
দীর্ঘ ১৭ বছর পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন। এই প্রত্যাবর্তনকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে এবং নির্বাচনী রাজনীতিতে শক্তিশালী ঢেউ তুলতে চায় দলটি। এ লক্ষ্যে তার ফেরার দিন ঢাকায় স্মরণকালের বৃহত্তম জনসমাগম ঘটানোর বিশাল পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিএনপি।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করার পর থেকেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত সাংগঠনিক প্রস্তুতি, নিরাপত্তাব্যবস্থাসহ সার্বিক কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। কেন্দ্রীয় বিএনপির সমন্বয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে।
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে সারাদেশ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থকসহ সাধারণ মানুষ ঢাকায় আসবেন। বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু করে গুলশান-বনানী পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় এই বিশাল জনসমাগম ঘটবে।
সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, তারেক রহমান যেদিন বাংলাদেশে পা দেবেন, সেদিন যেন সারা বাংলাদেশ কেঁপে ওঠে। তিনি মন্তব্য করেন, বিএনপি সেদিন দেশের রাজনৈতিক চেহারা বদলে দিতে চায়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে কর্মসূচি নিয়ে দলে আলোচনা চলছে এবং তা শিগগিরই চূড়ান্ত হবে।
দলের নেতারা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে ছুটির দিনেই তারেক রহমানের দেশে ফেরার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি। এরপর রয়েছে শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি।
তারেক রহমানের আগমন ঘিরে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় নিয়োজিত চেয়ারপারসন সিকিউরিটি ফোর্স (সিএসএফ) পুনর্গঠন করা হয়েছে এবং সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে সিএসএফের দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ কে এম শামসুল ইসলাম। ঢাকায় ফেরার পর তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের নিরাপত্তায় সিএসএফ কাজ করবে।
এ ছাড়াও, অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে খালেদা জিয়াকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) মোতায়েন করেছে এবং সরকারের পক্ষ থেকেও তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, তারেক রহমান ২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন এবং ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই তার দেশে ফেরার বিষয়টি আলোচনায় ছিল। তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান গত ৫ ডিসেম্বর শাশুড়ি বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে দেশে আসেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে এবং এর প্রভাব নির্বাচনী মাঠে পড়তে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 







































