বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে শিক্ষকের উপস্থিতে শহীদ স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে ছবি তোলা নিয়ে ক্ষোপ

মিন্টু কান্তি নাথ (রাজস্থলী প্রতিনিধি)

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে উঠে ছবি তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলে বিজয় দিবসের মতো একটি গৌরবময় ও আবেগঘন দিনে জুতা পরিহিত অবস্থায় স্মৃতিসৌধের বেদিতে উঠে জুতা পায়ের ছবি তুলেছেন, যা অনেকের কাছে শহীদদের প্রতি অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,সংগঠন ও দপ্তরের পক্ষ থেকে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কর্মসূচির এক পর্যায়ে তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জুতা পায়ে শহীদ স্মৃতিসৌধের ওপর উঠে ছবি তুললে সেখানে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।

অনেকে মনে করছেন,বিজয় দিবসের মতো জাতীয় দিবসে স্মৃতিসৌধে আচরণ বিষয়ে আরও সচেতনতা ও শিষ্টাচার অনুসরণ করা জরুরি। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে এড়াতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতীয় প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আরও জোরালোভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার কথা জানান বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বলেন, শহীদ স্মৃতিসৌধ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের প্রতীক; সেখানে জুতা পায়ে ওঠা বা ছবি তোলা জাতীয় চেতনা ও রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষার দায়িত্বে থাকেন। সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা আরও দুঃখজনক। তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় দিবসগুলোতে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে যথাযথ আচরণ নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

জনপ্রিয়

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আটক 

রাজস্থলীতে বিজয় দিবসে শিক্ষকের উপস্থিতে শহীদ স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে ছবি তোলা নিয়ে ক্ষোপ

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মিন্টু কান্তি নাথ (রাজস্থলী প্রতিনিধি)

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে জুতা পায়ে উঠে ছবি তোলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী মিলে বিজয় দিবসের মতো একটি গৌরবময় ও আবেগঘন দিনে জুতা পরিহিত অবস্থায় স্মৃতিসৌধের বেদিতে উঠে জুতা পায়ের ছবি তুলেছেন, যা অনেকের কাছে শহীদদের প্রতি অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজস্থলী উপজেলা প্রাঙ্গণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,সংগঠন ও দপ্তরের পক্ষ থেকে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কর্মসূচির এক পর্যায়ে তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী জুতা পায়ে শহীদ স্মৃতিসৌধের ওপর উঠে ছবি তুললে সেখানে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।

অনেকে মনে করছেন,বিজয় দিবসের মতো জাতীয় দিবসে স্মৃতিসৌধে আচরণ বিষয়ে আরও সচেতনতা ও শিষ্টাচার অনুসরণ করা জরুরি। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে এড়াতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতীয় প্রতীকের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আরও জোরালোভাবে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার কথা জানান বলে জানা গেছে।

এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সচেতন মহল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা বলেন, শহীদ স্মৃতিসৌধ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আত্মত্যাগের প্রতীক; সেখানে জুতা পায়ে ওঠা বা ছবি তোলা জাতীয় চেতনা ও রাষ্ট্রীয় শিষ্টাচারের পরিপন্থী।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ শিক্ষার দায়িত্বে থাকেন। সেখানে শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা আরও দুঃখজনক। তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে তাইতং পাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় দিবসগুলোতে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর ক্ষেত্রে যথাযথ আচরণ নিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।