মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভারত-পাকিস্তানকে ৩৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলাম

ছবি: সংগৃহীত

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ থামাতে দুই দেশের সরকারকে ৩৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস-সৌদি ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “তারা (ভারত ও পাকিস্তান) উভয়েই পারমাণবিক যুদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। এটা জানার পর আমি তাদের বললাম, ‘ঠিক আছে, আপনারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন; তবে সেক্ষেত্রে আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আমি ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। আপনারা পরস্পরকে লক্ষ্য করে পরমাণু বোমা ছুড়বেন, মানুষ মারবেন আর আপনাদের পরমাণু অস্ত্রের ধুলোবালি লস অ্যাঞ্জেলেসে ভেসে আসবে— এটা কখনও উচিত নয়।

আমি যখন দুই দেশের নেতাদের ৩৫০ শতাংশ শুল্কের ভয় দেখালাম, তারা আমাকে বলল, ‘আমরা এটা পছন্দ করছি না।’ জবাবে আমি বলেছি, ‘আপনারা পছন্দ করুন আর না করুন— আমার কিছু যায় আসে না।

ট্রাম্প জানান, তিনি এই হুমকি প্রদানের কিছু সময় পর প্রথম তাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং জানান যে পাকিস্তান সংঘাত থামাতে রাজি আছে। ট্রাম্প বলেন, “সত্যিকার অর্থে তিন আমাকে বলেছেন, ‘আমি লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। এর কিছুক্ষণ পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে টেলিফোন করে বলেন, ভারতও সংঘাত থামানোর জন্য প্রস্তুত।”

২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগাম উপজেলার বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক ছিলেন এবং তারা সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা।

সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে গত ৭ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারত। মাত্র কয়েক ঘণ্টার এই অভিযানে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরসহ  একাধিক এলাকায় সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারতের বিমান বাহিনী। এতে পাকিস্তানের ১৩ সেনাসদস্যসহ নিহত হন মোট ৫১ জন এবং আহত হন ৭৮ জন।

‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের দু’দিনের মধ্যে ‘বুনিয়ান উন মারসুস’ নামে পাল্টা সেনা অভিযান পরিচালনা করে পাকিস্তান। গত ১০ মে ভারতের সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুসে ভারতে ৫ সেনা সদস্য ও ১৬ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

এই অবস্থায় গত ১০ মে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ। টেলিফোনে হওয়া সেই সেই বৈঠক শেষে ১২ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন তারা। পরে আরও দু’দফা দু’দিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এখনও যুদ্ধবিরতিতে আছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ।

প্রসঙ্গত, এর আগেও বেশ কয়েকবার ট্রাম্প দাবি করেছেন যে ভারত ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধ থামিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের সরকার তার দাবির সত্যতা স্বীকার করেছে, তবে ভারত এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সূত্র: জিও টিভি

জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জ সিজেডএমের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্রের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কৈজুরি পাথালিয়াপাড়া এলাকায় সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) এর জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্র নারী ও পুরুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৈজুরি বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও কৈজুরি মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মো. জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিজেডএমের জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র, শাহজাদপুর উপজেলা শাখার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. ইসমাইল হক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন একাউন্টস অ্যান্ড অ্যাডমিন অফিসার হাফিজুর রহমান, ফিল্ড অফিসার মো. শহিদুল ইসলামসহ জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। শীতবস্ত্র পেয়ে উপকারভোগী নারী ও পুরুষরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শীত মৌসুমে এ সহায়তাকে সময়োপযোগী ও মানবিক উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ভারত-পাকিস্তানকে ৩৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলাম

প্রকাশের সময় : ১১:৩৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক যুদ্ধ থামাতে দুই দেশের সরকারকে ৩৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইউএস-সৌদি ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “তারা (ভারত ও পাকিস্তান) উভয়েই পারমাণবিক যুদ্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। এটা জানার পর আমি তাদের বললাম, ‘ঠিক আছে, আপনারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন; তবে সেক্ষেত্রে আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আমি ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব। আপনারা পরস্পরকে লক্ষ্য করে পরমাণু বোমা ছুড়বেন, মানুষ মারবেন আর আপনাদের পরমাণু অস্ত্রের ধুলোবালি লস অ্যাঞ্জেলেসে ভেসে আসবে— এটা কখনও উচিত নয়।

আমি যখন দুই দেশের নেতাদের ৩৫০ শতাংশ শুল্কের ভয় দেখালাম, তারা আমাকে বলল, ‘আমরা এটা পছন্দ করছি না।’ জবাবে আমি বলেছি, ‘আপনারা পছন্দ করুন আর না করুন— আমার কিছু যায় আসে না।

ট্রাম্প জানান, তিনি এই হুমকি প্রদানের কিছু সময় পর প্রথম তাকে টেলিফোন করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং জানান যে পাকিস্তান সংঘাত থামাতে রাজি আছে। ট্রাম্প বলেন, “সত্যিকার অর্থে তিন আমাকে বলেছেন, ‘আমি লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচিয়েছি। এর কিছুক্ষণ পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে টেলিফোন করে বলেন, ভারতও সংঘাত থামানোর জন্য প্রস্তুত।”

২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগাম উপজেলার বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালের নাগরিক ছিলেন এবং তারা সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট বা টিআরএফ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা।

সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার জবাব দিতে গত ৭ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সংক্ষিপ্ত সেনা অভিযান পরিচালনা করে ভারত। মাত্র কয়েক ঘণ্টার এই অভিযানে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরসহ  একাধিক এলাকায় সন্ত্রাসী স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারতের বিমান বাহিনী। এতে পাকিস্তানের ১৩ সেনাসদস্যসহ নিহত হন মোট ৫১ জন এবং আহত হন ৭৮ জন।

‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানের দু’দিনের মধ্যে ‘বুনিয়ান উন মারসুস’ নামে পাল্টা সেনা অভিযান পরিচালনা করে পাকিস্তান। গত ১০ মে ভারতের সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুসে ভারতে ৫ সেনা সদস্য ও ১৬ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

এই অবস্থায় গত ১০ মে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন ভারতের ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লাহ। টেলিফোনে হওয়া সেই সেই বৈঠক শেষে ১২ মে পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন তারা। পরে আরও দু’দফা দু’দিন করে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এখনও যুদ্ধবিরতিতে আছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশ।

প্রসঙ্গত, এর আগেও বেশ কয়েকবার ট্রাম্প দাবি করেছেন যে ভারত ও পাকিস্তানের সম্ভাব্য পরমাণু যুদ্ধ থামিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের সরকার তার দাবির সত্যতা স্বীকার করেছে, তবে ভারত এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সূত্র: জিও টিভি