শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসণে গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ৬ দফা দাবিতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

  • যশোর অফিস 
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৫
যশোর অফিস 
‘যশোরের দুঃখ ভবদহ’ ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসণে ইতিমধ্যে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সে সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ৬ দফা দাবিতে রবিবার ভবদহ দিবসে যশোর মশিয়াহাটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত।
সংগঠনের আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, যুগ্ম আহবায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশেরর আহ্বায়ক ডা. অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, সংগঠনের উপদেষ্টা তসলিম-উর-রহমান। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু, কপোতক্ষ নদ বঁাচাও আন্দোলনের নেতা অ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু, মুক্তেশ্বরী সংস্কার আন্দোলনের নেতা আলাউদ্দিন, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খান, রধুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত বালা, মাসুদ শেখ, আব্দুল মান্নান মোল্লা, বাপার আবু সাঈদ প্রমুখ।
উক্ত সমাবেশে ২০১৬ সালের ৫ সালের পুলিশি হামলায় আহতদেরকে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এছাড়া মঞ্চে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন তীসা চামেলি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শেখর বিশ্বাস ও শিবপদ বিশ্বাস। সমাবেশ শেষে বাউল গান পরিবেশিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, ভবদহ অঞ্চলের যশোরের মণিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, ও সদর (আংশিক) এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা (আংশিক) উপজেলায় প্রতিবছর জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ি—ঘর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, মন্দির, খেলার মাঠ, রাস্তা, ঘাট, ফসলী জমি পানিতে ডুবছে। নিত্য সঙ্গী এই স্থায়ী জলাবদ্ধতায় শিশু নারী বৃদ্ধ ডুবে মরছে। রোগ-বালাই এখনারকার মানুষের নিত্য সঙ্গী। মানুষ সৃষ্ট এই জলাবদ্ধতার গ্রাস থেকে বঁাচার জন্য হামলা, নিপীড়ন, হয়রানির শিকার হয়েও নিতান্তই বঁাচার তাগিদে ভুক্তভোগী এলাকার মানুষ লাগাতার সংগ্রাম করে আসছে। বর্তমান সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ভবদহ অঞ্চলের মানুষের নিম্নোক্ত প্রাণের দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এ সময় জলাবদ্ধতার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত এবং সর্বস্তরের জনগণ, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমাবেশকে সফল করে ন্যায়সঙ্গত দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মত প্রকাশে আহবান জানান ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি।
এছাড়া ভবদহ সমস্যা সমাধানে ৬টি দাবী রাখা হয়
দ্রুত আমডাঙ্গা খালের জমি অধিগ্রহণ ও সংস্কার কাজ শুরু ৮১ কিলোমিটার নদি খননের কাজ শুরু
বিলে বিলে টিআরএম চালু ২১ ভেন্টের সকল গেট খুলে দেয়া ঘের নীতিমালা২০১৯ বাস্তবায়ন ও
 ২০১৬ সালের পাঁচ অক্টোবর নওয়াপাড়ায় পুলিশি হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের
দাবি করতে হবে।
সমাবেশে আরো বলা হয় প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জনপদের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। অতিতের মত বর্তমানেও একটি বিশেষ চক্র টিআরএম বাস্তবায়নের সরকারি সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পর্যায়ক্রমে বিলে বিলে টিআরএম এবং উজানে নদী সংযোগ না হলে এই অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে স্থায়ীভাবে পানির তলে চলে যাবে। টিআরএম উপযোগী বিলগুলির জমির মালিকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ ও তঁাদের কাছে প্রত্যাশা, নিজেদের এবং জনপদের স্থায়ী জলবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য তঁারা বিলে বিলে টিআরএম কার্যকর করতে সহযোগিতা করবেন।
যে বিলে টিআরএম হবে সে বিল ভরাট ও উঁচু হবে। জমি হয়ে উঠবে চাষাবাদের উপযোগী। বিলের জমির মালিক, ঘেরমালিক, বর্গাচাষী, শ্রমজীবী, মৎস্যজীবী এবং বিলের উপর নির্ভরশীল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবাই ক্ষতিপূরণের আওতাভুক্ত হবেন।
ক্ষতিপূরণের টাকা ইউনিয়ন কাউন্সিল অথবা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ আমাদের সবাইকে নিতে হবে। টিআরএম চালু হওয়া বিলের মধ্যে একটি মেশিন রাখতে হবে যা দ্বারা দিনের শেষ পর্যন্ত যাতে পলি পেঁৗছাতে পারে এবং নির্মিত ভেড়ি কাজ শেষে অপসারণ করা হয় এই মর্মে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও আইডব্লিউএম যে সকল বিলে জরিপ পরিচালনা করেছেন সেখানে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে। আমাদের জানামতে ক্ষতিপূরণের এ সকল প্রস্তাব সরকার কতৃর্ক গৃহিত হবে।
জনপ্রিয়

রাণীশংকৈলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে মারধর, থানায় মামলা 

ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসণে গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ৬ দফা দাবিতে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রকাশের সময় : ০৯:৩৭:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫
যশোর অফিস 
‘যশোরের দুঃখ ভবদহ’ ভবদহের জলাবদ্ধতা নিরসণে ইতিমধ্যে নানান পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সে সকল পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও ৬ দফা দাবিতে রবিবার ভবদহ দিবসে যশোর মশিয়াহাটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত।
সংগঠনের আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ, যুগ্ম আহবায়ক গাজী আব্দুল হামিদ, সদস্য সচিব চৈতন্য কুমার পাল, ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশেরর আহ্বায়ক ডা. অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, সংগঠনের উপদেষ্টা তসলিম-উর-রহমান। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ভৈরব নদ সংস্কার আন্দোলনের নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু, কপোতক্ষ নদ বঁাচাও আন্দোলনের নেতা অ্যাড. আমিনুর রহমান হিরু, মুক্তেশ্বরী সংস্কার আন্দোলনের নেতা আলাউদ্দিন, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খান, রধুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজিত বালা, মাসুদ শেখ, আব্দুল মান্নান মোল্লা, বাপার আবু সাঈদ প্রমুখ।
উক্ত সমাবেশে ২০১৬ সালের ৫ সালের পুলিশি হামলায় আহতদেরকে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এছাড়া মঞ্চে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন তীসা চামেলি। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শেখর বিশ্বাস ও শিবপদ বিশ্বাস। সমাবেশ শেষে বাউল গান পরিবেশিত হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, ভবদহ অঞ্চলের যশোরের মণিরামপুর, অভয়নগর, কেশবপুর, ও সদর (আংশিক) এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা (আংশিক) উপজেলায় প্রতিবছর জলাবদ্ধতার কারণে বাড়ি—ঘর, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, শ্মশান, মসজিদ, মন্দির, খেলার মাঠ, রাস্তা, ঘাট, ফসলী জমি পানিতে ডুবছে। নিত্য সঙ্গী এই স্থায়ী জলাবদ্ধতায় শিশু নারী বৃদ্ধ ডুবে মরছে। রোগ-বালাই এখনারকার মানুষের নিত্য সঙ্গী। মানুষ সৃষ্ট এই জলাবদ্ধতার গ্রাস থেকে বঁাচার জন্য হামলা, নিপীড়ন, হয়রানির শিকার হয়েও নিতান্তই বঁাচার তাগিদে ভুক্তভোগী এলাকার মানুষ লাগাতার সংগ্রাম করে আসছে। বর্তমান সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ভবদহ অঞ্চলের মানুষের নিম্নোক্ত প্রাণের দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
এ সময় জলাবদ্ধতার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত এবং সর্বস্তরের জনগণ, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সমাবেশকে সফল করে ন্যায়সঙ্গত দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মত প্রকাশে আহবান জানান ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি।
এছাড়া ভবদহ সমস্যা সমাধানে ৬টি দাবী রাখা হয়
দ্রুত আমডাঙ্গা খালের জমি অধিগ্রহণ ও সংস্কার কাজ শুরু ৮১ কিলোমিটার নদি খননের কাজ শুরু
বিলে বিলে টিআরএম চালু ২১ ভেন্টের সকল গেট খুলে দেয়া ঘের নীতিমালা২০১৯ বাস্তবায়ন ও
 ২০১৬ সালের পাঁচ অক্টোবর নওয়াপাড়ায় পুলিশি হামলার সাথে জড়িতদের বিচারের
দাবি করতে হবে।
সমাবেশে আরো বলা হয় প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য জনপদের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। অতিতের মত বর্তমানেও একটি বিশেষ চক্র টিআরএম বাস্তবায়নের সরকারি সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পর্যায়ক্রমে বিলে বিলে টিআরএম এবং উজানে নদী সংযোগ না হলে এই অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে স্থায়ীভাবে পানির তলে চলে যাবে। টিআরএম উপযোগী বিলগুলির জমির মালিকদের প্রতি বিনীত অনুরোধ ও তঁাদের কাছে প্রত্যাশা, নিজেদের এবং জনপদের স্থায়ী জলবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য তঁারা বিলে বিলে টিআরএম কার্যকর করতে সহযোগিতা করবেন।
যে বিলে টিআরএম হবে সে বিল ভরাট ও উঁচু হবে। জমি হয়ে উঠবে চাষাবাদের উপযোগী। বিলের জমির মালিক, ঘেরমালিক, বর্গাচাষী, শ্রমজীবী, মৎস্যজীবী এবং বিলের উপর নির্ভরশীল প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সবাই ক্ষতিপূরণের আওতাভুক্ত হবেন।
ক্ষতিপূরণের টাকা ইউনিয়ন কাউন্সিল অথবা ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে প্রদানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ আমাদের সবাইকে নিতে হবে। টিআরএম চালু হওয়া বিলের মধ্যে একটি মেশিন রাখতে হবে যা দ্বারা দিনের শেষ পর্যন্ত যাতে পলি পেঁৗছাতে পারে এবং নির্মিত ভেড়ি কাজ শেষে অপসারণ করা হয় এই মর্মে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও আইডব্লিউএম যে সকল বিলে জরিপ পরিচালনা করেছেন সেখানে সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে সরকারকে জানানো হয়েছে। আমাদের জানামতে ক্ষতিপূরণের এ সকল প্রস্তাব সরকার কতৃর্ক গৃহিত হবে।