সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রাজবাড়ীর

কালের সাক্ষী হয়ে অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে পাংশা রেলস্টেশনের জলঘর

মেহেদী হাসান, রাজবাড়ী  
প্রাচীন কালের ব্যবহৃত রাজবাড়ী জেলার পাংশা রেলস্টেশনের পাশে জলঘর। যা একসময় রেলের ইন্জিন গরম হয়ে গেলে ঠান্ডা করার জন্য ব্যবহার করা হত এই জলঘরের জল। বর্তমানে  এই  জলঘর ব্যবহার না হওয়ার কারণে সবুজ আগাছায় ছেয়ে আছে লালচে এ ভবনের নাম জলঘর। রাজবাড়ীর পাংশা রেলস্টেশনের পাশে  কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের তৈরি এ জল ঘর। পাংশার ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ব্রিটিশরা  ১৮৬২ সালে প্রথম ভারতের কলকাতা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য রেলপথ নির্মাণ করেন। ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি থেকে বর্তমানে রাজবাড়ীর (তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) গোয়ালন্দ  উপজেলার  বিখ্যাত  গোয়ালন্দ ঘাট  পর্যন্ত  এক লাইনে রেলপথ নির্মাণ করেন ঐ   তার মাঝেই তৈরী হয় ঐ জলঘর। পরে ১৯৮৮ সালে গোয়ালন্দ  বাজার হতে দৌলতদিয়া (পদ্মা নদীর) ঘাট পর্যন্ত  রেললাইন নির্মাণ করা হয়। যা কুষ্টিয়া থেকে  দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত   প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক লাইনের রেলপথ বানানো হয়।
তখনকার সময়ে রেলগাড়ি টানার জন্য কয়লাচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কয়লাচালিত ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হয়ে যেত। গরম ইঞ্জিন শীতল করার জন্য কুষ্টিয়ার জগতি ও দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে নির্মাণ করা হয় এ জলঘর।
১৮৬৯ সালে ইট, খোয়া ও চুনের সংমিশ্রণে গোলাকার ও লম্বা এ ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫-৪০ ফুট উঁচু এ জলঘর। ঘরের দরজা রাখা হয় রেললাইনের দিকে। জলঘরের ওপরের দিকে ওঠা ও নিচে নামার জন্য লোহার পাত দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে এ জলঘর ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শাসনামল শুরু হওয়ার পরপরই জলঘরটি থেকে রেলগাড়ির ইঞ্জিনে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জলঘরের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।
জলঘরটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে পাংশার বুকে। এর লাল রং এখনো ঝকঝকে, দেয়ালের কোনো স্থান থেকেই এখন পর্যন্ত একটি ইট বা খোয়ার অংশবিশেষ খুলে পড়তে দেখা যায়নি। বৃটিশদের নির্মিত প্রায় ১৬০ বছরের পুরনো  জলঘর টি পাংশা রেলস্টেশনের পাশে কালের  সাক্ষী হয়ে  এখনো অক্ষত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে।
জনপ্রিয়

যশোর বাঘারপাড়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হাজারো মানুষের দোয়া

রাজবাড়ীর

কালের সাক্ষী হয়ে অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে পাংশা রেলস্টেশনের জলঘর

প্রকাশের সময় : ০৫:০৮:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫
মেহেদী হাসান, রাজবাড়ী  
প্রাচীন কালের ব্যবহৃত রাজবাড়ী জেলার পাংশা রেলস্টেশনের পাশে জলঘর। যা একসময় রেলের ইন্জিন গরম হয়ে গেলে ঠান্ডা করার জন্য ব্যবহার করা হত এই জলঘরের জল। বর্তমানে  এই  জলঘর ব্যবহার না হওয়ার কারণে সবুজ আগাছায় ছেয়ে আছে লালচে এ ভবনের নাম জলঘর। রাজবাড়ীর পাংশা রেলস্টেশনের পাশে  কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশদের তৈরি এ জল ঘর। পাংশার ইতিহাস থেকে জানা গেছে, ব্রিটিশরা  ১৮৬২ সালে প্রথম ভারতের কলকাতা থেকে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি পর্যন্ত যোগাযোগের জন্য রেলপথ নির্মাণ করেন। ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার জগতি থেকে বর্তমানে রাজবাড়ীর (তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা) গোয়ালন্দ  উপজেলার  বিখ্যাত  গোয়ালন্দ ঘাট  পর্যন্ত  এক লাইনে রেলপথ নির্মাণ করেন ঐ   তার মাঝেই তৈরী হয় ঐ জলঘর। পরে ১৯৮৮ সালে গোয়ালন্দ  বাজার হতে দৌলতদিয়া (পদ্মা নদীর) ঘাট পর্যন্ত  রেললাইন নির্মাণ করা হয়। যা কুষ্টিয়া থেকে  দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত   প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক লাইনের রেলপথ বানানো হয়।
তখনকার সময়ে রেলগাড়ি টানার জন্য কয়লাচালিত ইঞ্জিন ব্যবহার করা হতো। কয়লাচালিত ইঞ্জিন প্রচণ্ড গরম হয়ে যেত। গরম ইঞ্জিন শীতল করার জন্য কুষ্টিয়ার জগতি ও দৌলতদিয়া ঘাট রেলস্টেশনের মাঝামাঝি পাংশা রেলওয়ে স্টেশনের পাশে নির্মাণ করা হয় এ জলঘর।
১৮৬৯ সালে ইট, খোয়া ও চুনের সংমিশ্রণে গোলাকার ও লম্বা এ ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫-৪০ ফুট উঁচু এ জলঘর। ঘরের দরজা রাখা হয় রেললাইনের দিকে। জলঘরের ওপরের দিকে ওঠা ও নিচে নামার জন্য লোহার পাত দিয়ে সিঁড়ি বানানো হয়।
ব্রিটিশ শাসনামলে এ জলঘর ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান শাসনামল শুরু হওয়ার পরপরই জলঘরটি থেকে রেলগাড়ির ইঞ্জিনে পানি দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত জলঘরের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।
জলঘরটি কালের সাক্ষী হয়ে আছে পাংশার বুকে। এর লাল রং এখনো ঝকঝকে, দেয়ালের কোনো স্থান থেকেই এখন পর্যন্ত একটি ইট বা খোয়ার অংশবিশেষ খুলে পড়তে দেখা যায়নি। বৃটিশদের নির্মিত প্রায় ১৬০ বছরের পুরনো  জলঘর টি পাংশা রেলস্টেশনের পাশে কালের  সাক্ষী হয়ে  এখনো অক্ষত অবস্থায় দাড়িয়ে আছে।