
বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীকে ১৩ বছর আগে গুমের পর হত্যা করা হয়েছে। তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ কথা জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। গুম-খুনের অভিযোগে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পরে জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক মানুষকে গুম ও হত্যার অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীকে ২০১২ সালের এপ্রিলে ঢাকার বনানীতে বাসার কাছ থেকে তুলে নেয়া হয়েছিল, তার পর থেকে তার কোনো খোঁজ আর পাওয়া যায়নি।
ছাত্রদলের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক সিলেট-২ আসনে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
গণ–অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে অন্তর্বর্তী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠনের পর আওয়ামী লীগ সরকার আমলে গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত শুরু হয়। এই গুম-খুনের অন্যতম কুশীলব হিসেবে র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেনাবাহিনীর চাকরি হারিয়ে গ্রেফতার হন জিয়াউল। গুমের ঘটনার ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তে ইলিয়াস আলীসহ বিভিন্নজনকে গুম করার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানান তাজুল ইসলাম।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে উঠিয়ে নেয়া, রাস্তা থেকে তাকে গুম করা এবং তাকে পরবর্তী সময় হত্যা করা হয়েছে বলে তদন্তে জানা গেছে।
ট্রাইব্যুনালে চিফ প্রসিকিউটর জানান, জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে গুম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের একাধিক লোমহর্ষক তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: গাজীপুরে ৩ জনকে হত্যা, বরগুনার পাথরঘাটার চরদুয়ানিতে ৫০ জনকে গণকবর দেয়া বা হত্যা এবং সুন্দরবনে বনদস্যু দমনের নামে ‘বন্দুকযুদ্ধের নাটক’ সাজিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যার তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ।
ইলিয়াস আলী ছাড়াও বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, সাজেদুল হক সুমন, সালাহউদ্দিন আহমদসহ তিন শতাধিক ব্যক্তিকে গুম ও হত্যাকাণ্ডে জিয়াউল আহসানের সরাসরি সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক তথ্য মিলেছে বলে প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 







































