
এম. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
দীর্ঘদিন যাবত দলের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও নিজে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন দাবী করে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এবং সাবেক জাগদল ও বিএনপি নেতা কাজী এম. এন. আলম।
শনিবার (১১ অক্টোবর) ঠান্ডাছড়ি চা বাগানে নিজ বাংলোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ ঘোষণা দেন।
কাজী এম. এন. আলম বলেন, “স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যখন জাতীয় নেতৃত্বে আসেন, তখন থেকেই আমি তাঁর চিন্তাধারা ও কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হই। বৃহত্তর রাজানগরের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে আমি তাঁর প্রতিটি ভাষণ শুনে অভিনন্দন বার্তা পাঠাতাম। পরবর্তীতে তিনি যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তখন আমি আন্তরিকভাবে এতে যুক্ত হই।”
তিনি জানান, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যখন রাঙ্গুনিয়ায় প্রথম আসেন, আমরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছি। সেই অনুষ্ঠানে রাঙ্গুনিয়াবাসীর পক্ষ থেকে আমি মানপত্র পাঠ করি। এরপর তিনি আমাকে ডেকে প্রশংসা করেন এবং উপ-প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে দেখা করার আহ্বান জানান। সেখানে জিয়াউর রহমান নিজে বলেন, ‘আমরা চাই নতুন তরুণ ও উদীয়মান নেতৃত্ব নিয়ে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক কাঠামো গড়তে।’ সেই প্রেক্ষিতেই জাগদল গঠিত হয়।”
কাজী আলম আরও জানান, “তখন বৃহত্তর চট্টগ্রামের জাগদলের কনভেনিং কমিটি করা হয়। ফটিকছড়ির ডা. মোহাম্মদ নুরুচ্ছফা ও আমি প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রাউজানের ডা. নুরুল আলম চৌধুরী দ্বিতীয় যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে জাগদল বিএনপিতে রূপান্তরিত হলে আমরা দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হই।”
তিনি বলেন, “১৯৭৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি। তখন আমার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শহীদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। নির্বাচনে তিনি জয়ী হলেও আমি দলের কর্মী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাই।”
রাজনীতিতে দীর্ঘ অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে কাজী এম. এন. আলম বলেন, “আমি অনুপস্থিত ছিলাম না, পর্যবেক্ষক ছিলাম। দলের কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। এখন মনে করছি, দলের স্বার্থে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামার সময় এসেছে।”
আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দলের কাছে মনোনয়ন চাইব। তবে দল যদি মনোনয়ন না দেয়, আমি কখনো দলের বিপক্ষে গিয়ে নির্বাচন করব না। এই দল তো আমি নিজ হাতে গঠন করেছি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের একজন ভক্তা ও সহকর্মী হিসেবে দলের স্বার্থেই কাজ করে যাব।”
প্রাপ্ত তথ্যমতে, কাজী এম. এন. আলম জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) ও বিএনপির বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক, রাঙ্গুনিয়ার প্রথম আহ্বায়ক এবং বিএনপির বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রথম নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
এছাড়া তিনি ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মনোনীত রাঙ্গুনিয়া আসনের বিএনপি প্রার্থী, প্রথম নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এবং বৃহত্তর রাজানগরের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
এছাড়াও রাজানগর-লালানগর সীমান্তে অবস্থিত হযরত শাহসূফী কাজী সালেহ্ আহমদ ইবতিদায়ী মাদরাসাসহ বহু মসজিদ, মাদ্রাসা ও দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা, সংস্কার ও উন্নয়ন কাজে ভূমিকা রেখে আসছেন। তিনি বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা শাখা, চট্টগ্রাম-এর আজীবন সদস্য ও কার্যনির্বাহী পরিষদ (২০১০-১৪) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ইউনিট-এর আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য, ন্যাশনাল এন্টি টিউবারকিউলোসিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-নাটাব চট্টগ্রাম-এর আজীবন সদস্য ও ঢাকাস্থ রাঙ্গুনিয়া সমিতির আজীবন সদস্য পদ লাভ করে মানব কল্যাণ ও জনহিতকর কর্মে অবদান রেখে আসছেন। তিনি ২০০৯ সালে পবিত্র হজ্বব্রত পালন করেন বলেও জানান কাজী এম এন আলম।
এম. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো 



















