বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বকশীগঞ্জে রিং ছাই জালে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

আল মোজাহিদ বাবু, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি 
জামালপুরের বকশীগঞ্জ  নিষিদ্ধ রিং ছাই জালে  নদী ও চরাঞ্চল এলাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ অবাধে ধরা হচ্ছে। এসব জালে ধরা পড়ছে সব ধরনের ছোট মাছ। এতে দেশীয় মাছের উৎপাদন যেমন কমছে একইসঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করলেও কমছে না এই জালের ব্যবহার।
উপজেলা   জিঞ্জিরাম, দশানী  নদী বহমান। যে কারণে নদী সংলগ্ন খাল ও বিলে বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পায়। সেচ প্রকল্পের বাইরে ফসলি জমিতেও উঠে যায় বর্ষার পানি। এই সুযোগে এখন এক শ্রেণির জেলে এই রিং ছাই জাল ও নিষিদ্ধ কারেন্টজাল দিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও পোনা ধ্বংস করছে।
জানা গেছে, পুঁটি, শিং, পাবদা, গুলশা, কাজলি, বাতাশি, টেংরা, টাকি, বাইম, খলিশা, কৈ, বেলে, ভেদা, চান্দা, ছোট চিংড়ি, মলা ও ঢেলা মাছ এসব রিং ছাই জালে বেশি ধরা পড়ে। বর্ষা মৌসুমে পানি এলেই এ জালের ফাঁদ বেশি পাতা হয়।
বকশীগঞ্জ  উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে,   উপজেলার দশানী নদীর বিভিন্ন অংশে কমপক্ষে ৮ লাখ টাকা মূল্যের রিং ছাই ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগ ঠিক এই সময়টাতে নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ ছাড়াও উপজেলার সাধুরপাড়া ও মেরুরচর  গত ও চলতি মাসে একাধিক অভিযানে লাখ লাখ টাকার রিং ছাই জাল জব্দ এবং আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
 সাধুরপাড়া  ইউনিয়নের জেলে হানিফ মিয়া বলেন, ‘যারা প্রকৃত জেলে তারা কখনও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে না। কিছু লোক আছে তারা নিষিদ্ধ রিং ছাই জাল ব্যবহার করে। যে কারণে আমাদের এলাকার নদী ও খালে এখন কয়েক ধরনের পুঁটি, মেনি, টেংরা, খইলশা, মলা ও ঢেলাসহ অনেক ছোট মাছের দেখা মেলে না।’
সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা  বলেন, ‘সরকার যেসব জাল নিষিদ্ধ করেছে তা কোনো সময়ই ব্যবহার করা যাবে না। সব জেলেদেরই আইন মানতে হবে। আমরা চরাঞ্চল ও স্থলভাগের জেলেদের সঙ্গে দেখা হলেই এসব রিং ছাই জাল ব্যবহার করতে নিষেধ করি। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় শুধুমাত্র মৎস্য বিভাগই নয় দেশের প্রত্যেক নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’
 উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন  ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু  বলেন, ‘ছোট প্রজাতির মাছ রক্ষায় জেলেদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে । এই বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বেশিরভাগ চরাঞ্চলে এই জাল ব্যবহার হয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদেরকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম  বলেন, অবৈধ জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সেই সাথে অবৈধ চায়না দুয়ারি রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার না করতে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
নিষিদ্ধ জাল সব সময়ের জন্যই নিষিদ্ধ। সম্প্রতি সময়ে বহু রিং ছাই জাল এবং কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলায় কয়েকটি এলাকায় অভিযান করে নিষিদ্ধ রিং ছাই জাল ও কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে বিনিষ্ঠ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ রিং জালে বন্ধের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
জনপ্রিয়

খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ারে প্রধান উপদেষ্টা

বকশীগঞ্জে রিং ছাই জালে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

প্রকাশের সময় : ০৪:২৯:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আল মোজাহিদ বাবু, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি 
জামালপুরের বকশীগঞ্জ  নিষিদ্ধ রিং ছাই জালে  নদী ও চরাঞ্চল এলাকায় দেশীয় প্রজাতির মাছ অবাধে ধরা হচ্ছে। এসব জালে ধরা পড়ছে সব ধরনের ছোট মাছ। এতে দেশীয় মাছের উৎপাদন যেমন কমছে একইসঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। মৎস্য অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করলেও কমছে না এই জালের ব্যবহার।
উপজেলা   জিঞ্জিরাম, দশানী  নদী বহমান। যে কারণে নদী সংলগ্ন খাল ও বিলে বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পায়। সেচ প্রকল্পের বাইরে ফসলি জমিতেও উঠে যায় বর্ষার পানি। এই সুযোগে এখন এক শ্রেণির জেলে এই রিং ছাই জাল ও নিষিদ্ধ কারেন্টজাল দিয়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ ও পোনা ধ্বংস করছে।
জানা গেছে, পুঁটি, শিং, পাবদা, গুলশা, কাজলি, বাতাশি, টেংরা, টাকি, বাইম, খলিশা, কৈ, বেলে, ভেদা, চান্দা, ছোট চিংড়ি, মলা ও ঢেলা মাছ এসব রিং ছাই জালে বেশি ধরা পড়ে। বর্ষা মৌসুমে পানি এলেই এ জালের ফাঁদ বেশি পাতা হয়।
বকশীগঞ্জ  উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে,   উপজেলার দশানী নদীর বিভিন্ন অংশে কমপক্ষে ৮ লাখ টাকা মূল্যের রিং ছাই ও কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য বিভাগ ঠিক এই সময়টাতে নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এ ছাড়াও উপজেলার সাধুরপাড়া ও মেরুরচর  গত ও চলতি মাসে একাধিক অভিযানে লাখ লাখ টাকার রিং ছাই জাল জব্দ এবং আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়।
 সাধুরপাড়া  ইউনিয়নের জেলে হানিফ মিয়া বলেন, ‘যারা প্রকৃত জেলে তারা কখনও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে না। কিছু লোক আছে তারা নিষিদ্ধ রিং ছাই জাল ব্যবহার করে। যে কারণে আমাদের এলাকার নদী ও খালে এখন কয়েক ধরনের পুঁটি, মেনি, টেংরা, খইলশা, মলা ও ঢেলাসহ অনেক ছোট মাছের দেখা মেলে না।’
সাধুরপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গাজীউর রহমান মোল্লা  বলেন, ‘সরকার যেসব জাল নিষিদ্ধ করেছে তা কোনো সময়ই ব্যবহার করা যাবে না। সব জেলেদেরই আইন মানতে হবে। আমরা চরাঞ্চল ও স্থলভাগের জেলেদের সঙ্গে দেখা হলেই এসব রিং ছাই জাল ব্যবহার করতে নিষেধ করি। দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় শুধুমাত্র মৎস্য বিভাগই নয় দেশের প্রত্যেক নাগরিক দায়িত্ব পালন করতে পারেন।’
 উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন  ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম মঞ্জু  বলেন, ‘ছোট প্রজাতির মাছ রক্ষায় জেলেদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে । এই বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বেশিরভাগ চরাঞ্চলে এই জাল ব্যবহার হয়। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদেরকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এবিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসনে আরা বেগম  বলেন, অবৈধ জালের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সেই সাথে অবৈধ চায়না দুয়ারি রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার না করতে সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
নিষিদ্ধ জাল সব সময়ের জন্যই নিষিদ্ধ। সম্প্রতি সময়ে বহু রিং ছাই জাল এবং কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলায় কয়েকটি এলাকায় অভিযান করে নিষিদ্ধ রিং ছাই জাল ও কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে বিনিষ্ঠ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ রিং জালে বন্ধের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।