বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাকিরের সাময়িক বরখাস্ত বহাল; ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা 

‎কুবি প্রতিনিধি 
‎কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
‎সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিন্ডিকেট ‎সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোহাম্মদ জাকির হোসেনের ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে এবং গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে দাখিল করা তার যোগদানপত্র গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল থাকবে।
‎বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়। প্রথম অভিযোগটি হলো গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মাননীয় উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ। দ্বিতীয় অভিযোগটি হলো গত ১৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জেলহাজত থেকে জামিন পাওয়ার পর বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে টানা ৬০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকা।
‎এ দুটি অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভা তার সাময়িক বরখাস্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
‎এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
‎রেজিস্ট্রার ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিনি নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন এটি প্রমাণিত হয়েছে। সে সময় তাঁকে সতর্কীকরণ চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষককে ‘চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেব’ এমন মন্তব্যের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া তিনি গ্রেপ্তার হয়ে খালাস পাওয়ার পর ৬০ দিনের বেশি সময় বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি সদর মেডিকেলের একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দেন। পরবর্তীতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটি গঠন করা হলে তারা দেখতে পায় যে উক্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট সঠিক ছিল না। তিনি যে ৬০ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন, তা পলায়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।’
‎তিনি আরও বলেন, ‘সিন্ডিকেট সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।’
‎প্রসঙ্গত, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জনপ্রিয়

বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে বিএনপি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শতাধিক

কুবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাকিরের সাময়িক বরখাস্ত বহাল; ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা 

প্রকাশের সময় : ১১:১৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
‎কুবি প্রতিনিধি 
‎কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিভাগীয় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
‎সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিন্ডিকেট ‎সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মোহাম্মদ জাকির হোসেনের ক্যাম্পাসে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে এবং গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে দাখিল করা তার যোগদানপত্র গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ বহাল থাকবে।
‎বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আনা হয়। প্রথম অভিযোগটি হলো গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মাননীয় উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ। দ্বিতীয় অভিযোগটি হলো গত ১৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে জেলহাজত থেকে জামিন পাওয়ার পর বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে টানা ৬০ দিনের বেশি অনুপস্থিত থাকা।
‎এ দুটি অভিযোগের বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগগুলো সত্য প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট সভা তার সাময়িক বরখাস্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
‎এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
‎রেজিস্ট্রার ( অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘তিনি নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছেন এটি প্রমাণিত হয়েছে। সে সময় তাঁকে সতর্কীকরণ চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষককে ‘চড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেব’ এমন মন্তব্যের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া তিনি গ্রেপ্তার হয়ে খালাস পাওয়ার পর ৬০ দিনের বেশি সময় বিনানুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি সদর মেডিকেলের একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট জমা দেন। পরবর্তীতে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটি গঠন করা হলে তারা দেখতে পায় যে উক্ত মেডিকেল সার্টিফিকেট সঠিক ছিল না। তিনি যে ৬০ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন, তা পলায়ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।’
‎তিনি আরও বলেন, ‘সিন্ডিকেট সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।’
‎প্রসঙ্গত, চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।