বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থনৈতিক খাতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ফেরেনি: টিআইবি

ছবি: সংগৃহীত

দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, বাড়েনি কর্মসংস্থান; বিনিয়োগেও রয়েছে স্থবিরতা। রিজার্ভ বাড়লেও কাঠামোগত চাপ রয়েছে, আর প্রকৃত অর্থে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখনও সীমিত-এমন চিত্রই উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পর্যবেক্ষণে।

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

 অর্থনৈতিক খাতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি নেই উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের দাবি থাকলেও এতে কোনও অগ্রগতি হয়নি। রাজস্ব ঘাটতি এবং ঋণ খেলাপি পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। এমনকি কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও আয়করের তিন খাতেই লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হয়েছে।
 
গবেষণা প্রতিবেদনের মূল উপস্থাপনায় টিআইবি জানায়, ঘাটতি গোপন করে দেশত্যাগে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। ঢালাওভাবে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেফতার ও মামলা বাণিজ্যের অভিযোগও উঠে এসেছে। এমনকি গ্রেফতারকৃতরা আদালতের ভেতরে হামলার শিকার হয়েছেন। আন্দোলনের পর বিভিন্ন থানায় হামলা, প্রতিশোধমূলক আটক ও জামিন না মঞ্জুরের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
 
ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা ও হত্যায় ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু এবং আইন সংশোধনে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতির কথাও জানানো হয়। এ সময়ের মধ্যে ৫০টি আইন প্রণয়ন হলেও, শুধু নাম পরিবর্তনের জন্য ১৩টি অধ্যাদেশ জারি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। গুম সংক্রান্ত রিপোর্ট ও যাচাই-বাছাই শেষ হলেও বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আলামত নষ্টের অভিযোগও রয়েছে পর্যবেক্ষণে।
 
বিচার সংস্কার নির্বাচন নিয়ে কোন রোডম্যাপ শুরুতে না থাকার কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ, পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক উল্লেখ করে টিআইবি জানায়, তবে মব জাস্টিস বা গণপিটুনিতে মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মবকে ক্ষুব্ধ মানুষের ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে অভিহিত করা আইনশৃঙ্খলার বড় ঘাটতি। মব তৈরি করে দাবি আদায়ের প্রবণতা ও সাফল্য দেখা দেয় যা সামাজিক অসহনশীলতা রোধে সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
 
এদিকে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানুষ দীর্ঘসময় শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে কৃষকের অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিকরন এবং নারী ও শিশুর সহিংসতারোধে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

অর্থনৈতিক খাতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি ফেরেনি: টিআইবি

প্রকাশের সময় : ০১:০৭:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫

দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, বাড়েনি কর্মসংস্থান; বিনিয়োগেও রয়েছে স্থবিরতা। রিজার্ভ বাড়লেও কাঠামোগত চাপ রয়েছে, আর প্রকৃত অর্থে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখনও সীমিত-এমন চিত্রই উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পর্যবেক্ষণে।

সোমবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে টিআইবির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশ: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী এক বছরের ওপর পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

 অর্থনৈতিক খাতে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি নেই উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের দাবি থাকলেও এতে কোনও অগ্রগতি হয়নি। রাজস্ব ঘাটতি এবং ঋণ খেলাপি পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। এমনকি কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর ও আয়করের তিন খাতেই লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হয়েছে।
 
গবেষণা প্রতিবেদনের মূল উপস্থাপনায় টিআইবি জানায়, ঘাটতি গোপন করে দেশত্যাগে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে। ঢালাওভাবে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের, গ্রেফতার ও মামলা বাণিজ্যের অভিযোগও উঠে এসেছে। এমনকি গ্রেফতারকৃতরা আদালতের ভেতরে হামলার শিকার হয়েছেন। আন্দোলনের পর বিভিন্ন থানায় হামলা, প্রতিশোধমূলক আটক ও জামিন না মঞ্জুরের ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
 
ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা ও হত্যায় ইন্ধনদাতাদের বিরুদ্ধে মামলা, শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু এবং আইন সংশোধনে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতির কথাও জানানো হয়। এ সময়ের মধ্যে ৫০টি আইন প্রণয়ন হলেও, শুধু নাম পরিবর্তনের জন্য ১৩টি অধ্যাদেশ জারি হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। গুম সংক্রান্ত রিপোর্ট ও যাচাই-বাছাই শেষ হলেও বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার বিরুদ্ধে আলামত নষ্টের অভিযোগও রয়েছে পর্যবেক্ষণে।
 
বিচার সংস্কার নির্বাচন নিয়ে কোন রোডম্যাপ শুরুতে না থাকার কারণে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ, পরবর্তীতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক উল্লেখ করে টিআইবি জানায়, তবে মব জাস্টিস বা গণপিটুনিতে মৃত্যু আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মবকে ক্ষুব্ধ মানুষের ‘প্রেশার গ্রুপ’ হিসেবে অভিহিত করা আইনশৃঙ্খলার বড় ঘাটতি। মব তৈরি করে দাবি আদায়ের প্রবণতা ও সাফল্য দেখা দেয় যা সামাজিক অসহনশীলতা রোধে সরকারের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
 
এদিকে, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সুযোগ থেকে মানুষ বঞ্চিত হয়েছে মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মানুষ দীর্ঘসময় শান্তিপূর্ণ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে।