মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক আমলকীতে ১০ কমলার সমান ভিটামিন সি

ছবি-সংগৃহীত

আমাদের প্রতিটি খাবারই শরীরের ভারসাম্য অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। আর সেটাই হচ্ছে সঠিক ডায়েটের প্রধান লক্ষণ। তাই অন্য কারও কথায় নিজের ডায়েটের আমূল পরিবর্তন আনবেন না। যদিও বিশেষ কোনো নির্দিষ্ট খাবার প্রতিদিন খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হবে আপনার বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ প্রত্যেক মানুষ তার শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও সমস্যা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।

তাই আমলকীর মতো ফলও সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে। যদিও আমরা সবাই ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি একটি আমলকীতে ১০টি কমলার সমান ভিটামিন ‘সি’ থাকে। নিঃসন্দেহে আমলকী আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ফল। এর ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অসাধারণ রয়েছে। আর নিয়মিত আমলকী খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, সর্দি-কাশি এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বার্ধক্য ধীর করে, ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং চুল মজবুত করে।

সেই সঙ্গে হজমশক্তি ভালো করে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কমানো এবং হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও আমলকী ভীষণ কার্যকর। কিন্তু সবার শরীরের জন্যই কি এটি সমানভাবে উপকারী?

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন স্বাস্থ্যে সমস্যা থাকলে আমলকী সাবধানে খাওয়া উচিত

যেসব কারণে নিয়মিত আমলকী খেতে সাবধানে থাকবেন আপনি

প্রথমত ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আমলকী খাওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ আমলকীতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। তবে যাদের রক্তে সুগার হঠাৎ করে কমে যায় কিংবা যাদের শরীরে শর্করার মাত্রা সাধারণত কম থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত আমলকী খাওয়া বিপজ্জনক। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

দ্বিতীয়ত হার্টের রোগীর জন্য আমলকী ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আমলকী হার্টের জন্য ভালো হলেও, যাদের আগে থেকেই হৃদরোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি নিয়মিত খাওয়া উচিত নয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। যেমন ব্লাড থিনার ওষুধের সঙ্গে

তৃতীয়ত রক্তচাপের ক্ষেত্রে আমলকী খাওয়া থেকে সাবধান। আমলকী রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ঠিক আছে। কিন্তু যাদের রক্তচাপ আগে থেকেই কম বা প্রেশার কমে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের জন্য এটি বেশি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। নিয়মিত বেশি পরিমাণ আমলকী খেলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এমনকি হঠাৎ রক্তচাপ কমে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।

চতুর্থত কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে আমলকী বড় বাধা। যদিও আমলকীতে ফাইবার থাকে, তবু এর ভেতরে থাকা ট্যানিন নামের এক ধরনের উপাদান থাকায় অতিরিক্ত খেলে উল্টো কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করতে পারে। তাই পরিমিত খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।

পঞ্চমত অ্যাসিডিটি কিংবা অম্বল যাদের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য আমলকী বিপজ্জনক। যদিও আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন-সি ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকে। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু যাদের অম্বল কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত আমলকী খান, তাহলে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে।

জনপ্রিয়

যশোর বাঘারপাড়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হাজারো মানুষের দোয়া

এক আমলকীতে ১০ কমলার সমান ভিটামিন সি

প্রকাশের সময় : ১২:৩৪:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৫

আমাদের প্রতিটি খাবারই শরীরের ভারসাম্য অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। আর সেটাই হচ্ছে সঠিক ডায়েটের প্রধান লক্ষণ। তাই অন্য কারও কথায় নিজের ডায়েটের আমূল পরিবর্তন আনবেন না। যদিও বিশেষ কোনো নির্দিষ্ট খাবার প্রতিদিন খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হবে আপনার বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ প্রত্যেক মানুষ তার শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও সমস্যা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন খাদ্য গ্রহণ করে থাকে।

তাই আমলকীর মতো ফলও সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে। যদিও আমরা সবাই ছোটবেলা থেকেই জেনে আসছি একটি আমলকীতে ১০টি কমলার সমান ভিটামিন ‘সি’ থাকে। নিঃসন্দেহে আমলকী আমাদের দেশের খুব পরিচিত একটি ফল। এর ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট অসাধারণ রয়েছে। আর নিয়মিত আমলকী খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, সর্দি-কাশি এবং সংক্রমণের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বার্ধক্য ধীর করে, ত্বক উজ্জ্বল রাখে এবং চুল মজবুত করে।

সেই সঙ্গে হজমশক্তি ভালো করে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কমানো এবং হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও আমলকী ভীষণ কার্যকর। কিন্তু সবার শরীরের জন্যই কি এটি সমানভাবে উপকারী?

চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন কোন স্বাস্থ্যে সমস্যা থাকলে আমলকী সাবধানে খাওয়া উচিত

যেসব কারণে নিয়মিত আমলকী খেতে সাবধানে থাকবেন আপনি

প্রথমত ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আমলকী খাওয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ আমলকীতে প্রচুর ফাইবার আছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী। তবে যাদের রক্তে সুগার হঠাৎ করে কমে যায় কিংবা যাদের শরীরে শর্করার মাত্রা সাধারণত কম থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত আমলকী খাওয়া বিপজ্জনক। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

দ্বিতীয়ত হার্টের রোগীর জন্য আমলকী ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ আমলকী হার্টের জন্য ভালো হলেও, যাদের আগে থেকেই হৃদরোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি নিয়মিত খাওয়া উচিত নয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করতে পারে। যেমন ব্লাড থিনার ওষুধের সঙ্গে

তৃতীয়ত রক্তচাপের ক্ষেত্রে আমলকী খাওয়া থেকে সাবধান। আমলকী রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ঠিক আছে। কিন্তু যাদের রক্তচাপ আগে থেকেই কম বা প্রেশার কমে যাওয়ার প্রবণতা আছে, তাদের জন্য এটি বেশি খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। নিয়মিত বেশি পরিমাণ আমলকী খেলে মাথা ঘোরা, দুর্বলতা বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এমনকি হঠাৎ রক্তচাপ কমে অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।

চতুর্থত কোষ্ঠকাঠিন্যের ক্ষেত্রে আমলকী বড় বাধা। যদিও আমলকীতে ফাইবার থাকে, তবু এর ভেতরে থাকা ট্যানিন নামের এক ধরনের উপাদান থাকায় অতিরিক্ত খেলে উল্টো কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করতে পারে। তাই পরিমিত খাওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।

পঞ্চমত অ্যাসিডিটি কিংবা অম্বল যাদের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য আমলকী বিপজ্জনক। যদিও আমলকীতে প্রচুর ভিটামিন-সি ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড থাকে। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি-কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু যাদের অম্বল কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত আমলকী খান, তাহলে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে।