শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত

ছবি-সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার দায়ে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণপিটুনির শিকার হয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়।

গণপিটুনিতে নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তার বাড়ি নগরীর মতিহার থানার বুধপাড়া এলাকায়।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাবি জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার বাম পা মারাত্মক জখম হয়। তার হাতের রগও কেটে দেওয়া হয়েছিল। একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা ওই হামলা চালিয়েছিল বলে ওই সময় তার পক্ষে অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর প্রাণ গেল তার।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার মধ্যরাতে নগরীর বিনোদপুর বাজার এলাকায় আব্দুল্লাহ আল মাসুদ গণপিটুনির শিকার হন। এরপর তাকে মতিহার থানায় সোপর্দ করা হয়। তবে ৫ আগস্টের ঘটনায় ওই থানায় কোনো মামলা না থাকায় তাকে বোয়ালিয়া থানায় নেওয়া হয়। কিন্তু গণপিটুনির ঘটনায় গুরুতর আহত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

একটি পা হারানোর পর আব্দুল্লাহ আল মাসুদ প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাফেরা করতেন। গণপিটুনির সময় তার অন্য পাও ভেঙে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে চাকরি চেয়ে ২০২২ সালের শেষ দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের স্টোর অফিসার পদে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২২ ডিসেম্বর তিনি চাকরিতে যোগ দেন। আর ওইদিন থেকে তিনি এ পদেই চাকরি করতেন।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে বিনোদপুরে মারধর করা হয়েছিল। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার, পরে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যান। গুরুতর আহত দেখে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

জনপ্রিয়

যশোরে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মানববন্ধন

গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত

প্রকাশের সময় : ১২:০৪:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার দায়ে গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল নিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণপিটুনির শিকার হয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়।

গণপিটুনিতে নিহত আব্দুল্লাহ আল মাসুদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য। তার বাড়ি নগরীর মতিহার থানার বুধপাড়া এলাকায়।

এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাবি জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং তার বাম পা মারাত্মক জখম হয়। তার হাতের রগও কেটে দেওয়া হয়েছিল। একটি ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা ওই হামলা চালিয়েছিল বলে ওই সময় তার পক্ষে অভিযোগ করা হয়েছিল। ওই ঘটনার প্রায় ১০ বছর পর প্রাণ গেল তার।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শনিবার মধ্যরাতে নগরীর বিনোদপুর বাজার এলাকায় আব্দুল্লাহ আল মাসুদ গণপিটুনির শিকার হন। এরপর তাকে মতিহার থানায় সোপর্দ করা হয়। তবে ৫ আগস্টের ঘটনায় ওই থানায় কোনো মামলা না থাকায় তাকে বোয়ালিয়া থানায় নেওয়া হয়। কিন্তু গণপিটুনির ঘটনায় গুরুতর আহত ছিলেন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

একটি পা হারানোর পর আব্দুল্লাহ আল মাসুদ প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাফেরা করতেন। গণপিটুনির সময় তার অন্য পাও ভেঙে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর নিজের দুর্দশার কথা জানিয়ে চাকরি চেয়ে ২০২২ সালের শেষ দিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে তাকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের স্টোর অফিসার পদে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২২ ডিসেম্বর তিনি চাকরিতে যোগ দেন। আর ওইদিন থেকে তিনি এ পদেই চাকরি করতেন।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ বলেন, আব্দুল্লাহ আল মাসুদকে বিনোদপুরে মারধর করা হয়েছিল। এরপর একদল শিক্ষার্থী তাকে প্রথমে মতিহার, পরে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যান। গুরুতর আহত দেখে তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, নিহতের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।