
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন (পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি) শুরু করেছেন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মতলব উত্তর উপজেলা শাখার ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মতলব উত্তর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ কামাল হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আলম।
এসময় বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র সরকার,সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক রোকেয়া বেগম, বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলার সাবেক সভাপতি এসএম নিজাম, মতলব উত্তর উপজেলা শাখার সাবেক সভাপতি মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ শহীদুল্লাহ খান, সংগঠনের বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন (১),সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজিত কুমার দাস,সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক সারোয়ার আহম্মেদ,সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ লতিফ,স্বাস্থ্য সহকারী মুরাদ হোসেন, প্রমূখ। এসময় স্বাস্থ্য পরিদর্ক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, উপজেলার স্বাস্থ্যসহকারীরা অংশ গ্রহণ করেন।
এসময় বক্তারা বলেন,নেতারা জানান, প্রাপ্য মর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলবে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে নিয়োগবিধি সংশোধন, ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ ও বেতন স্কেল ১১তম গ্রেড উন্নীতকরণ।
তারা বলেন,আমাদের ৬দফা দাবি সমুহ দ্রæত বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে কাজে কাজে ফেরানোর জন্য সরকারের পদক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায় দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন (পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি) এ কর্মসুচি অব্যাহত থাকবে। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করছি। দাবী পূরণ হলে আমরা কাজে ফিরে যাবো অঅর তা হলে তৃণমুল পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা আরো সুদৃঢ় হবে।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন মতলব উত্তর উপজেলা শাখার ব্যানারে এ কর্মসূচি হয়। স্বাস্থ্য সহকারীরা দীর্ঘদিন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
সারা দেশের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৬ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগ প্রতিরোধে কাজ করেন তারা।
এছাড়াও রোগ থেকে মুক্তির উপায়, নতুন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তারা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) বাস্তবায়ন, ১৫-৪৯ বছর বয়সি নারীদের টিটি/টিডি টিকা দেওয়া, গর্ভবতী মা ও শিশুদের সেবা দেওয়া, প্রসব-পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকেন।
বক্তারা আরও বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীরা অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। চার দশকের বেশি সময় তারা প্রথম সারির যোদ্ধা হিসাবে জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় রয়েছেন। তারা করোনাকালীন সময়ে টিকাদান কর্মসুচিকে করোনা যোদ্ধা, এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন,পালিওমুক্ত বাংলাদেশ গড়া,গুটিবসন্ত দূড়িকরন, যক্ষা ও হাম রোগে নিয়ন্ত্রন, শিশু মৃত্যু ও মাতৃ মৃত্যু হার কমানো অগ্রহনী ভুমিকা পালন করে আসছে। স্বাস্থ্য সহকারীরা অপ্রতুল সুযোগ-সুবিধা ও সীমিত জনবল নিয়েও দেশের প্রত্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার কারণে সরকার আন্তজার্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আজ পর্যন্ত তাদের পদে কোনো পরিবর্তন হয়নি। বেতন কাঠামোয় রয়েছে চরম বৈষম্য। তাই স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারা বহু বছর ধরে শুধু আশ্বাস শুনে যাচ্ছেন। এ কারণে এবার দাবি পূরণ না হলে টিকাদান কর্মসূচি চালু রাখা সম্ভব হবে না।
৬ দফা দাবীতে স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশন দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে, স্বাস্থ্য সহকারীদের কাঙিক্ষত দাবী পূরন না হওয়ায় কেন্দ্রীয় দাবী বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদ যে কমপ্লিট শাটডাউন ( কর্ম বিরতি) পালনের ঘোষণা দিয়েছেন, এই সময় ইপিআই, টাইফয়েড ক্যাম্পেইন সহ সকল প্রকার কাজ বন্ধ থাকবে।
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ 






















