
কুবি প্রতিনিধি: শাহাবুদ্দীন শিহাব
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে প্রহসনের প্রতিবাদে ও ১৫ ই ডিসেম্বরের মধ্যে পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ থেকে ২০ তম গ্রেডের কর্মচারীরা।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় কর্মচারীরা অভিযোগ তুলেন– প্রশাসন নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে প্রহসন করছে। এরই প্রেক্ষিতে, আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা৷
মানববন্ধনে গণিত বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর এ. কে. এম. কামরুল হাসান বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অপানি বৈষম্যবিহীন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের পেটে যদি ভাত না থাকে তাহলে দুর্নীতি না এর চেয়ে ভয়ংকর কিছু করতে বাধ্য হব। আমাদের যদি দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চান তাহলে নবম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়ন করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনি ডিসেম্বরের মধ্যে কার্য উপযোগী নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের ডেট লাইন দিয়েছেন, দেশের মানুষ আপনাকে সাদরে অন্তর থেকে দোয়া করেছে। কিন্তু, হঠাৎ নভেম্বরে এসে অর্থ উপদেষ্টা বলছেন, এই পে-স্কেল নাকি দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে যদি তা সম্ভবই না হয় কেন পে কমিশন গঠন করা হয়েছিল? তাহলে কি বাংলাদেশের শত শত কোটি টাকা আত্মসাতের নামে বা লুটপাটের নামে আর একটি কমিশন গঠন করেছে? আপনারা কর্মচারীদের যদি এভাবে দাবিয়ে রাখেন তাহলে দেশ অচল হয়ে যাবে। সবসময় দেশ দুর্নীতিতে প্রথম হবে। দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করা জন্য দেশের কর্মচারীদের একটি মান সম্মত পে-স্কেল দিতে হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে ।’
হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘৫ বছর পর পর পে-স্কেল দেওয়ার কথা থাকলেও আমাদের ১০ বছরেও পে-স্কেল দেয়নি। অষ্টম পে-স্কেলে যে বৈষম্য করা হয়েছে, এটা আর কোথাও করা হয়নি। বিগত সরকার সর্বজনীন পেনশন ঘোষণা করে ছিলেন। কিন্তু, আন্দোলনের জন্য সেটা সফল হয়নি। তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমান সরকারের কাছে আমরা আশা করেছিলাম, এখনো আশায় আছি, তিনি বৈষম্য নিরসনে সক্ষম হবেন।
আমরা আশা করি, এই সরকারের আমলেই আমাদের পে-স্কেল বাস্তবায়ন হবে।’
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সহ-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘সর্বশেষ ২০১৫ সালে একটি পে-স্কেল প্রদান করা হয়েছিলে। সে পে-স্কেলে আমরা বৈষম্যের শিকার হয়েছি। ২০১৫ সালের বৈষম্যের যে পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়েছিল তখন থেকে কর্মচারীরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলো। কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা পে কমিশন গঠন করেন এবং বাংলাদেশের পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। তখন থেকেই আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বর এর মধ্যেই আমরা একটি প্রজ্ঞাপন চাই। কিন্তু, এই সরকার আমাদের সাথে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন নানা রকম অজুহাতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নবম পে-স্কেল আমাদের প্রাণের দাবি। কমিশন গঠন করেছেন আপনারা, নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন আপনারা, নতুন পে-স্কেল আপনারাই বাস্তবায়ন করবেন।’
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে নতুন পে কমিশন গঠন করা হয় এবং এই কমিশনকে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। যার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। তবে, অর্থ উপদেষ্টা জানান এখন হচ্ছে না নতুন পে স্কেল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে আগামী নির্বাচিত সরকার।
কুবি প্রতিনিধি: শাহাবুদ্দীন শিহাব 



















