রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুনের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে  ২৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি 
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ধই জলমহাল নিয়ে সদর উপজেলা যুবলীগের নেতা এবং স্থানীয় প্রতিবাদী যুবক আব্দুল আলিম তালুকদার খুনের ঘটনায় বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনসহ ২৬জনকে আসামী করে নিহতের মাতা গোলাপজান বিবি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত আলীমের ৮ মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী রয়েছে। এদিকে খুনের ঘটনায় জরিত থাকার অভিযোগে ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ গ্রামের বড়ধই জলমহালে।
মামলা ও স্থানীয় সুত্র জানায়,গত বৃহস্পতিবার রাতে বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের ভাড়াটিয়া লোক ফারুক মিয়া মোবাইল ফোনে নিহত আলিমকে মাছ দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় জলমহালের খলায়। সেখানে ইজারাদার মনোয়ার হোসেন,হাজী হেলাল, মুনিমের নির্দেশে এলোপাতাড়িভাবে আলীমকে পিঠিয়ে গুরুতর জখম করে। তার শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে চাইলে ইজারাদারের লোকজন তাতে বাধা দেয়। পরে নিহত আলিমের মাতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের কাছে আকুতি মিনতি করে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন এবং একটি সিএনজি যোগে তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে ইজারাদারদের প্রভাবে সেখানে চিকিৎসা করতে দেয়নি। পরবর্তীতে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার আলিমের শারীরিক অবস্থা আশংখাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওসমানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে আলিম মারা যায়।
শনিবার বিকালে আলিমের লাশের ময়না তদন্ত শেষে সুনামগঞ্জ সদর থানার সম্মুখে নিয়ে আসলে এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় এবং এলাকার বিক্ষুদ্ধ যুবকরা আলীম হত্যার সাথে জড়িতদের ফাঁসি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আলিমের জায়গা জোরপূর্বক ইজারাদারের লোকজন দখল করে নেয় এবং আলীর রেকডীয় ডোবা থেকে আবারও মাছ ধরতে নিষেধ করায় এ ঘটনার সৃষ্টি হয়।
নিহত আলীম তালুকদারের ভাবী ফুলবানু জানান,আমার দেবর আমাকে বলেছে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের অর্ডারে তাকে ধরে নিয়ে খলায় মারপিট করে। মনোয়ার সাব নিজে বুটপায়ে তার উপরে ওঠে লাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত করেন। আমার দেবরের খুনি ইজারাদার নিজেই। আমরা তার ফাসি চাই। তারা মারার পর চিকিৎসা নিতেও দেয়নি। মাইরের চুটে আলীমের মুখে ও প্রশ্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমরা আলিম হত্যার ঘটনায় খুনিদের ফাঁসি চাই।
বড়দই বিলের ইজারাদার মনোয়ার হোসেন জানান,আমরা চারদিন আগে বিল ফিশিং করে চলে এসেছি। এসব ঘটনায় আমরা জড়িত নই। আমরা কিছুই জানি না।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, দুইদিন আগে যুবক আলীমকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়েছিল। ভেতরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শুক্রবার রাতে আহত আলীম ওসমানী হাসপাতালে মারা যায়। ২৬জনকে আসামী করে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত তাদেরকে ছাড় দেয়া  হবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

ইরানে দৌড় প্রতিযোগিতায় হিজাব আইন লঙ্ঘন, ২ আয়োজক গ্রেপ্তার

খুনের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে  ২৬ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের

প্রকাশের সময় : ০৯:১৬:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ মার্চ ২০২০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি 
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ধই জলমহাল নিয়ে সদর উপজেলা যুবলীগের নেতা এবং স্থানীয় প্রতিবাদী যুবক আব্দুল আলিম তালুকদার খুনের ঘটনায় বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনসহ ২৬জনকে আসামী করে নিহতের মাতা গোলাপজান বিবি বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত আলীমের ৮ মাসের অন্তসত্বা স্ত্রী রয়েছে। এদিকে খুনের ঘটনায় জরিত থাকার অভিযোগে ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ গ্রামের বড়ধই জলমহালে।
মামলা ও স্থানীয় সুত্র জানায়,গত বৃহস্পতিবার রাতে বড়ধই জলমহালের ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের ভাড়াটিয়া লোক ফারুক মিয়া মোবাইল ফোনে নিহত আলিমকে মাছ দেয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে যায় জলমহালের খলায়। সেখানে ইজারাদার মনোয়ার হোসেন,হাজী হেলাল, মুনিমের নির্দেশে এলোপাতাড়িভাবে আলীমকে পিঠিয়ে গুরুতর জখম করে। তার শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসতে চাইলে ইজারাদারের লোকজন তাতে বাধা দেয়। পরে নিহত আলিমের মাতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের কাছে আকুতি মিনতি করে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন এবং একটি সিএনজি যোগে তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে ইজারাদারদের প্রভাবে সেখানে চিকিৎসা করতে দেয়নি। পরবর্তীতে জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাক্তার আলিমের শারীরিক অবস্থা আশংখাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ওসমানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার রাতে আলিম মারা যায়।
শনিবার বিকালে আলিমের লাশের ময়না তদন্ত শেষে সুনামগঞ্জ সদর থানার সম্মুখে নিয়ে আসলে এক হৃদয় বিধারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় এবং এলাকার বিক্ষুদ্ধ যুবকরা আলীম হত্যার সাথে জড়িতদের ফাঁসি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
আলিমের জায়গা জোরপূর্বক ইজারাদারের লোকজন দখল করে নেয় এবং আলীর রেকডীয় ডোবা থেকে আবারও মাছ ধরতে নিষেধ করায় এ ঘটনার সৃষ্টি হয়।
নিহত আলীম তালুকদারের ভাবী ফুলবানু জানান,আমার দেবর আমাকে বলেছে ইজারাদার মনোয়ার হোসেনের অর্ডারে তাকে ধরে নিয়ে খলায় মারপিট করে। মনোয়ার সাব নিজে বুটপায়ে তার উপরে ওঠে লাতি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত করেন। আমার দেবরের খুনি ইজারাদার নিজেই। আমরা তার ফাসি চাই। তারা মারার পর চিকিৎসা নিতেও দেয়নি। মাইরের চুটে আলীমের মুখে ও প্রশ্রাবের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। আমরা আলিম হত্যার ঘটনায় খুনিদের ফাঁসি চাই।
বড়দই বিলের ইজারাদার মনোয়ার হোসেন জানান,আমরা চারদিন আগে বিল ফিশিং করে চলে এসেছি। এসব ঘটনায় আমরা জড়িত নই। আমরা কিছুই জানি না।
সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, দুইদিন আগে যুবক আলীমকে ধরে এনে নির্যাতন করা হয়েছিল। ভেতরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শুক্রবার রাতে আহত আলীম ওসমানী হাসপাতালে মারা যায়। ২৬জনকে আসামী করে থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। ঘটনার সাথে যে বা যারা জড়িত তাদেরকে ছাড় দেয়া  হবে না।