
অপরাধীদের খুঁজে পেতে পুলিশ যেমন তৎপর ছিল তেমন অবস্থা এখন আর নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের সুতার গোপটা এলাকায় জেলা বিএনপি আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
পুলিশকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘দুষ্কৃতিকারীরা সারা বাংলাদেশে রক্তপাত করছে, কিন্তু ধরা পড়ছে না কেন? তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? আগেতো এমনটি ছিল না, অপরাধ করার কয়েকদিনের মধ্যে তাদের খুঁজে পাওয়া যেত, ধরা যেত।
এ অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলছি আপনারা তৎপর হোন, না হলে আপনাদের প্রতি জনগণের সন্দেহ জাগবে। আপনাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অপরাধী ও খুনিরা পার পেয়ে গেলে, এ দেশে অন্ধকার নেমে আসবে। কিন্তু অসহায়দের পাশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল হিমালয় পর্বতের মতো প্রাচীর হয়ে থাকবে। কোনো দুষ্কৃতিকারী, অপরাধী আর যেন গ্রামে গ্রামে পরিবারে পরিবারে হামলা, গুলি ও আগুন দিতে না পারে সে বিষয় আমাদের দেখতে হবে।
এ সময় বিএনপি নেতা রিজভী আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এদের অত্যাচার, নৃশংসতা, ভয়বহতা, রক্ত পিপাসু ও এদের চেতনা সারা বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছিল। ৫ আগস্ট পুলিশের গুলির মুখে নিজের জীবন দিয়ে ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনার মতো ভয়ঙ্কর দানবকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছিল। তারপরও তারা থেমে নেই। তারা বাংলাদেশকে স্থিতিশীল থাকতে দিবে না, যারা আশ্রয় দিয়েছে, সেখান থেকে দুধ-কলা দিয়ে পোষণ করে সুতার টান দিচ্ছে। চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকে গুলি, ঢাকায় তরুণ ছাত্র নেতা ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যা আর লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে শিশু হত্যা, সবই একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন বিএনপি নেতা রিজভী।
তিনি বলেন, লুটপাট চালিয়ে অর্থ পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, তারা এখন ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন। যেন দেশে কোনো নির্বাচন না হতে পারে।
এর আগে অগ্নিদগ্ধ বিএনপি নেতা বেলালকে দেখতে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ছুটে যান রিজভী। পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনে নগদ ৪ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেয়া হয়। পরে নিহত শিশু আয়েশার কবর জিয়ারত ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন রিজভী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান ও বিএনপি নেতা হ্যাপি চৌধুরীসহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির নেতা বেলাল হোসেনের ঘরে তালা লাগিয়ে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃৃত্তরা। এ সময় বেলালের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে আয়েশা আক্তার অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যায়। বেলাল ও তার আরও দুই মেয়ে স্মৃতি ও বিথী অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।
নিজস্ব প্রতিবেদক 







































