মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিরাজগঞ্জে পাউবোর জমি দখল করে গড়ে উঠেছে ভবন–দোকান–বসতঘর

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 
সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জের সলঙ্গা হাটসংলগ্ন গাড়াদহ নদীর পশ্চিম তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। তালিকা ও চিঠি চালাচালি হলেও জমি এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
সলঙ্গা থানার মধ্যপাড়া ভরমোহনী মৌজায় পাকা সড়কের দুই পাশে দেখা যায় সারি সারি ভবন, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং টিন–ইটের ঘর। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে স’মিলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। দৃশ্যটি সমৃদ্ধ কোনো বাণিজ্যিক এলাকা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এসব স্থাপনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাড়াদহ নদীর পশ্চিম তীরঘেঁষা জমি দখল করে নির্মিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সলঙ্গা হাটসংলগ্ন জামে মসজিদের দক্ষিণ দিক থেকে আনোয়ার আমিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় পাউবোর জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আছেন বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি। দখলদারদের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। কেউ টিনের ঘর তুলে ব্যবসা করছেন, কেউ বা পাকা ভবন নির্মাণ করে ব্যক্তিগত বা ভাড়াভিত্তিকভাবে ব্যবহার করছেন।
বিগত কয়েক বছরে পাউবো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য তালিকা প্রস্তুত করে দখলদারদের চিঠি প্রদান করেছে। ২০২২–২৩ অর্থবছরে স্থাপনা সরিয়ে নিতে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দেওয়া হয়। তবে চিঠি প্রদানেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে এবং জমি দখলমুক্তের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, এলাকায় আব্দুল আজিজ, বরুন সাহা, শহীদ, ফকরুল তালুকদার, তোতা তালুকদার, হিটু খোন্দকার, প্রভাষক আজাদ, জুয়েল রানা, আলীম, টুটুল খোন্দকার, করিম আমিন, কায়উম সরকার, আব্দুল লতিফ, আতাউর রহমান লাবু, তারা খোন্দকার, রবিন, ফণি ভূষণ পোদ্দার, লাবু তালুকদার, মমিন তালুকদার, শাহজাহান আলী, আকবর আলী মাস্টার, আনোয়ার আমিন, আব্দুল মমিন, হেলাল খোন্দকারসহ অনেকে সরকারি জমিতে টিনের ঘর ও পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। বেশ কিছু স্থাপনা দোকান বা ব্যবসায়িক কাজে ভাড়া দেওয়া হয়।
দখলদারদের কেউ কেউ দাবি করেন, তারা জায়গা কিনেছেন বা দীর্ঘদিন ধরে লিজ নিয়ে ব্যবহার করছেন। অনেকে সরকারি খাসজমির রেকর্ড থাকার কথাও জানিয়েছেন। কেউ কেউ জানান, পাউবোর প্রয়োজন হলে তারা স্থাপনা সরিয়ে দিতে রাজি আছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দখলদারদের এই নির্মাণ কার্যক্রম দীর্ঘ সময় ধরে চললেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর বাধা দেয়নি। তিনতলা–চারতলা ভবন নির্মাণে দীর্ঘ সময় লাগে, তবুও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এলাকার সচেতন মহল জানায়, অবৈধভাবে আরএস রেকর্ড ব্যবহার করে সরকারি জমি দখলের ঘটনা দীর্ঘদিনের। তারা এসব রেকর্ড বাতিল এবং জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান। স্থানীয়দের মতে, দখলদার যতই প্রভাবশালী হোক, সরকারি জমি সাধারণ মানুষের কল্যাণে ফিরিয়ে আনা জরুরি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দখলমুক্ত উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জনপ্রিয়

যশোর বাঘারপাড়ায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় হাজারো মানুষের দোয়া

সিরাজগঞ্জে পাউবোর জমি দখল করে গড়ে উঠেছে ভবন–দোকান–বসতঘর

প্রকাশের সময় : ০২:৫৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 
সিরাজগঞ্জ রায়গঞ্জের সলঙ্গা হাটসংলগ্ন গাড়াদহ নদীর পশ্চিম তীরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। তালিকা ও চিঠি চালাচালি হলেও জমি এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
সলঙ্গা থানার মধ্যপাড়া ভরমোহনী মৌজায় পাকা সড়কের দুই পাশে দেখা যায় সারি সারি ভবন, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং টিন–ইটের ঘর। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে স’মিলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। দৃশ্যটি সমৃদ্ধ কোনো বাণিজ্যিক এলাকা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এসব স্থাপনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাড়াদহ নদীর পশ্চিম তীরঘেঁষা জমি দখল করে নির্মিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সলঙ্গা হাটসংলগ্ন জামে মসজিদের দক্ষিণ দিক থেকে আনোয়ার আমিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় পাউবোর জমি দীর্ঘদিন ধরে দখল করে আছেন বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি। দখলদারদের মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী, রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন রয়েছেন। কেউ টিনের ঘর তুলে ব্যবসা করছেন, কেউ বা পাকা ভবন নির্মাণ করে ব্যক্তিগত বা ভাড়াভিত্তিকভাবে ব্যবহার করছেন।
বিগত কয়েক বছরে পাউবো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য তালিকা প্রস্তুত করে দখলদারদের চিঠি প্রদান করেছে। ২০২২–২৩ অর্থবছরে স্থাপনা সরিয়ে নিতে আনুষ্ঠানিক চিঠিও দেওয়া হয়। তবে চিঠি প্রদানেই কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকে এবং জমি দখলমুক্তের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পাওয়া যায়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, এলাকায় আব্দুল আজিজ, বরুন সাহা, শহীদ, ফকরুল তালুকদার, তোতা তালুকদার, হিটু খোন্দকার, প্রভাষক আজাদ, জুয়েল রানা, আলীম, টুটুল খোন্দকার, করিম আমিন, কায়উম সরকার, আব্দুল লতিফ, আতাউর রহমান লাবু, তারা খোন্দকার, রবিন, ফণি ভূষণ পোদ্দার, লাবু তালুকদার, মমিন তালুকদার, শাহজাহান আলী, আকবর আলী মাস্টার, আনোয়ার আমিন, আব্দুল মমিন, হেলাল খোন্দকারসহ অনেকে সরকারি জমিতে টিনের ঘর ও পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। বেশ কিছু স্থাপনা দোকান বা ব্যবসায়িক কাজে ভাড়া দেওয়া হয়।
দখলদারদের কেউ কেউ দাবি করেন, তারা জায়গা কিনেছেন বা দীর্ঘদিন ধরে লিজ নিয়ে ব্যবহার করছেন। অনেকে সরকারি খাসজমির রেকর্ড থাকার কথাও জানিয়েছেন। কেউ কেউ জানান, পাউবোর প্রয়োজন হলে তারা স্থাপনা সরিয়ে দিতে রাজি আছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দখলদারদের এই নির্মাণ কার্যক্রম দীর্ঘ সময় ধরে চললেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর বাধা দেয়নি। তিনতলা–চারতলা ভবন নির্মাণে দীর্ঘ সময় লাগে, তবুও কর্মকর্তা–কর্মচারীদের কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
এলাকার সচেতন মহল জানায়, অবৈধভাবে আরএস রেকর্ড ব্যবহার করে সরকারি জমি দখলের ঘটনা দীর্ঘদিনের। তারা এসব রেকর্ড বাতিল এবং জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান। স্থানীয়দের মতে, দখলদার যতই প্রভাবশালী হোক, সরকারি জমি সাধারণ মানুষের কল্যাণে ফিরিয়ে আনা জরুরি।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেছুর রহমান জানান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দখলমুক্ত উদ্যোগ নেওয়া হবে।