সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের ইনজুরিতে নেইমার, বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে হলে পুরোপুরি ফিট হতে হবে–নেইমারকে এমন শর্তই বেঁধে দিয়েছেন ব্রাজিলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সেই শর্ত পূরণ করতে ৩৩ বছর বয়সী তারকার হাতে আছে মাত্র ছয়মাস। সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, নেইমার আশা জাগাতে পারছেন কই! পাশের মহাদেশে বসতে যাওয়া বিশ্বকাপে নেইমারের খেলার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরার পরও পুরনো শত্রু ইনজুরির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে নেইমারকে।

গতকাল (২৫ নভেম্বর) ইন্টারন্যাসিওনালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে অবনমন অঞ্চলে নেমে গেছে সান্তোস। এই ম্যাচের আগে নতুন করে ফের ইনজুরিতে পড়েছেন নেইমার। দলের তারকা খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলতে নেমে জয়ের দেখা পায়নি পেইজিরা। ৩৫ ম্যাচ শেষে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে নেমে গেছে সান্তোস। অবনমন এড়াতে তাদের হাতে আছে আর মাত্র ৩টি ম্যাচ।

তবে খুব সম্ভবত এই তিন ম্যাচেও নেইমারকে ছাড়াই খেলতে হবে সান্তোসকে। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, মেনিস্কাস ইনজুরির কারণে চলতি বছর আর মাঠে নামা নাও হতে পারে ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের।  সে ক্ষেত্রে তার বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন যে বড়সড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

গত জানুয়ারিতে আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে সান্তোসে ফেরেন নেইমার। এরপর থেকে ২৫ ম্যাচে ৭ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করেছেন। তবে এ সময়েও ইনজুরির সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাকে। মাত্রই ইনজুরি কাটিয়ে ছন্দে ফেরার লড়াইয়ে ছিলেন এই ৩৩ বছর বয়সী।

ইন্টারনাসিওনালের সঙ্গে ১-১ ড্রয়ের পর কোচ হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা খুবই সরাসরি কথা বলেছেন। আর্জেন্টাইন কোচ ব্যাখ্যা করেছেন, মিরাসোলের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই নেইমারের হাঁটুতে অস্বস্তি ছিল, আর সপ্তাহজুড়েই সেই ব্যথা আরও বেড়েছে।

ভয়ভোদা বলেছেন, ‘পরিকল্পনা হলো তাকে স্পোর্টের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত রাখা। কিন্তু তার আগে আমাকে ওর সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমি তার সিদ্ধান্ত ও তার শরীরকে সম্মান করি। সে সবসময় খেলতে চায়, কিন্তু এবার সে অনুভব করেছে সে ম্যাচের চাহিদা মেটাতে পারবে না।

এদিকে, নেইমারের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাচ্ছে সান্তোসের সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদকালের জন্য। চলতি বছর শেষেই পেইজিদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এই ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের। নতুন করে চুক্তি নবায়নের জন্য এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। ক্লাব সভাপতি মার্সেলো তেইশেইরা বলেছেন, চুক্তি বাড়ানোর ইচ্ছা আছে, কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে খেলোয়াড়ের অনুভূতি এবং সবচেয়ে বড় কথা—তার শারীরিক অবস্থার ওপর। তিনি বলেন, ‘তার (নেইমার) পুরো প্রকল্পই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে। যদি সমঝোতা হয়, সে নবায়ন করবে।

জাতীয় দল থেকে কার্লো আনচেলত্তি সতর্ক কিন্তু আশাবাদী অবস্থান বজায় রেখেছেন, ‘সে লম্বা তালিকায় আছে। তার সামনে ছয় মাস সময় আছে নিজেকে প্রমাণ করার। তার দরকার ধারাবাহিকতা, খেলার মিনিট এবং শারীরিক ফিটনেস। আধুনিক ফুটবলে শুধু প্রতিভা যথেষ্ট নয়।

ক্রুজেইরো, ফ্লামেঙ্গো ও ভিতোরিয়া যখন ব্রাজিলিয়ান লিগ টেবিলে উপরে উঠছে, নেইমারের সান্তোস তখন দুশ্চিন্তায়। আরও একটি হার পেইজিদের ডুবিয়ে দিতে পারে, আর তাদের ন্মবর টেনের ১০ প্রতিটি শারীরিক সমস্যা সরাসরি আঘাত করছে দলের মনোবলে।

তাতে সেই চিরচেনা প্রশ্নটা আবার সামনে আসছে–নেইমার কি বিশ্বকাপ খেলতে পারবে? আজ সেই উত্তর তার প্রতিভায় নয়, বরং তার হাঁটুতেই নির্ভর করছে। আর এটাই ভিলা বেলমিরোর চারপাশে ঘুরে বেড়ানো আসল ভয়।
জনপ্রিয়

চৌগাছার ইজিবাইক–প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষ, শিক্ষার্থীসহ আহত ৭

ফের ইনজুরিতে নেইমার, বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ১২:৫১:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫

বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেতে হলে পুরোপুরি ফিট হতে হবে–নেইমারকে এমন শর্তই বেঁধে দিয়েছেন ব্রাজিলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি। সেই শর্ত পূরণ করতে ৩৩ বছর বয়সী তারকার হাতে আছে মাত্র ছয়মাস। সময় দ্রুত ফুরিয়ে আসছে, নেইমার আশা জাগাতে পারছেন কই! পাশের মহাদেশে বসতে যাওয়া বিশ্বকাপে নেইমারের খেলার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। শৈশবের ক্লাব সান্তোসে ফেরার পরও পুরনো শত্রু ইনজুরির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে নেইমারকে।

গতকাল (২৫ নভেম্বর) ইন্টারন্যাসিওনালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে অবনমন অঞ্চলে নেমে গেছে সান্তোস। এই ম্যাচের আগে নতুন করে ফের ইনজুরিতে পড়েছেন নেইমার। দলের তারকা খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলতে নেমে জয়ের দেখা পায়নি পেইজিরা। ৩৫ ম্যাচ শেষে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে ১৭ নম্বরে নেমে গেছে সান্তোস। অবনমন এড়াতে তাদের হাতে আছে আর মাত্র ৩টি ম্যাচ।

তবে খুব সম্ভবত এই তিন ম্যাচেও নেইমারকে ছাড়াই খেলতে হবে সান্তোসকে। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, মেনিস্কাস ইনজুরির কারণে চলতি বছর আর মাঠে নামা নাও হতে পারে ৩৩ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ডের।  সে ক্ষেত্রে তার বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন যে বড়সড় ধাক্কা খেতে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

গত জানুয়ারিতে আল হিলালের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে সান্তোসে ফেরেন নেইমার। এরপর থেকে ২৫ ম্যাচে ৭ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করেছেন। তবে এ সময়েও ইনজুরির সঙ্গে লড়তে হয়েছে তাকে। মাত্রই ইনজুরি কাটিয়ে ছন্দে ফেরার লড়াইয়ে ছিলেন এই ৩৩ বছর বয়সী।

ইন্টারনাসিওনালের সঙ্গে ১-১ ড্রয়ের পর কোচ হুয়ান পাবলো ভয়ভোদা খুবই সরাসরি কথা বলেছেন। আর্জেন্টাইন কোচ ব্যাখ্যা করেছেন, মিরাসোলের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই নেইমারের হাঁটুতে অস্বস্তি ছিল, আর সপ্তাহজুড়েই সেই ব্যথা আরও বেড়েছে।

ভয়ভোদা বলেছেন, ‘পরিকল্পনা হলো তাকে স্পোর্টের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত রাখা। কিন্তু তার আগে আমাকে ওর সঙ্গে কথা বলতে হবে। আমি তার সিদ্ধান্ত ও তার শরীরকে সম্মান করি। সে সবসময় খেলতে চায়, কিন্তু এবার সে অনুভব করেছে সে ম্যাচের চাহিদা মেটাতে পারবে না।

এদিকে, নেইমারের জন্য পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যাচ্ছে সান্তোসের সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদকালের জন্য। চলতি বছর শেষেই পেইজিদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এই ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ডের। নতুন করে চুক্তি নবায়নের জন্য এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। ক্লাব সভাপতি মার্সেলো তেইশেইরা বলেছেন, চুক্তি বাড়ানোর ইচ্ছা আছে, কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে খেলোয়াড়ের অনুভূতি এবং সবচেয়ে বড় কথা—তার শারীরিক অবস্থার ওপর। তিনি বলেন, ‘তার (নেইমার) পুরো প্রকল্পই বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে। যদি সমঝোতা হয়, সে নবায়ন করবে।

জাতীয় দল থেকে কার্লো আনচেলত্তি সতর্ক কিন্তু আশাবাদী অবস্থান বজায় রেখেছেন, ‘সে লম্বা তালিকায় আছে। তার সামনে ছয় মাস সময় আছে নিজেকে প্রমাণ করার। তার দরকার ধারাবাহিকতা, খেলার মিনিট এবং শারীরিক ফিটনেস। আধুনিক ফুটবলে শুধু প্রতিভা যথেষ্ট নয়।

ক্রুজেইরো, ফ্লামেঙ্গো ও ভিতোরিয়া যখন ব্রাজিলিয়ান লিগ টেবিলে উপরে উঠছে, নেইমারের সান্তোস তখন দুশ্চিন্তায়। আরও একটি হার পেইজিদের ডুবিয়ে দিতে পারে, আর তাদের ন্মবর টেনের ১০ প্রতিটি শারীরিক সমস্যা সরাসরি আঘাত করছে দলের মনোবলে।

তাতে সেই চিরচেনা প্রশ্নটা আবার সামনে আসছে–নেইমার কি বিশ্বকাপ খেলতে পারবে? আজ সেই উত্তর তার প্রতিভায় নয়, বরং তার হাঁটুতেই নির্ভর করছে। আর এটাই ভিলা বেলমিরোর চারপাশে ঘুরে বেড়ানো আসল ভয়।