শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হরিণাকুণ্ডুতে বোরো চাষে মিলছেনা জিকে সেচের পানি

বড় ক্যানাল

হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুসহ আশেপাশের কয়েকগ্রামের কৃষকের ক্ষেতে সেচ সুবিধার জন্য বাস্তবায়ন করা হয়েছিল গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জিকে)। প্রতিবছর মৌসুমের শুরু থেকেই পানি পাওয়ার কথা থাকলেও চলতি বোরো মৌসুমের (২০২৪) প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও মিলছে না পানি। এর কারণ হিসেবে পাম্প নষ্টের কথা বলছে পাউবো।

এখনও পানির দেখা মেলেনি কবে নাগাদ মিলবে জিকে সেচের পানি তা এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত । তাই সময়মতো বোরো চাষের জন্য বাধ্য হয়ে বাজার থেকে ডিজেল কিনে সেচের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে এবং বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে পাম্প মালিকদের, এমনটাই বলছিলেন উপজেলার রামনগর গ্রামের এক কৃষক।

এভাবে ভরা মৌসুমে যদি জিকে পানি সরবরাহ না করে, তাহলে ফলন কম হবে। এতে কৃষক লাভের থেকে লোকসানে পড়বেন এমনটাই বলছিলেন এক কৃষি উদ্যোক্তা।
চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৯ হাজার ৩৬৬ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মধ্য জানুয়ারিতে মৌসুম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ২৭ হাজার ৪৮০ জন কৃষক আবাদে যুক্ত। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, এমনই তথ্য পাওয়া যায় হরিণাকুণ্ডু কৃষি অফিস থেকে ।
সরেজমিনে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে ধান রোপনের পরবর্তী পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মনিরুল নামের এক কৃষক “দৈনিক সবুজ বাংলাকে” জানান, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করছেন। জিকের পানি না পেয়ে ব্যক্তি মালিকানার পাম্প থেকে সেচ দিচ্ছেন। এতে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা বেশী খরচ হচ্ছে। জিকের পানি নালার মাধ্যমে নিলে বিঘায় ব্যয় হয় মাত্র ৩০০ টাকা মাত্র । এতে ফলনও ভালো হয়। কিন্তু এ পানি না পাওয়ায় তিনি এবার উৎপাদন ব্যয় ওঠা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সেচ খরচ বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে, কল্লোল নামে এক পাম্প মালিক বলেন, রাতদিন ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন চলে। শ্যালো মেশিনে চাষ করা অনেক ব্যায়বহুল। পানি বিক্রি করে যে টাকা আসে, তাতে সামান্য লাভ থাকে তারপরও যন্ত্রপাতির যে দাম তাতে আমাদের লোকসান হচ্ছে ।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন মৌসুমে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক ধান, পাটসহ নানা ধরনের সবজি আবাদের জন্য সেচ দেন গঙ্গা- কপোতাক্ষ প্রকল্পের পানি । তবে দুটি পাম্প নষ্ট থাকায় এবার শুধু কুষ্টিয়া অঞ্চলে একটি পাম্পের পানি দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলা এবং মাগুরায় কৃষকরা পানি পাচ্ছেনা।

উপজেলার সাতব্রীজ এলাকায় প্রধান খালটি আলমডাঙ্গা সেচ খাল নামে পরিচিত পাউবো ভেড়ামারার পাম্প থেকে এ খালে পানি সরবরাহ করে । এই সাতব্রীজ থেকে পাঁচটি শাখা খালের মাধ্যমে কৃষকের জমিতে সেচের জন্য পানি সরবরাহ করা হয়। তবে এবার পানি না দেওয়ায় শাখা খাল গুলো পানি শূন্য অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, শাহীন ইসলাম বলেন, পাউবো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সেচের পানি পাওয়া যাবে। আর নষ্ট পাম্প দুটি মেরামতের চেষ্টা চলছে।ঝিনাইদহ পাউবোর উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

জনপ্রিয়

মতলব উত্তরে ‘চাঁদপুর টাইমসের’ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

হরিণাকুণ্ডুতে বোরো চাষে মিলছেনা জিকে সেচের পানি

প্রকাশের সময় : ০৯:৩০:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

হরিণাকুন্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুসহ আশেপাশের কয়েকগ্রামের কৃষকের ক্ষেতে সেচ সুবিধার জন্য বাস্তবায়ন করা হয়েছিল গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প (জিকে)। প্রতিবছর মৌসুমের শুরু থেকেই পানি পাওয়ার কথা থাকলেও চলতি বোরো মৌসুমের (২০২৪) প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও মিলছে না পানি। এর কারণ হিসেবে পাম্প নষ্টের কথা বলছে পাউবো।

এখনও পানির দেখা মেলেনি কবে নাগাদ মিলবে জিকে সেচের পানি তা এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত । তাই সময়মতো বোরো চাষের জন্য বাধ্য হয়ে বাজার থেকে ডিজেল কিনে সেচের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে এবং বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে পাম্প মালিকদের, এমনটাই বলছিলেন উপজেলার রামনগর গ্রামের এক কৃষক।

এভাবে ভরা মৌসুমে যদি জিকে পানি সরবরাহ না করে, তাহলে ফলন কম হবে। এতে কৃষক লাভের থেকে লোকসানে পড়বেন এমনটাই বলছিলেন এক কৃষি উদ্যোক্তা।
চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ৯ হাজার ৩৬৬ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। মধ্য জানুয়ারিতে মৌসুম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৯ হাজার ১৬০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। ২৭ হাজার ৪৮০ জন কৃষক আবাদে যুক্ত। এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে, এমনই তথ্য পাওয়া যায় হরিণাকুণ্ডু কৃষি অফিস থেকে ।
সরেজমিনে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে মাঠে ধান রোপনের পরবর্তী পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। মনিরুল নামের এক কৃষক “দৈনিক সবুজ বাংলাকে” জানান, এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করছেন। জিকের পানি না পেয়ে ব্যক্তি মালিকানার পাম্প থেকে সেচ দিচ্ছেন। এতে বিঘাপ্রতি ১০-১২ হাজার টাকা বেশী খরচ হচ্ছে। জিকের পানি নালার মাধ্যমে নিলে বিঘায় ব্যয় হয় মাত্র ৩০০ টাকা মাত্র । এতে ফলনও ভালো হয়। কিন্তু এ পানি না পাওয়ায় তিনি এবার উৎপাদন ব্যয় ওঠা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।

সেচ খরচ বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে, কল্লোল নামে এক পাম্প মালিক বলেন, রাতদিন ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন চলে। শ্যালো মেশিনে চাষ করা অনেক ব্যায়বহুল। পানি বিক্রি করে যে টাকা আসে, তাতে সামান্য লাভ থাকে তারপরও যন্ত্রপাতির যে দাম তাতে আমাদের লোকসান হচ্ছে ।

পাউবোর তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন মৌসুমে উপজেলার হাজার হাজার কৃষক ধান, পাটসহ নানা ধরনের সবজি আবাদের জন্য সেচ দেন গঙ্গা- কপোতাক্ষ প্রকল্পের পানি । তবে দুটি পাম্প নষ্ট থাকায় এবার শুধু কুষ্টিয়া অঞ্চলে একটি পাম্পের পানি দেওয়া হচ্ছে। ফলে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলা এবং মাগুরায় কৃষকরা পানি পাচ্ছেনা।

উপজেলার সাতব্রীজ এলাকায় প্রধান খালটি আলমডাঙ্গা সেচ খাল নামে পরিচিত পাউবো ভেড়ামারার পাম্প থেকে এ খালে পানি সরবরাহ করে । এই সাতব্রীজ থেকে পাঁচটি শাখা খালের মাধ্যমে কৃষকের জমিতে সেচের জন্য পানি সরবরাহ করা হয়। তবে এবার পানি না দেওয়ায় শাখা খাল গুলো পানি শূন্য অবস্থায় আছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো, শাহীন ইসলাম বলেন, পাউবো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সেচের পানি পাওয়া যাবে। আর নষ্ট পাম্প দুটি মেরামতের চেষ্টা চলছে।ঝিনাইদহ পাউবোর উপপ্রধান সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালেব বলছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।