
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
টাঙ্গুয়া ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষা আদেশ বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক অংশীজন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১লা ডিসেম্বর) মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) যুগ্মসচিব ড. মোহাম্মদ মাহে আলম। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তৌহিদুজ্জামান পাভেল এর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা, আইসিটি) মোঃ রোকন-উল-হাসান, উপ-পরিচালক সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শাহিনা আক্তার প্রমুখ।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, হাকালুকি হাওর বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি। এটি শুধু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেই নয়, প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন,অতিথি ও আবাসিক পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্তল এবং স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকার ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি, দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাত কমাতে এই হাওর একটি কার্যকর প্রাকৃতিক বাফার হিসেবে কাজ করে।
তারা বলেন, হাওর সুরক্ষা আদেশ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। কারণ অবৈধভাবে মাছ আহরণ, পাখি নিধন, জলাশয় ভরাট, দখল, দূষণ ও প্রাকৃতিক সম্পদের নির্বিচার ব্যবহারের কারণে হাওরের স্বাভাবিক প্রতিবেশ এখন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষা আদেশ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখা ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
বক্তারা আরও বলেন, হাকালুকি হাওরের প্রধান পানিপ্রবাহ জুড়ী নদী ও কন্টিনালা নদীর মাধ্যমে এসে হাওরে যুক্ত হয়। তাই হাকালুকি হাওরের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এসব নদীর স্বাভাবিক ও বাধাহীন পানিপ্রবাহ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। পানির প্রবাহ সঠিকভাবে অব্যাহত থাকলে হাওরের স্বাভাবিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন থাকবে। এছাড়া হাওরের জলাধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও অকাল বন্যা থেকে বাঁচতে হাকালুকি হাওরসহ সংশ্লিষ্ট জুড়ী নদী ও কন্টিনালা নদী খনন ও সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্জ্য ও পলিমাটি অপসারণের মাধ্যমে পানির প্রবাহ নির্বিঘ্ন করা গেলে হাওরের জলধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং এর প্রাকৃতিক প্রতিবেশ আরো সুসংহত হবে।
তারা বলেন, দেশের বৃহত্তম মিঠাপানির জলাধারগুলোর অন্যতম হাকালুকি হাওর—জীববৈচিত্র্য, মৎস্যসম্পদ, পরিবেশ ও স্থানীয় জীবিকার জন্য অপরিসীম গুরুত্ব বহন করে। এই হাওরকে টেকসইভাবে রক্ষা করতে আইনি সুরক্ষা, সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং সব পক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। হাকালুকি হাওরকে পরিবেশগত হুমকি থেকে রক্ষা করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ইকোসিস্টেম নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কর্মশালায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার,সহকারী কমিশনার (ভূমি),স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পরিবেশবিদ, গণমাধ্যমকর্মী ও হাওর সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা অংশগ্রহণ করেন।
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: 

































