বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিম কী কোলেস্টেরলের জন্য খারাপ?

ছবি: সংগৃহীত

পুষ্টিকর খাবার ডিম নানাভাবেই খাওয়া হয়। এর মধ্যে ডিম ভাজা, অমলেট কিংবা ডিম পোচ একটু বেশিই পরিচিত। তবে কেউ কেউ আবার সেদ্ধ ডিম খেয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে কারও হাফ বা ফুল বয়েলড ডিম পছন্দ, আবার কারও স্ক্র্যাম্বলড এগ পছন্দ।

ডিম পছন্দ হলেও কোলেস্টেরল এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে অনেকেই ডিম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। ডিমের কুসুম খেতে চান না বলে শুধু সাদা অংশ খান। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার আশঙ্কা থেকেই এমন ভাবনা।

এ ব্যাপারে গবেষণা স্পষ্টতভাবেই জানিয়েছে, ডিমের কুসুম খেলে কখনো কোলেস্টেরল বাড়ে না। সংবাদমাধ্যম টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির বার্ষিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে উপস্থাপিত গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ১২টি করে ডিম খেয়েছেন, তাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা ডিম ছাড়া অন্য খাবার খাওয়া ব্যক্তিদের মতোই ছিল।

এ গবেষণায় হৃদরোগে আক্রান্ত বা এর ঝুঁকিতে থাকা ১৪০ ব্যক্তি অংশ নিয়েছিল। যাদের মধ্যে এলোমেলোবাবে সপ্তাহে এক ডজন বা এরও বেশি ডিম খেতে বলা হয়েছিল ৮০ জনকে, আবার দুটির কম খেতে বলা হয়েছিল ৬০ জনকে।

চার মাস ধরে চলা গবেষণায় ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গবেষকরা। এই সময় গবেষকরা প্রতিদিন ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের হৃদরোগের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো প্রতিকূল প্রভাব দেখতে পাননি। এমনকি ডিম বর্জনকারী ব্যক্তিদের তুলনায় সম্ভাব্য সুবিধার সংকেতও খেয়াল করেছেন বলে জানিয়েছেন নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান লেখক ও গবেষক ড. নিনা নাওরাবেশ। তিনি বলেন, সপ্তাহে ১২টি ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের কোলেস্টেরলের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ডিম খেয়েছেন তাদের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়েছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে যারা ছিলেন, তাদের ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) হ্রাস পেয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ফোর্টিফাইড ডিম খেতে বলেছিলেন গবেষকরা। এতে নিয়মিত ডিমের তুলনায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়োডিন এবং ভিটামিন ডি, বি, ই থাকে। আর স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। এই ডিম স্বাস্থ্যকর বলে জানিয়েছেন গবেষক ড. নিনা নাওরাবেশ।

এ গবেষক বলেন, বাজারে শক্তিশালী ডিম সচরাচর পাওয়া যায়। এসব ডিম সাধারণ ডিমের তুলনায় দাম বেশি। আর এই গবেষণাটি এখনো কোনো জার্নালে প্রকাশ হয়নি। এটি এগল্যান্ডস বেস্টর অর্থায়নে করা হয়েছিল।

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির পুষ্টির সদস্য ড. জেমস ও’কিফ বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ডিমকে অব্যাহতি দেয়। এ জন্য এই গবেষণার ফলাফল অন্যান্য গবেষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর নতুন গবেষণায় তিনি জড়িত না থাকলেও এটিকে বৈধ বলে স্বীকৃত দিয়েছেন।

কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে ডিমের প্রভাব নিয়ে তিনি বলেন, ডিম আসলে খলনায়ক নয়। এটি প্রোটিন ও পুষ্টির একটি স্বাস্থ্যকর উৎস। আপনি পরিমিত পরিমাণে ডিম খেতে পারেন।

জনপ্রিয়

ঝিকরগাছায় অস্ত্র ও ডাকাতি মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ডিম কী কোলেস্টেরলের জন্য খারাপ?

প্রকাশের সময় : ১২:১৫:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মার্চ ২০২৫

পুষ্টিকর খাবার ডিম নানাভাবেই খাওয়া হয়। এর মধ্যে ডিম ভাজা, অমলেট কিংবা ডিম পোচ একটু বেশিই পরিচিত। তবে কেউ কেউ আবার সেদ্ধ ডিম খেয়ে থাকেন। তাদের মধ্যে কারও হাফ বা ফুল বয়েলড ডিম পছন্দ, আবার কারও স্ক্র্যাম্বলড এগ পছন্দ।

ডিম পছন্দ হলেও কোলেস্টেরল এবং হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে অনেকেই ডিম থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। ডিমের কুসুম খেতে চান না বলে শুধু সাদা অংশ খান। স্বাস্থ্যজনিত সমস্যার আশঙ্কা থেকেই এমন ভাবনা।

এ ব্যাপারে গবেষণা স্পষ্টতভাবেই জানিয়েছে, ডিমের কুসুম খেলে কখনো কোলেস্টেরল বাড়ে না। সংবাদমাধ্যম টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির বার্ষিক বৈজ্ঞানিক অধিবেশনে উপস্থাপিত গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ১২টি করে ডিম খেয়েছেন, তাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা ডিম ছাড়া অন্য খাবার খাওয়া ব্যক্তিদের মতোই ছিল।

এ গবেষণায় হৃদরোগে আক্রান্ত বা এর ঝুঁকিতে থাকা ১৪০ ব্যক্তি অংশ নিয়েছিল। যাদের মধ্যে এলোমেলোবাবে সপ্তাহে এক ডজন বা এরও বেশি ডিম খেতে বলা হয়েছিল ৮০ জনকে, আবার দুটির কম খেতে বলা হয়েছিল ৬০ জনকে।

চার মাস ধরে চলা গবেষণায় ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণ করেছিলেন গবেষকরা। এই সময় গবেষকরা প্রতিদিন ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের হৃদরোগের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো প্রতিকূল প্রভাব দেখতে পাননি। এমনকি ডিম বর্জনকারী ব্যক্তিদের তুলনায় সম্ভাব্য সুবিধার সংকেতও খেয়াল করেছেন বলে জানিয়েছেন নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ক্লিনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান লেখক ও গবেষক ড. নিনা নাওরাবেশ। তিনি বলেন, সপ্তাহে ১২টি ডিম খাওয়া ব্যক্তিদের কোলেস্টেরলের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ডিম খেয়েছেন তাদের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়েছে। ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে যারা ছিলেন, তাদের ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বৃদ্ধি পেয়েছে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) হ্রাস পেয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ফোর্টিফাইড ডিম খেতে বলেছিলেন গবেষকরা। এতে নিয়মিত ডিমের তুলনায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়োডিন এবং ভিটামিন ডি, বি, ই থাকে। আর স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম থাকে। এই ডিম স্বাস্থ্যকর বলে জানিয়েছেন গবেষক ড. নিনা নাওরাবেশ।

এ গবেষক বলেন, বাজারে শক্তিশালী ডিম সচরাচর পাওয়া যায়। এসব ডিম সাধারণ ডিমের তুলনায় দাম বেশি। আর এই গবেষণাটি এখনো কোনো জার্নালে প্রকাশ হয়নি। এটি এগল্যান্ডস বেস্টর অর্থায়নে করা হয়েছিল।

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির পুষ্টির সদস্য ড. জেমস ও’কিফ বলেন, সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো ডিমকে অব্যাহতি দেয়। এ জন্য এই গবেষণার ফলাফল অন্যান্য গবেষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আর নতুন গবেষণায় তিনি জড়িত না থাকলেও এটিকে বৈধ বলে স্বীকৃত দিয়েছেন।

কোলেস্টেরলের ক্ষেত্রে ডিমের প্রভাব নিয়ে তিনি বলেন, ডিম আসলে খলনায়ক নয়। এটি প্রোটিন ও পুষ্টির একটি স্বাস্থ্যকর উৎস। আপনি পরিমিত পরিমাণে ডিম খেতে পারেন।