মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়রের ভিডিও বার্তা

বাড়ির দরজায় আসা আইসিই এজেন্টদের প্রতিরোধের উপায় জানালেন মেয়র মামদানি

ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি:
নিউ ইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি রোববার (৭ডিসেম্বর) একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেখিয়েছেন, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টদের মুখোমুখি হলে নিউ ইয়র্কবাসীর আইনি অধিকার কী এবং কীভাবে তা প্রয়োগ করা উচিত। ম্যানহাটনে সম্প্রতি একটি অভিযানের পর এ ভিডিও প্রকাশ করা হয়। মামদানি প্রতিশ্রুতি দেন, তার প্রশাসন শহরের সাংবিধানিক প্রতিবাদের অধিকার রক্ষা করবে এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ভিডিওটি প্রকাশ পেল এমন এক সময়ে, যখন নিউ ইয়র্কে অভিবাসন তৎপরতা নতুন করে নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে এবং মামদানির বার্তা স্পষ্ট: ফেডারেল পদক্ষেপ যদি অভিবাসীদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তবে নিউ ইয়র্কবাসীদের প্রস্তুত, সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে আইনি অধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
ভিডিওতে মামদানি প্রথমেই গত সপ্তাহে ম্যানহাটনে আইসিই অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, মেয়র হিসেবে আমি প্রত্যেক নিউ ইয়র্কারের অধিকার রক্ষা করব। এই শহরে বসবাসকারী ৩০ লাখেরও বেশি অভিবাসীও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আইসিই-এর মুখোমুখি হলে, আপনার যদি অধিকার জানা থাকে আমরা সবাই দাঁড়াতে পারি।
তিনি বলেন, প্রথমত, আদালতের বিচারকের স্বাক্ষরযুক্ত বিচারিক ওয়ারেন্ট ছাড়া আইসিই আপনার বাড়ি, স্কুল বা কর্মস্থলের ব্যক্তিগত স্থানে প্রবেশ করতে পারে না। আইসিই যদি বিচারিক ওয়ারেন্ট না দেখাতে পারে, আপনার ‘আমি প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছি না’ বলার অধিকার আছে এবং দরজা বন্ধ রাখার অধিকারও আছে।
মামদানি জানান, আইসিই অনেক সময় কাগজপত্র দেখিয়ে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আছে দাবি করতে পারে কিন্তু সেটি মিথ্যা হতে পারে।
তিনি বলেন, আইসিই আইনত আপনাকে মিথ্যা বলতে পারে, কিন্তু আপনার নীরব থাকার অধিকার রয়েছে। আপনাকে আটকালে আপনি বারবার জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কি যেতে পারি?  যতক্ষণ না তারা উত্তর দেয়।
নির্বাচিত মেয়র আরও জানান, গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় বাধা না দিলে নাগরিকেরা আইসিই এজেন্টদের ভিডিও ধারণ করতেও আইনগতভাবে স্বাধীন।
মামদানি বলেন, আইসিই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যে কোনো যোগাযোগে শান্ত থাকা জরুরি। তদন্তে বাধা দেবেন না, গ্রেপ্তারে প্রতিরোধ বা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
শেষে তিনি নিউ ইয়র্কবাসীর সাংবিধানিক প্রতিবাদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। নিউ ইয়র্কবাসীর প্রতিবাদের সাংবিধানিক অধিকার আছে এবং আমি মেয়র হলে আমরা এ অধিকার রক্ষা করব। নিউ ইয়র্ক সবসময় অভিবাসীদের স্বাগত জানাবে আমি প্রতিদিন তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় লড়ব।
ভিডিওটি প্রকাশের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর, যখন নতুন মেয়র–নির্বাচিত মামদানি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করে শহরের অর্থনৈতিক স্বস্তি ও সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যে আলাপ করেন, তখন তাদের সম্পর্ক নতুন আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করে।
তবুও, তিনি ব্রংক্সের একটি গির্জায় বক্তৃতা দিয়ে নিউ ইয়র্কের ‘সাংকেতিক শহর’ পরিচয় অটুট রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মামদানি বলেন, আমি প্রেসিডেন্টকে সরাসরি বলেছি নিউ ইয়র্কবাসী শহরের আইন মানতে চায়। আর আইন বলছে, আমাদের স্যাংচুয়ারি নীতি অনুযায়ী শহর সরকার ফেডারেল সংস্থার সঙ্গে কেবল প্রায় ১৭০টি গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে পারে। উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যখন এর বাইরে সাধারণ আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েও বহু মানুষ আটক, গ্রেপ্তার এবং নির্বাসিত হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এই শহরের পরবর্তী মেয়র হিসেবে আমার প্রধান কাজ হবে এই শহরকে বাড়ি বলে যারা, সেই অভিবাসীদের সুরক্ষা প্রদান।
জনপ্রিয়

মামদানির জননিরাপত্তা ট্রানজিশন টিমে দোষী সাব্যস্ত সশস্ত্র ডাকাত নিয়োগ

নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়রের ভিডিও বার্তা

বাড়ির দরজায় আসা আইসিই এজেন্টদের প্রতিরোধের উপায় জানালেন মেয়র মামদানি

প্রকাশের সময় : ১২:২১:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি:
নিউ ইয়র্ক সিটির নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি রোববার (৭ডিসেম্বর) একটি ভিডিও প্রকাশ করে দেখিয়েছেন, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টদের মুখোমুখি হলে নিউ ইয়র্কবাসীর আইনি অধিকার কী এবং কীভাবে তা প্রয়োগ করা উচিত। ম্যানহাটনে সম্প্রতি একটি অভিযানের পর এ ভিডিও প্রকাশ করা হয়। মামদানি প্রতিশ্রুতি দেন, তার প্রশাসন শহরের সাংবিধানিক প্রতিবাদের অধিকার রক্ষা করবে এবং অভিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
ভিডিওটি প্রকাশ পেল এমন এক সময়ে, যখন নিউ ইয়র্কে অভিবাসন তৎপরতা নতুন করে নজরের কেন্দ্রবিন্দুতে এবং মামদানির বার্তা স্পষ্ট: ফেডারেল পদক্ষেপ যদি অভিবাসীদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠে, তবে নিউ ইয়র্কবাসীদের প্রস্তুত, সচেতন ও আত্মবিশ্বাসী হয়ে আইনি অধিকার প্রয়োগ করতে হবে।
ভিডিওতে মামদানি প্রথমেই গত সপ্তাহে ম্যানহাটনে আইসিই অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, মেয়র হিসেবে আমি প্রত্যেক নিউ ইয়র্কারের অধিকার রক্ষা করব। এই শহরে বসবাসকারী ৩০ লাখেরও বেশি অভিবাসীও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু আইসিই-এর মুখোমুখি হলে, আপনার যদি অধিকার জানা থাকে আমরা সবাই দাঁড়াতে পারি।
তিনি বলেন, প্রথমত, আদালতের বিচারকের স্বাক্ষরযুক্ত বিচারিক ওয়ারেন্ট ছাড়া আইসিই আপনার বাড়ি, স্কুল বা কর্মস্থলের ব্যক্তিগত স্থানে প্রবেশ করতে পারে না। আইসিই যদি বিচারিক ওয়ারেন্ট না দেখাতে পারে, আপনার ‘আমি প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছি না’ বলার অধিকার আছে এবং দরজা বন্ধ রাখার অধিকারও আছে।
মামদানি জানান, আইসিই অনেক সময় কাগজপত্র দেখিয়ে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা আছে দাবি করতে পারে কিন্তু সেটি মিথ্যা হতে পারে।
তিনি বলেন, আইসিই আইনত আপনাকে মিথ্যা বলতে পারে, কিন্তু আপনার নীরব থাকার অধিকার রয়েছে। আপনাকে আটকালে আপনি বারবার জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কি যেতে পারি?  যতক্ষণ না তারা উত্তর দেয়।
নির্বাচিত মেয়র আরও জানান, গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ায় বাধা না দিলে নাগরিকেরা আইসিই এজেন্টদের ভিডিও ধারণ করতেও আইনগতভাবে স্বাধীন।
মামদানি বলেন, আইসিই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যে কোনো যোগাযোগে শান্ত থাকা জরুরি। তদন্তে বাধা দেবেন না, গ্রেপ্তারে প্রতিরোধ বা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।
শেষে তিনি নিউ ইয়র্কবাসীর সাংবিধানিক প্রতিবাদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। নিউ ইয়র্কবাসীর প্রতিবাদের সাংবিধানিক অধিকার আছে এবং আমি মেয়র হলে আমরা এ অধিকার রক্ষা করব। নিউ ইয়র্ক সবসময় অভিবাসীদের স্বাগত জানাবে আমি প্রতিদিন তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় লড়ব।
ভিডিওটি প্রকাশের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর, যখন নতুন মেয়র–নির্বাচিত মামদানি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করে শহরের অর্থনৈতিক স্বস্তি ও সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নের বিষয়ে অভিন্ন লক্ষ্যে আলাপ করেন, তখন তাদের সম্পর্ক নতুন আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করে।
তবুও, তিনি ব্রংক্সের একটি গির্জায় বক্তৃতা দিয়ে নিউ ইয়র্কের ‘সাংকেতিক শহর’ পরিচয় অটুট রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
মামদানি বলেন, আমি প্রেসিডেন্টকে সরাসরি বলেছি নিউ ইয়র্কবাসী শহরের আইন মানতে চায়। আর আইন বলছে, আমাদের স্যাংচুয়ারি নীতি অনুযায়ী শহর সরকার ফেডারেল সংস্থার সঙ্গে কেবল প্রায় ১৭০টি গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে যোগাযোগ করতে পারে। উদ্বেগ সৃষ্টি হয় যখন এর বাইরে সাধারণ আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েও বহু মানুষ আটক, গ্রেপ্তার এবং নির্বাসিত হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এই শহরের পরবর্তী মেয়র হিসেবে আমার প্রধান কাজ হবে এই শহরকে বাড়ি বলে যারা, সেই অভিবাসীদের সুরক্ষা প্রদান।