
আওয়ামী তাঁতী লীগের কেরানীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সভাপতি ও সদ্য বিএনপিতে যোগদানকারী ভূমিদস্যু মোল্লা ফারুকের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগরে অবস্থিত নিজামুদ্দিন ওয়াকফ স্টেট এর মাদ্রাসা মসজিদ মার্কেটের জায়গা দখলের অভিযোগ করেছে মার্কেটের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী। মাদ্রাসা মসজিদ মার্কেট যা এলাকায় মুন্সি মার্কেট নামে পরিচিত। এই মার্কেটের বর্তমান সভাপতি সুলতান আহমদ খান সহ এলাকার শত শত ব্যবসায়ীরা বলেছেন তাদের এই ওয়াকফ স্টেট সম্পত্তির মার্কেটটি দখলের জন্য সাবেক কেরানীগঞ্জ উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি ও সদ্য বিএনপিতে যোগদান করা ফারুক ওরফে মোল্লা ফারুক চেষ্টা চালায় । বিগত কয়েকদিন ধরেই সে বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি সহ বিভিন্ন লোককে লাঞ্ছিত করার ঘটনাও ঘটেছে । আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদান কৃত এই মোল্লা ফারুক বেপরোয়া হয়ে এলাকার বিভিন্ন মানুষের জায়গা জমি ও মার্কেট দখলের চেষ্টা করছে তার বাহিনী নিয়ে । মূলত সে চাঁদা দাবি করার জন্যই এই কাজগুলো করছেন ।
জানা গেছে, ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় জোড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মাদ্রাসা মসজিদ মার্কেট এলাকায় যা মুন্সি মার্কেট নামে পরিচিত। এই মার্কেটটি আলহাজ্ব নিজামুদ্দিন আহমদ ওয়াক্তের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে। ছয় তলা বিল্ডিং কৃত এই মসজিদ মাদ্রাসাটির দোকান থেকে মার্কেটে অবস্থিত মসজিদের খরচ ও মাদ্রাসার তিন শতাধিক মাদ্রাসার ছাত্রদের খরচ ব্যয় করা হয়। এছাড়া এই মার্কেটের আই দিয়ে রাজবাড়ী উপজেলার গোয়ালন্দ এলাকার মাদ্রাসার ও খরচ বহন করা হয় । এই মাদ্রাসা মার্কেটের ব্যবসায়ী মোঃ আলম, আব্দুর রহিম, জামাল, করিম, শহিদুল, রিপন, জব্বার ,কাইয়ুম, মোশাররফ, মোস্তফা, আলি হোসেন, যুলু মিয়া, জুলফো মিয়া , নিজাম, শামীম, রেজাউল করিম সহ প্রায় অর্ধশত দোকানদার ও এলাকাবাসী এই প্রতিনিধিকে অভিযোগ করেছেন যে, দীর্ঘদিন যাবত এই মাদ্রাসার মার্কেটটি রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের নিবাসী হাজী নিজাম উদ্দিন স্টেট এর অধীনে সরকারি ওয়াক্ত স্টেট এর আইন মেনে এ মার্কেটটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ওয়াকফ স্টেট এর তালিকাভুক্ত এ সম্পত্তিটি একটি কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত করা হয়। মার্কেটের ভিতরে মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে। যেখানে মসজিদে জুমার নামাজ সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসল্লীরা । মাদ্রাসায় প্রায় তিন শতাধিক এতিম ও সাধারণ ছাত্ররা লেখাপড়া করেন । দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণভাবে এই এলাকায় এই মার্কেটের কর্মকান্ড স্টেট এর মাধ্যমে সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে ।
মসজিদ ও মাদ্রাসা মার্কেটের বর্তমান কমিটিতে আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খান রয়েছেন।
তিনি এলাকার সম্মানিত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি কমিটির মাধ্যমে এই মাদ্রাসা মার্কেট পরিচালনা করে আসছেন। হঠাৎ করেই স্থানীয় ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী নামে পরিচিত মোল্লা ফারুকের লোকজন বিভিন্ন সময়ে মার্কেটের লোকদেরকে নানাভাবে হয়রানি ও জমি দখলের চেষ্টা পরে আসছে।
এই মার্কেটের সভাপতি আলহাজ্ব সুলতান আহমদ খান বলেন, গত ২৬ নভেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার সকালে এলাকার ভূমিদস্যু নামে পরিচিত সাবেক তাঁতীলীগের কেরানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি ও সদ্য বিএনপিতে যোগদান করা চাঁদাবাজ ভূমিধস্য মোল্লা ফারুক ৪০-৫০ জন সন্ত্রাসীদের অস্ত্রশস্ত্র সহ মার্কেটটি দখলের উদ্দেশ্যে ফিতা দিয়ে মাপার চেষ্টা করে । এ সময় সাধারণ দোকানদাররা তাদেরকে এই মার্কেট মাপার কারণ জানতে চাইলে, তারা বলেন, এই মার্কেটে মেজবাহ উদ্দিন নামে তাদের জমি রয়েছে । সাধারণ দোকানদাররা সন্ত্রাসীদের কাছে জমির কাগজপত্র সহ বৈধ কাগজপত্র দাবি করলে তারা তা দেখাতে পারে নাই। এক পর্যায়ে সাধারণ ব্যবসায়ীরা এই ঘটনা অবলোকন করার সময় শত শত ব্যবসায়ী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া দিলে সন্ত্রাসীরা এলাকায় কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায় । এই মার্কেটের সভাপতি সুলতান আহমদ খান আর বলেন, সন্ত্রাসীরা মার্কেটটি ফিতা দিয়ে লাল দাগ দিয়ে যায় । কিন্তু এলাকাবাসী তাদেরকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয় । তিনি অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারসহ বিচার দাবি করেছেন ।
এদিকে কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার সহ বিচারের দাবি করেন।
তিনি বলেন সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু মোল্লা ফারুক ও তার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চায় । এই মোল্লা ফারুক কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সময় তাঁতী লীগের কেরানীগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ছিলেন। সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে সে নিজেকে পরিবর্তন করে সদ্য বিএনপিতে যোগদান করেছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন । তার বিএনপিতে যোগদানের সময় তার এলাকায় এক অনুষ্ঠানে মারামারি ও সংঘাতের সৃষ্টি হয় । এ সময় অনেকেই তার সন্ত্রাসী বাহিনীর আঘাতে আহত হয়েছিলেন । তার যোগদানের সময় এলাকায় ত্যাগী নেতাদের সাথে মোল্লা ফারুকের বাহিনীর সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে যা এলাকাবাসী জানে।
হঠাৎ করে এই পাতি নেতা বিএনপিতে যোগদান করে দখল আর চাঁদাবাজিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে । তার অত্যাচারে সাধারণ ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা চিন্তিত হয়ে পড়ছেন। তার বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া দাবি করছেন প্রশাসনের কাছে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা অতীতেও গুদারা ঘাটের এলাকায় সন্ত্রাসীদের কোন আস্তানা গড়তে দেয়নি এবারও সাধারণ ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে ।
এলাকার সাধারণ দোকানদার ও এলাকাবাসী বলেছেন ব্যবসায়ী এলাকায় যেই চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে আসবে তার বিরুদ্ধে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। যেকোনো মূল্যে সন্ত্রাসীদেরকে উচিত শিক্ষা দেবে এই এলাকার ব্যবসায়ীরা ।
চাঁদাবাজি ও দখলবাজির ঘটনায় গুদারহাট এলাকায় আতঙ্কিত অবস্থায় রয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
অবিলম্বে এই এলাকায় সেনাবাহিনীর সহ বিভিন্ন প্রশাসনের টহল নজরদারি জোরদার করার দাবি করেছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা ব্যুরো 







































