শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যা: ভিডিও ভাইরাল, তিনজন গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের যুবককে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ভিডিও দেখে অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির।

নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তার ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

৬৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে বারবার ইট দিয়ে আঘাত করছেন কয়েকজন। অন্তত ৫-৭ জনের ওই দল দফায় দফায় তাকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে আবু হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তাকে দফায় দফায় মারধর করা হয়। সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে রাস্তায় ফেলে যান অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরাসহ তাদের কয়েকজন সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করেন।

এ ব্যাপারে নিহত ব্যক্তির বোন রাবেয়া বলেন, দুপুরের দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কী কারণে মারছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চেয়েছে। কিন্তু কোন মেয়ে-কবে, তার কিছুই আমরা জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, আমি ছিলাম ডিউটিতে ছিলাম। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করছে। ফোন পেয়ে আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধরে খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়ে আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীকে (হানিফ) ভেতরে বসিয়ে রেখেছে। সেখানে ১০-১২ জন যুবক ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামের স্থানীয় একজনকে চিনেছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে চলে যায়। অনেক পরে আমরা তাকে হাসপাতালে পাই।

জনপ্রিয়

রাণীশংকৈলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে মারধর, থানায় মামলা 

ইট দিয়ে থেঁতলে যুবককে হত্যা: ভিডিও ভাইরাল, তিনজন গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ১২:১০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫

ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বাসা থেকে তুলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের খানপুরে আবু হানিফ (৩০) নামের যুবককে হত্যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২২ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ভিডিও দেখে অন্য আসামিদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির।

নিহত আবু হানিফ স্থানীয় একটি বাড়ির নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বাগেরহাটের শরণখোলার আবুল কালামের ছেলে। তার স্ত্রী ও তিন সন্তান রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগরের সায়েস্তারা গ্রামের ফরচান মিয়ার ছেলে বাহার (৩৬) ও তার ভাই সাইদুল ইসলাম (২৫), নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রোহল এলাকার শফিকুর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান জিতু (২৯)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নাছির বলেন, এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িত অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।

৬৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি খোলা জায়গায় হানিফকে মাটিতে ফেলে বারবার ইট দিয়ে আঘাত করছেন কয়েকজন। অন্তত ৫-৭ জনের ওই দল দফায় দফায় তাকে পিটিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে আবু হানিফকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শহরের খানপুর জোড়া ট্যাংকি মাঠে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ তুলে তাকে দফায় দফায় মারধর করা হয়। সন্ধ্যায় হানিফ সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে রাস্তায় ফেলে যান অপরাধীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জের খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরাসহ তাদের কয়েকজন সহযোগী আবু হানিফের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর খানপুর জোড়া ট্যাংকি এলাকায় দফায় দফায় মারধর করেন।

এ ব্যাপারে নিহত ব্যক্তির বোন রাবেয়া বলেন, দুপুরের দিকে হানিফ বাসায় শুয়ে ছিলেন। এলাকার কিছু ছেলে এসেই ভাইরে মারতে মারতে নিয়ে চলে যায়। আমাদের কোনো কথাই শোনেনি, কী কারণে মারছে তাও বলেনি। অনেক পরে বলছে সে (হানিফ) নাকি কোন বাচ্চারে ধর্ষণ করতে চেয়েছে। কিন্তু কোন মেয়ে-কবে, তার কিছুই আমরা জানি না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ভগ্নিপতি মো. ইব্রাহিম বলেন, আমি ছিলাম ডিউটিতে ছিলাম। দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, এলাকার কিছু যুবক ছেলে বাসায় ঝামেলা করছে। ফোন পেয়ে আমি বাড়িতে আসি। বাসায় আসার পর ওই ছেলেরা আমাকে ধরে খানপুর জোড়া টাংকির মাঠে নিয়ে আসে। তখন দেখি, আমার সম্বন্ধীকে (হানিফ) ভেতরে বসিয়ে রেখেছে। সেখানে ১০-১২ জন যুবক ছিল। তাদের মধ্যে পাশের বাড়ির অভি নামের স্থানীয় একজনকে চিনেছি। সন্ধ্যায় হানিফ ভাইরে অটোতে তুলে কোথায় যেন নিয়ে চলে যায়। অনেক পরে আমরা তাকে হাসপাতালে পাই।