
ডাক্তার স্ত্রী কৃত্তিকা রেড্ডিকে হত্যার অভিযোগে বেঙ্গালুরুর একজন সার্জন মহেন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যা করার পর তার ‘প্রেমিকাকে’ পাঠানো একটি বার্তা খুঁজে পায় পুলিশ, যেখানে লেখা ছিল, ‘তোমার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তার ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণে অপরাধের পরপরই ‘প্রেমিকাকে’ পাঠানো একটি ভয়াবহ বার্তা পাওয়া গেছে। একটি ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো বার্তাটিতে লেখা ছিল, ‘তোমার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি।
বলা হয়েছে, ৩২ বছর বয়সী জেনারেল সার্জন মহেন্দ্র, যার কাছে বার্তাটি পাঠিয়েছেন সেই নারীর সাথে সম্পর্কে ছিলেন। পুলিশ তখন থেকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে, যদিও তার পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পুলিশ জানায়, হত্যার ছয় মাস পর গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত সার্জন তার চিকিৎসা দক্ষতা এবং তার স্ত্রীর স্বাস্থ্যগত দুর্বলতা ব্যবহার করে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে অপরাধের পরিকল্পনা করেছিলেন।
দু’জনেই ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কাজ করতেন এবং এই দম্পতি ২৬ মে, ২০২৪ তারিখে বিয়ে করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ের পর থেকে তাদের সম্পর্ক দ্রুত খারাপ হতে থাকে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, মহেন্দ্র বিয়ের আগে জানতেন না যে, তার স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস্ট্রিক এবং বিপাকীয় ব্যাধিতে ভুগছেন।
‘তিনি তার চিকিৎসাগত দুর্বলতাগুলো জানতেন এবং সেগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য তার পেশাদার জ্ঞান ব্যবহার করেছিলেন।’ বলে জানানো হয়। মহেন্দ্রর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার স্ত্রীকে অ্যানেস্থেসিয়ার মারাত্মক ডোজ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়।
জানা গেছে, ক্লান্তি ও অসুস্থতার কারণে কৃত্তিকা বেঙ্গালুরুর তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন, তখন তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এই সময় মহেন্দ্র চিকিৎসা সেবা দেয়ার অজুহাতে তার সাথে দেখা করতে যান।
এরপর তিনি দুই দিন ধরে তাকে অজ্ঞানকারী এজেন্টযুক্ত ইন্ট্রাভেনাস (আইভি) ইনজেকশন দেন। ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে কৃত্তিকা অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন ডাক্তারা।
কৃত্তিকার পরিবার প্রথমে মেনে নিয়েছিল যে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তবে, তার বোন ডাক্তার নিকিতা রেড্ডি মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার জন্য জোর দিয়েছিলেন, যার ফলে পুলিশ হাসপাতালের স্মারকের ভিত্তিতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর প্রতিবেদন দাখিল করে।
ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি রিপোর্টে, ভুক্তভোগীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রোপোফল, একটি শক্তিশালী চেতনানাশক ওষুধের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে, যা একটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া পুলিশ একটি ক্যানুলা সেট, একটি ইনজেকশন টিউব এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উদ্ধার করে।
প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, কৃত্তিকার বাবা অভিযোগ দায়ের করেন যে তার জামাই তার মেয়েকে হত্যা করেছে।
১৫ অক্টোবর মহেন্দ্রকে গ্রেফতার করা হয়, পুলিশের সন্দেহ, তিনি তার চিকিৎসা দক্ষতা ব্যবহার করে তার স্ত্রীর মৃত্যুকে স্বাভাবিক দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 







































