বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চিনবেন কীভাবে?

ছবি-সংগৃহীত

শুরু হয়েছে পশুর হাটে গরু বেচাকেনার তাড়া। কোরবানি ঈদে পশু কোরবানি দিতে অনেকেই ঢুঁ মারছেন বিভিন্ন স্থানে বসা পশুর হাটে। এসব হাটে উট, খাসি পসরা বসলও বেশি চাহিদা থাকে গরুর। আর তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করে হাটে তোলেন। কিছু সহজ বিষয় খেয়াল করলেই এসব গরু সহজে চেনা যায়।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে মূলত তিন ধরনের গরু পশুর হাটে দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো হলো দেশি গরু, বিদেশি গরু আর দেশি বিদেশির মিশেলে সংকর প্রজাতির গরু। মূলত বিদেশি আর সংকর প্রজাতির গরুগুলোকেই অসাধু খামারিরা নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্টেরয়েড হরমোন প্রয়োগ করা গরুর মাংস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল তো করেই সেই সঙ্গে স্বাগত জানায় নানান জটিল রোগকেও। কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা মাংস খাওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহতা হলো বন্ধ্যাত্ব, উচ্চ রক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়া, হৃদ্‌রোগ  ধরা পড়ে ইত্যাদি।
 
উন্নত দেশের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ পশু মোটাতাজাকরণের জন্য স্টেরয়েড, ইনজেকশন, হরমোন ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করেছে। এসব নিষিদ্ধ ওষুধ যে শুধু মানুষের স্বাস্থ্যকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এমনটা কিন্তু নয়। পশু চিকিৎসকরা বলছেন, এমন ওষুধ প্রয়োগে বিপর্যয় নেমে আসে প্রাণিটির ওপরও।
 
কারণ দ্রুত মোটা তাজা করার চক্করে নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগের ২০-২৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে পশুটিরও মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এমন পশু কখনই কোরবানি দেয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
 
আসুন এক নজরে জেনে নিই, কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চেনার কিছু সহজ উপায়-
 
আঙুলের চাপ: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে মোটা গবাদি পশুর ক্ষেত্রে দ্রুতই মাংস স্বাভাবিক হয়।
 
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়। খুবই ক্লান্ত দেখায়।  ইনজেকশন দেয়া গরুর রানের মাংস নরম হয়। স্বাভাবিকভাবে যেসব গরু মোটা হয় সেগুলোর রানের মাংস শক্ত হয়।
 
লালা বা ফেনা: যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে সেই গরু কেনার চেষ্টা করুন। এগুলো কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা পশু নয়।
 
খুব শান্ত: স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো বা ইনজেকশন দেয়া গরু হবে খুব শান্ত। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারবে না। পশুর ঊরুতে অনেক মাংস মনে হবে।
 
শরীরে পানি জমে: অতিরিক্ত হরমোনের কারণে পুরো শরীরে পানি জমে মোটা দেখাবে। আঙুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে সেখানে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে থাকবে।
 
খাবার: গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি নিজ থেকে জিব দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। যদি অসুস্থ হয়, তবে সে খাবার খেতে চায় না।
 
নাকের ওপরটা ভেজা: সুস্থ গরুর নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে। সুস্থ গরুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়।
 
 পা ও মুখ ফোলা: বিশেষ করে গরুর পা ও মুখ ফোলা, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় গরু ঝিমুবে, সহজে নড়াচড়া করবে না। এসব গরু অসুস্থতার কারণে সবসময় নীরব থাকে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। খাবারও খেতে চায় না।
 
কী করবেন?
 
হাটে যাওয়ার পর উশকোখুশকো চামড়ার ওপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে পড়া পশু কিনতে চেষ্টা করুন। এগুলো কোনোরকম কৃত্রিম উপায় ছাড়াই বাজারে সরবরাহ করা হয়। কোরবানির গরু কেনার সময় এর চামড়াও পরখ করে নিন। কেননা চামড়া চকচক করা গরু বা ছাগলকে দেয়া হয় ইনজেকশন। তাই এসব গরুও কেনা থেকে বিরত থাকুন। সূত্র-সময় টিভি অনলাইন
জনপ্রিয়

তারেক রহমান মঞ্চে একাই বক্তব্য রাখবেন

কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চিনবেন কীভাবে?

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

শুরু হয়েছে পশুর হাটে গরু বেচাকেনার তাড়া। কোরবানি ঈদে পশু কোরবানি দিতে অনেকেই ঢুঁ মারছেন বিভিন্ন স্থানে বসা পশুর হাটে। এসব হাটে উট, খাসি পসরা বসলও বেশি চাহিদা থাকে গরুর। আর তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় কৃত্রিম উপায়ে গরু মোটাতাজা করে হাটে তোলেন। কিছু সহজ বিষয় খেয়াল করলেই এসব গরু সহজে চেনা যায়।

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে মূলত তিন ধরনের গরু পশুর হাটে দেখতে পাওয়া যায়। এগুলো হলো দেশি গরু, বিদেশি গরু আর দেশি বিদেশির মিশেলে সংকর প্রজাতির গরু। মূলত বিদেশি আর সংকর প্রজাতির গরুগুলোকেই অসাধু খামারিরা নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, স্টেরয়েড হরমোন প্রয়োগ করা গরুর মাংস শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল তো করেই সেই সঙ্গে স্বাগত জানায় নানান জটিল রোগকেও। কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা মাংস খাওয়ার সবচেয়ে ভয়াবহতা হলো বন্ধ্যাত্ব, উচ্চ রক্তচাপ, মুটিয়ে যাওয়া, হৃদ্‌রোগ  ধরা পড়ে ইত্যাদি।
 
উন্নত দেশের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ পশু মোটাতাজাকরণের জন্য স্টেরয়েড, ইনজেকশন, হরমোন ট্যাবলেট নিষিদ্ধ করেছে। এসব নিষিদ্ধ ওষুধ যে শুধু মানুষের স্বাস্থ্যকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে এমনটা কিন্তু নয়। পশু চিকিৎসকরা বলছেন, এমন ওষুধ প্রয়োগে বিপর্যয় নেমে আসে প্রাণিটির ওপরও।
 
কারণ দ্রুত মোটা তাজা করার চক্করে নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগের ২০-২৫ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক ক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়ে পশুটিরও মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই এমন পশু কখনই কোরবানি দেয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
 
আসুন এক নজরে জেনে নিই, কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা গরু চেনার কিছু সহজ উপায়-
 
আঙুলের চাপ: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরুর গায়ে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে মোটা গবাদি পশুর ক্ষেত্রে দ্রুতই মাংস স্বাভাবিক হয়।
 
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ: কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকরণ গরু দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপায়। খুবই ক্লান্ত দেখায়।  ইনজেকশন দেয়া গরুর রানের মাংস নরম হয়। স্বাভাবিকভাবে যেসব গরু মোটা হয় সেগুলোর রানের মাংস শক্ত হয়।
 
লালা বা ফেনা: যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে সেই গরু কেনার চেষ্টা করুন। এগুলো কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা পশু নয়।
 
খুব শান্ত: স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো বা ইনজেকশন দেয়া গরু হবে খুব শান্ত। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারবে না। পশুর ঊরুতে অনেক মাংস মনে হবে।
 
শরীরে পানি জমে: অতিরিক্ত হরমোনের কারণে পুরো শরীরে পানি জমে মোটা দেখাবে। আঙুল দিয়ে গরুর শরীরে চাপ দিলে সেখানে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে থাকবে।
 
খাবার: গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি নিজ থেকে জিব দিয়ে খাবার টেনে নিয়ে খেতে থাকে তবে বোঝা যাবে গরুটি সুস্থ। যদি অসুস্থ হয়, তবে সে খাবার খেতে চায় না।
 
নাকের ওপরটা ভেজা: সুস্থ গরুর নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে। সুস্থ গরুর পিঠের কুঁজ মোটা ও টান টান হয়।
 
 পা ও মুখ ফোলা: বিশেষ করে গরুর পা ও মুখ ফোলা, শরীর থলথল করবে, অধিকাংশ সময় গরু ঝিমুবে, সহজে নড়াচড়া করবে না। এসব গরু অসুস্থতার কারণে সবসময় নীরব থাকে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। খাবারও খেতে চায় না।
 
কী করবেন?
 
হাটে যাওয়ার পর উশকোখুশকো চামড়ার ওপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে পড়া পশু কিনতে চেষ্টা করুন। এগুলো কোনোরকম কৃত্রিম উপায় ছাড়াই বাজারে সরবরাহ করা হয়। কোরবানির গরু কেনার সময় এর চামড়াও পরখ করে নিন। কেননা চামড়া চকচক করা গরু বা ছাগলকে দেয়া হয় ইনজেকশন। তাই এসব গরুও কেনা থেকে বিরত থাকুন। সূত্র-সময় টিভি অনলাইন