মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ ফাঁদ ও নৌযান উদ্ধার

বনকর্মীর সাহসী অভিযানে বনদস্যুর সংস্পর্শে রানা দেব, দুবলারচরে গ্রেপ্তার ৩

শেখ নাজমুল, শরণখোলা (বাগেরহাট):
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব রবিবার নয়—সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে কচিখালী দুবলারচর আলোরকোল এলাকার ডিমেরচরে দায়িত্ব পালনকালে হরিণ শিকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হন।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাসপূর্ণিমা উৎসবকে কেন্দ্র করে তীর্থযাত্রী ছদ্মবেশে একটি সংঘবদ্ধ শিকারী দল বনে প্রবেশ করে হরিণ শিকারের পরিকল্পনা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসিএফ রানা দেব বনরক্ষীদের নিয়ে অভিযান চালান। অভিযানের সময় বনরক্ষীরা এক শিকারীকে আটক করলে তার সঙ্গীরা লাঠিসোটা নিয়ে হঠাৎ করে হামলা চালিয়ে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় এবং রানা দেবকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে বনের মধ্যে পালাতে চেষ্টা করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বনবিভাগের সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়— বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের হাসান (২৬), রামপালের সোনাতুনিয়া গ্রামের শহিদ মল্লিক (২৮) ও ঝালবাড়ি গ্রামের আল-আমিন আকুঞ্জি (২৭)। অভিযানে বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮টি হরিণ ধরার ফাঁদ ও শিকার কাজে ব্যবহৃত একটি নৌযানও উদ্ধার করা হয়েছে।
আহত এসিএফ রানা দেবকে তাৎক্ষণিকভাবে দুবলার অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়; পরে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য উন্নত চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, এবারকার রাসপূর্ণিমা উৎসবে কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য পাস জারি ছিল—তবু কিছু শিকারী ভুয়া পরিচয় ও হিন্দু নাম ব্যবহার করে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করে বনে ঢুকে শিকারে লিপ্ত হয়েছিল।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “হামলাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; নৌযানও উদ্ধার করা হয়েছে। দলের বাকিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। রাসপূর্ণিমা উৎসবকে কেন্দ্র করে বন রক্ষা ও শিকার রোধে বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।”
ঘটনাস্থলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উদ্ধারকৃত ফাঁদ ও গ্রেপ্তারকৃতদের আলামত ভ্রাম্যমান আদালত বা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থার জন্য বনবিভাগ ও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে; ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত ও মামলা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ে কৃষকের অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিকরন এবং নারী ও শিশুর সহিংসতারোধে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত

১৮ ফাঁদ ও নৌযান উদ্ধার

বনকর্মীর সাহসী অভিযানে বনদস্যুর সংস্পর্শে রানা দেব, দুবলারচরে গ্রেপ্তার ৩

প্রকাশের সময় : ০৯:০২:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫
শেখ নাজমুল, শরণখোলা (বাগেরহাট):
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব রবিবার নয়—সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে কচিখালী দুবলারচর আলোরকোল এলাকার ডিমেরচরে দায়িত্ব পালনকালে হরিণ শিকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হন।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাসপূর্ণিমা উৎসবকে কেন্দ্র করে তীর্থযাত্রী ছদ্মবেশে একটি সংঘবদ্ধ শিকারী দল বনে প্রবেশ করে হরিণ শিকারের পরিকল্পনা করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসিএফ রানা দেব বনরক্ষীদের নিয়ে অভিযান চালান। অভিযানের সময় বনরক্ষীরা এক শিকারীকে আটক করলে তার সঙ্গীরা লাঠিসোটা নিয়ে হঠাৎ করে হামলা চালিয়ে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নেয় এবং রানা দেবকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করে বনের মধ্যে পালাতে চেষ্টা করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বনবিভাগের সদস্যরা দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। গ্রেপ্তারকৃতদের পরিচয়— বাগেরহাট সদর উপজেলার সুগন্ধি গ্রামের হাসান (২৬), রামপালের সোনাতুনিয়া গ্রামের শহিদ মল্লিক (২৮) ও ঝালবাড়ি গ্রামের আল-আমিন আকুঞ্জি (২৭)। অভিযানে বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৮টি হরিণ ধরার ফাঁদ ও শিকার কাজে ব্যবহৃত একটি নৌযানও উদ্ধার করা হয়েছে।
আহত এসিএফ রানা দেবকে তাৎক্ষণিকভাবে দুবলার অস্থায়ী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়; পরে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য উন্নত চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, এবারকার রাসপূর্ণিমা উৎসবে কেবল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য পাস জারি ছিল—তবু কিছু শিকারী ভুয়া পরিচয় ও হিন্দু নাম ব্যবহার করে অনুমতিপত্র সংগ্রহ করে বনে ঢুকে শিকারে লিপ্ত হয়েছিল।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “হামলাকারী তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে; নৌযানও উদ্ধার করা হয়েছে। দলের বাকিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। রাসপূর্ণিমা উৎসবকে কেন্দ্র করে বন রক্ষা ও শিকার রোধে বন বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।”
ঘটনাস্থলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উদ্ধারকৃত ফাঁদ ও গ্রেপ্তারকৃতদের আলামত ভ্রাম্যমান আদালত বা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থার জন্য বনবিভাগ ও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে; ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তদন্ত ও মামলা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।