বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে ৮ কুকুর ছানাকে হত্যা, শোকে অসুস্থ মা

ছবি-সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুর ছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ছানাগুলোকে দেখতে না পেয়ে মা কুকুরটি বিকটভাবে কাঁদতে থাকে। এসময় খাবার দিলেও কুকুরটি কিছু খায়নি। এতে কুকুরটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড় থেকে বস্তাবন্দি কুকুর ছানাগুলো উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবনে বসবাসরত ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার স্ত্রী নিশি বেগম অমানবিক এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর জানান, একটি আবাসিক ভবনে মা কুকুর সম্প্রতি আটটি ছানা প্রসব করে। রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর ছানাগুলো দেখতে না পেয়ে মা কুকুরটি হন্যে হয়ে এদিক সেদিক খোঁজ করতে থাকে। পাশাপাশি বিকটভাবে কাঁদতে থাকে। সারারাতই মা কুকুরটিকে অফিসার্স ক্লাব এবং আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাসার দরজায় দরজায় ঘুরতে দেখা গেছে। এসময় খাবার দিলেও কুকুরটি কিছু খায়নি।

তিনি বলেন, ‌‘সোমবার সকালে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় তাকে কুকুর ছানার বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এসময় তার ছোট ছেলে বলে, আমার আম্মু কুকুরের বাচ্চাগুলো বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। একথা শুনে হাসানুর রহমান দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরে পুকুরে গিয়ে দেখি, কুকুরের মৃত ছানাগুলোসহ বস্তায় ভাসছে। তুলে এনে বস্তার মুখ খুলে দেখা যায়, ছানাগুলো মারা গেছে।’

এ ঘটনার ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। একজন লিখেছেন, ‘মানুষ নামের কলঙ্ক ওই ব্যক্তি। ঘৃণা প্রকাশ করছি’। আরেকজন লিখেছেন, ‘ভাষা নেই কিছু বলার। তদন্ত করা হোক কে এই মানুষ নামের কলঙ্ক।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নিশি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী হাসানুর রহমান নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত। এর বেশি আর কিছু বলতে পারছি না।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘এটা খুবই অমানবিক। মা কুকুর এরইমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে আমাদের লোকজন চিকিৎসা দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘পরিষদ চত্বরে সংঘটিত এ ঘটনায় আমি চরমভাবে মর্মাহত। সকালে পরিষদে এ বিষয়ে অফিসারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয়

ঝিকরগাছায় অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার আসামি গ্রেপ্তার

বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে ৮ কুকুর ছানাকে হত্যা, শোকে অসুস্থ মা

প্রকাশের সময় : ১০:৫৩:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুর ছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ছানাগুলোকে দেখতে না পেয়ে মা কুকুরটি বিকটভাবে কাঁদতে থাকে। এসময় খাবার দিলেও কুকুরটি কিছু খায়নি। এতে কুকুরটি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের পুকুর পাড় থেকে বস্তাবন্দি কুকুর ছানাগুলো উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদের আবাসিক ভবনে বসবাসরত ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তার স্ত্রী নিশি বেগম অমানবিক এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসভবনের কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর জানান, একটি আবাসিক ভবনে মা কুকুর সম্প্রতি আটটি ছানা প্রসব করে। রোববার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর ছানাগুলো দেখতে না পেয়ে মা কুকুরটি হন্যে হয়ে এদিক সেদিক খোঁজ করতে থাকে। পাশাপাশি বিকটভাবে কাঁদতে থাকে। সারারাতই মা কুকুরটিকে অফিসার্স ক্লাব এবং আবাসিক এলাকার বিভিন্ন বাসার দরজায় দরজায় ঘুরতে দেখা গেছে। এসময় খাবার দিলেও কুকুরটি কিছু খায়নি।

তিনি বলেন, ‌‘সোমবার সকালে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়ন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় তাকে কুকুর ছানার বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এসময় তার ছোট ছেলে বলে, আমার আম্মু কুকুরের বাচ্চাগুলো বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দিয়েছে। একথা শুনে হাসানুর রহমান দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। পরে পুকুরে গিয়ে দেখি, কুকুরের মৃত ছানাগুলোসহ বস্তায় ভাসছে। তুলে এনে বস্তার মুখ খুলে দেখা যায়, ছানাগুলো মারা গেছে।’

এ ঘটনার ছবি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। একজন লিখেছেন, ‘মানুষ নামের কলঙ্ক ওই ব্যক্তি। ঘৃণা প্রকাশ করছি’। আরেকজন লিখেছেন, ‘ভাষা নেই কিছু বলার। তদন্ত করা হোক কে এই মানুষ নামের কলঙ্ক।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নিশি বেগমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বামী হাসানুর রহমান নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে চরম বিপর্যস্ত। এর বেশি আর কিছু বলতে পারছি না।’

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বলেন, ‘এটা খুবই অমানবিক। মা কুকুর এরইমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে আমাদের লোকজন চিকিৎসা দিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘পরিষদ চত্বরে সংঘটিত এ ঘটনায় আমি চরমভাবে মর্মাহত। সকালে পরিষদে এ বিষয়ে অফিসারদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।