
প্যাট্রিক হারমন নামে এক মার্কিন ব্যক্তি ১৯১৫ সালে উল্টো দিকে হাঁটে হাঁটে সানফ্রান্সিসকো থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছেছিলেন। মজা করে শুরু করা এই কাজটি এখন বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে, এরও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।
উল্টো দিকে হাঁটার সময় শরীরের বিভিন্ন পেশি ভিন্নভাবে কাজ করে। বিশেষত, পায়ের পেছনের পেশি, যেমন হ্যামস্ট্রিং, কোয়াড্রিসেপস এবং কাফে (পায়ের পেছনের অংশ) শক্তিশালী হয়। এটি হাঁটুর ওপরও চাপ কমায় কারণ পায়ের ভর অন্যভাবে ভাগ হয়। বয়স বাড়ার সাথে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়লে উল্টো হাঁটার ব্যায়াম সাহায্য করতে পারে।
সাধারণভাবে সামনে হাঁটা স্বাভাবিক, কিন্তু উল্টো হাঁটার সময় মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেসের গবেষণায় দেখা গেছে, ‘প্রিফ্রন্টাল করটেক্স’ নামক মস্তিষ্কের অংশটি উল্টো হাঁটলে আরো সক্রিয় হয়, যা চিন্তা, পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দায়ী। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু কল্পনায় উল্টো হাঁটার কথা ভাবলেই মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। অর্থাৎ, রেট্রো ওয়াকিং শুধুমাত্র শরীরের জন্য নয়, মস্তিষ্কের জন্যও একটি ভালো ব্যায়াম।
গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৪ দিন, ১০ মিনিট করে উল্টো হাঁটলে কোমরের ব্যথা কমানো সম্ভব। কারণ, উল্টো হাঁটার সময় মেরুদণ্ডের ওপর চাপ কমে এবং কোমরের পেশিগুলো আরও কার্যকরভাবে কাজ করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উল্টো হাঁটার মাধ্যমে সাধারণ হাঁটার তুলনায় প্রায় ৪০% বেশি ক্যালরি বার্ন হতে পারে। কারণ, এতে শরীরের পেশিগুলো ভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়, যার ফলে শরীরকে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। যারা ব্যায়াম করার জন্য সময় পান না, তাদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
কীভাবে শুরু করবেন? যেহেতু উল্টো হাঁটার সময় আপনি পেছন দিকে হাঁটছেন, তাই এটি নিরাপদভাবে শুরু করা জরুরি। প্রথমে ঘরের ভেতরে, খালি জায়গায় ধীরে ধীরে চর্চা করুন। যদি ট্রেডমিলে হাঁটেন, তবে গতি কমিয়ে শুরু করুন। কাউকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে এই ব্যায়াম শুরু করা নিরাপদ। প্রতি দিন ১০-১৫ মিনিটই যথেষ্ট।
উল্টো হাঁটার সময় পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাই অসমতল জায়গা বা ভিড় এড়িয়ে চলুন। যারা হাঁটুর ব্যথা বা ভারসাম্যজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রবীণদের জন্য বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন, এবং এই ব্যায়াম করার সময় কাউকে সঙ্গে রাখলে ভালো।
লাইফস্টাইল ডেস্ক 






































