয়া পুরাতন ব্রম্মপুত্রের শাখা দশানী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। মেরুরচর ইউনিয়নের চরআইরমারী নতুনপাড়া, খাপড়াপাড়া, মুন্দিপাড়া, ঘোগরাকান্দিসহ গ্ৰামের অর্ধশতাধীক বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়েছে কয়েক হেক্টর ফসলি জমি। দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার মানুষ।
ভুক্তভোগী পাঙ্খা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই ঘোগরাকান্দি এলাকায় বসবাস করে আসতেছি। গত কয়েক বছর ধরে নদীর ভাঙ্গনে অনেক কষ্টে আছি। ভাঙ্গনে এ পাড় থেকে ও পাড় আবার ওপাড় থেকে এই পাড় এভাবেই চলছে আমাদের জীবন। টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হলেই তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। প্রতিবছর একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে আমাদের বসত বাড়ির সবটুকু জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গত তিনদিনের টানা ভারী বর্ষণে পাহাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমাদের বসবাসের জায়গাটুকু বিলীন হয়ে গেছে নদীতে । আমাদের আর অন্য কোথাও বসতবাড়ি গড়ার জায়গা নেই। বর্তমানে দুই ছেলে নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছি।
একই গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আমার বসতবাড়ি টুকু ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে। এই বসতভিটা ছাড়া আমার অন্য কোথাও মাথা গুজার ঠাই নাই। গত তিন দিনের পাহাড়ি ঢলে শেষ সম্বল বাড়ির ভিটাটুকু এই দশানীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারি কোনো সহায়তা পাইনি। তাই প্রশাসনের নিকট আমাদের আকুল আবেদন ত্রান নয় দীর্ঘস্থায়ী সমাধান চাই।
এলাকার স্থানীয় লোকজন বলেন, প্রতিবছর এভাবে ভেঙে দুই উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষগুলো অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এর দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না হলে মেরুরচর ইউনিয়নের ঘোগরাকান্দি, মুন্দীপাড়া,কলকিহারা ও সাধুরপাড়া ইউনিয়নের বাঙালপাড়াসহ কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষের বাড়িঘরের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়াও নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ,মাদ্রাসাসহ শত শত স্থাপনা। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, নদী ভাঙনে বাড়িঘর বিলীন হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় ভাঙন রোধে জি ও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, নদী ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হবে।
আল মোজাহিদ বাবু ,বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি 







































