বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ইসরায়েল

কারাগারে বন্দি নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গ্রেপ্তার

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর রাষ্ট্রপক্ষের সাবেক আইনজীবী মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইরুশালমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের হাতে এক ফিলিস্তিনি বন্দির নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস করার কারণে দেশটির পুলিশ বাহিনি তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও সাবেক প্রধান সামরিক প্রসিকিউটর কর্নেল মাতান সোলোমেশকেও একই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে সাবেক মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইরুশালমিকে আটক করা হয়েছে। ওই ভিডিও ফাঁস, পদত্যাগ ও নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে ঘিরে দেশজুড়ে এক রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ভিডিও ফাঁসের এই ঘটনা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুতর জনসংযোগ আক্রমণ হতে পারে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মারা গেছেন। অনেক মৃতদেহে নির্যাতনের চিহ্ন, অঙ্গহানি, পুড়ে যাওয়া দাগ, এমনকি হাতকড়া ও চোখ বাঁধা অবস্থাও দেখা গেছে।

ইরুশালমি রোববার (২ নভেম্বর) পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন। এসময় তার আত্মহত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে তিনি স্বীকার করেছেন, গত বছর তার অফিস থেকেই ওই নির্যাতনের ভিডিও মিডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। পরে পাঁচ রিজার্ভ সৈন্যের বিরুদ্ধে বন্দিদের নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, গত রাতের ঘটনার প্রেক্ষিতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে হেফাজতে থাকা বন্দির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে, তেল আবিব আদালত বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, আস্থাভঙ্গ, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা ও গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। তখন ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম (চ্যানেল ১২) সদে তেইমান সামরিক ঘাঁটির একটি ভিডিও সম্প্রচার করে। গাজা যুদ্ধ চলাকালে ওই ঘাঁটিতে আটক ফিলিস্তিনিদের রাখা হতো।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, সৈন্যরা ঢালের আড়ালে কিছু অবৈধ কাজ করছে যা সরাসরি দৃশ্যমান না হলেও নির্যাতনের ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল। ভিডিও প্রকাশের পর দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা এবং আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র : আল-জাজিরা

জনপ্রিয়

দেশের উদ্দেশ্যে বাসভবন ছাড়লেন তারেক রহমান

ইসরায়েল

কারাগারে বন্দি নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গ্রেপ্তার

প্রকাশের সময় : ১০:২০:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর রাষ্ট্রপক্ষের সাবেক আইনজীবী মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইরুশালমিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের হাতে এক ফিলিস্তিনি বন্দির নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস করার কারণে দেশটির পুলিশ বাহিনি তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়াও সাবেক প্রধান সামরিক প্রসিকিউটর কর্নেল মাতান সোলোমেশকেও একই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী জানিয়েছেন, সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে সাবেক মেজর জেনারেল ইফাত তোমের-ইরুশালমিকে আটক করা হয়েছে। ওই ভিডিও ফাঁস, পদত্যাগ ও নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে ঘিরে দেশজুড়ে এক রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ভিডিও ফাঁসের এই ঘটনা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুতর জনসংযোগ আক্রমণ হতে পারে।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে কমপক্ষে ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দি মারা গেছেন। অনেক মৃতদেহে নির্যাতনের চিহ্ন, অঙ্গহানি, পুড়ে যাওয়া দাগ, এমনকি হাতকড়া ও চোখ বাঁধা অবস্থাও দেখা গেছে।

ইরুশালমি রোববার (২ নভেম্বর) পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর কয়েক ঘণ্টা নিখোঁজ ছিলেন। এসময় তার আত্মহত্যার গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত পদত্যাগপত্রে তিনি স্বীকার করেছেন, গত বছর তার অফিস থেকেই ওই নির্যাতনের ভিডিও মিডিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। পরে পাঁচ রিজার্ভ সৈন্যের বিরুদ্ধে বন্দিদের নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছিল।

জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এক টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, গত রাতের ঘটনার প্রেক্ষিতে কারাগার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে হেফাজতে থাকা বন্দির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।

ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে, তেল আবিব আদালত বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত তাঁর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, আস্থাভঙ্গ, সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার, বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা ও গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে। তখন ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম (চ্যানেল ১২) সদে তেইমান সামরিক ঘাঁটির একটি ভিডিও সম্প্রচার করে। গাজা যুদ্ধ চলাকালে ওই ঘাঁটিতে আটক ফিলিস্তিনিদের রাখা হতো।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, সৈন্যরা ঢালের আড়ালে কিছু অবৈধ কাজ করছে যা সরাসরি দৃশ্যমান না হলেও নির্যাতনের ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল। ভিডিও প্রকাশের পর দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা এবং আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র : আল-জাজিরা