বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোংলায় সশ্রস্ত্র বাহিনী দিবসে উন্মুক্ত ছিল বানৌজা আবু বকর

মারুফ বাবু, মোংলা প্রতিনিধি 
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মোংলায় নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা আবু বকর দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর ) মোংলা দিগরাজ নেভাল বার্থে বানৌজা আবু বকর দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য জাহাজটিকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। দর্শনার্থীরা জাহাজটিতে প্রবেশ করে যান্ত্রিক কাঠামো পরিদর্শন করেন। জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের যান্ত্রিক কাঠামো, বিমান বিধ্বংসী কামান ও জাহাজের বিভিন্ন অংশের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন। এ সময় বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজটি ঘুরে দেখেন।
জাহাজটি ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, জাহাজটি ঘুরে দেখে খুবই ভাল লেগেছে। এটি সম্পর্কে এর আগে কোনো ধারণাই ছিল না। যুদ্ধ জাহাজটি দেখে আমরা অনেক কিছু জেনেছি। বছরের কয়েকবার এভাবে প্রদর্শনী করলে আমাদের সন্তানরাও অনেক কিছু জানতে পারবে এবং সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদান করতে উদ্ধুদ্ধ হবে।
বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাহাজটি দেখার জন্য আসেন। তারা বলেন, খুবই চমৎকার একটি জাহাজ দেখার সুযোগ হয়েছে। এই দিবসটি সম্পর্কেও আমার আগে জানা ছিল না।
এর আগে, খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও শহিদ বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর মাজারে ‘গার্ড অব অনার’ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পাশাপাশি খুলনায় বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাহাজের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন মীর বাইজিদ হোসেন বলেন, দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কম-বেশি অনেকেরই জানা আছে। তবে ২১ নভেম্বর যে সশস্ত্র দিবস পালিত হয়, এটির গুরুত্ব এবং তাৎপর্য কতটুকু অনেকেই জানেন। অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যের সমতুল্য হচ্ছে এই দিবস।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ জাহাজ আজকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে-বাংলাদেশের জনগণ নৌবাহিনীর জাহাজ সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা জাহাজে কিভাবে অভিযান পরিচালনা করি এবং কি ধরণের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি এসব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
উল্লেখ, নৌ-বাহিনী থেকে প্রেস ব্রিফিংতে জানানো হয়, যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ অঞ্চলসমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহিদগণের আত্মার মাগফেরাত, দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া নৌবাহিনীর সকল জাহাজ ও ঘাঁটিসমূহে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন এবং নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজ সমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকার সদর ঘাঁটে বিএনডিবি গাংচিল, চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে বানৌজা সমুদ্র অভিযান, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ টার্মিলানে বানৌজা বিশখালী, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা পদ্মা এবং চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা অতন্দ্র দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ঘুরে দেখেন।
এ সময় বিভিন্ন পদবীর সামরিক কর্মকর্তাগণ ছাড়াও খুলনা বিভাগের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যগণ, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন।
জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান

মোংলায় সশ্রস্ত্র বাহিনী দিবসে উন্মুক্ত ছিল বানৌজা আবু বকর

প্রকাশের সময় : ০৮:১১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
মারুফ বাবু, মোংলা প্রতিনিধি 
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মোংলায় নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ বানৌজা আবু বকর দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর ) মোংলা দিগরাজ নেভাল বার্থে বানৌজা আবু বকর দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য জাহাজটিকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। দর্শনার্থীরা জাহাজটিতে প্রবেশ করে যান্ত্রিক কাঠামো পরিদর্শন করেন। জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের যান্ত্রিক কাঠামো, বিমান বিধ্বংসী কামান ও জাহাজের বিভিন্ন অংশের কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দেন। এ সময় বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজটি ঘুরে দেখেন।
জাহাজটি ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, জাহাজটি ঘুরে দেখে খুবই ভাল লেগেছে। এটি সম্পর্কে এর আগে কোনো ধারণাই ছিল না। যুদ্ধ জাহাজটি দেখে আমরা অনেক কিছু জেনেছি। বছরের কয়েকবার এভাবে প্রদর্শনী করলে আমাদের সন্তানরাও অনেক কিছু জানতে পারবে এবং সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদান করতে উদ্ধুদ্ধ হবে।
বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাহাজটি দেখার জন্য আসেন। তারা বলেন, খুবই চমৎকার একটি জাহাজ দেখার সুযোগ হয়েছে। এই দিবসটি সম্পর্কেও আমার আগে জানা ছিল না।
এর আগে, খুলনা অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ও শহিদ বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর মাজারে ‘গার্ড অব অনার’ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পাশাপাশি খুলনায় বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র বাহিনীর কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারবর্গের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাহাজের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন মীর বাইজিদ হোসেন বলেন, দেশের সর্বস্তরের নাগরিককে মহান সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনী মুক্তিকামী জনতার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তাদের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কম-বেশি অনেকেরই জানা আছে। তবে ২১ নভেম্বর যে সশস্ত্র দিবস পালিত হয়, এটির গুরুত্ব এবং তাৎপর্য কতটুকু অনেকেই জানেন। অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যের সমতুল্য হচ্ছে এই দিবস।
তিনি আরো বলেন, যুদ্ধ জাহাজ আজকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে-বাংলাদেশের জনগণ নৌবাহিনীর জাহাজ সম্পর্কে জানতে পারে। আমরা জাহাজে কিভাবে অভিযান পরিচালনা করি এবং কি ধরণের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করি এসব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।
উল্লেখ, নৌ-বাহিনী থেকে প্রেস ব্রিফিংতে জানানো হয়, যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা নৌ অঞ্চলসমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহিদগণের আত্মার মাগফেরাত, দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া নৌবাহিনীর সকল জাহাজ ও ঘাঁটিসমূহে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামান্যচিত্র প্রদর্শন এবং নৌবাহিনী স্কুল ও কলেজ সমূহে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকার সদর ঘাঁটে বিএনডিবি গাংচিল, চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে বানৌজা সমুদ্র অভিযান, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ টার্মিলানে বানৌজা বিশখালী, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা পদ্মা এবং চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা অতন্দ্র দুপুর ২টা হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ নৌবাহিনীর জাহাজসমূহ ঘুরে দেখেন।
এ সময় বিভিন্ন পদবীর সামরিক কর্মকর্তাগণ ছাড়াও খুলনা বিভাগের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যগণ, বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীবৃন্দ এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন।