
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
সিএনজি চালক নাসির উদ্দীন সহ ৫ ভাই পৃথক পৃথক ভাবে পরিবার নিয়ে ওই ঘরটিতে বসবাস করে আসছেন। নাসিরসহ দুই ভাই সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও অন্যরা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ঘরটিতে তাদের ৫ ভাইয়ের স্ত্রী,শিশু সন্তান,নাসির উদ্দীন এর মা ও বোনসহ অন্তত ২০ জনের সদস্য বসবাস করে আসছেন।
রবিবার (৮ই ডিসেম্বর) রাতে পরিবারের গৃহিণীরা রান্নাবান্নার কাজে ব্যস্ত। এমন সময় হটাৎ আগুনের দৃশ্য দেখে হতভম্ব হয়ে পড়েন গোটা পরিবারের সদস্যরা। জীবন বাঁচাতে ঘরটি অরক্ষিত রেখেই বাহিরে বেড়িয়ে আসেন তারা। তাদের চোখের সামনেই মুহুর্তেই মধ্যে সাজানো-গোছানো সংসার তছনছ হয়ে যায় আগুনের লেলিহান শিখায়। এসময় পুরো গ্রামবাসীর উপস্থিতিতেই এ ঘটনার বিভৎসতার স্বাক্ষী হন।
রাত ১০ টার দিকে খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাজিব হোসেন, নাজিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে সহায়তার আশ্বাসও দেন তারা এবং প্রাথমিকভাবে কম্বল ও কিছু শুকনো খাবার দেন। তবে কোন আর্থিক সহায়তা পায়নি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো।
নাজিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন জানান, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত, এ ঘটনায় পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। তিনি জানান, নগদ লক্ষাধিক টাকা সহ অন্তত ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাজিব হোসেন জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢেউটিন ও নগদ অর্থসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে সারাজীবনের কষ্টার্জিত মাথাগোঁজার ঠাঁই টুকু হারিয়ে পরিবারের সদস্যদের মাতম, আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে উত্তর আটঘর গ্রামের আশপাশের পরিবেশ। গতকাল বিকেলেও যেখানো একত্রে সবাই এক ছাদের নিচে সুখের সপ্ন ভুনতেন। আজ চোখের নিমেষেই সেখানে পুড়া গন্ধে বিষাদময় পরিবেশ।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় সিএনজি চালক নাসির উদ্দীন এর সাথে। পরিচয় দিয়ে কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, বাল্ব বিস্ফোরণে প্রথমে আগুনের দৃশ্য দেখেন তাঁর মা। মুহূর্তেই ঘরের সবগুলো কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তিনি বলেন, সব হারিয়ে আমরা এখন অন্যর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। ধান বিক্রির দেড় লাখ টাকা, শতাধিক মন আমন ধান, পাঁচ ভাইয়ের ঘরে থাকা স্বর্ণালঙ্কার,আসবাবপত্রসহ সব পুড়ে ছাই। কিচ্ছুই বাহিরে আনা সম্ভব হয়নি।
মৌলভীবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ সিদ্দিকুল আলম আগুন লাগার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৈদ্যুতিক সর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: 






































