
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, প্রবাসীদের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদেরকে রেমিট্যান্সযোদ্ধা বলবেন আর নাগরিকত্বের প্রথম অধিকার ভোট দিতে দিবেন না এটা হবে না। আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেই ভোট তারা স্বচ্ছভাবে এবং স্বাচ্ছন্দ্য ভাবে দিতে পারে দেশে কিংবা বিদেশে থেকে তা নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার (৯ই জুন) মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে বড়লেখা বাজারে ঈদ পূর্ণমীলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন তিনি।
ডাঃ শফিক বলেন, সাড়ে ১৫ বছর যারা জাতির উপর জুলুম করলো এখনও তাঁরা তাঁদের কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। মাঝেমধ্যে তারা মাথা উঁচু করে, বিভিন্ন কথা বার্তা বলে, তসনস করে দাও এসব বলে। এগুলোর মাধ্যমে জাতিকে অস্থির করতে চায়, আড়াই বছরের শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত খুন করলো, এতো কিছু করার পর ও তাদের অনুশোচনাবোধ কাজ করে করে না, জাতির কাছে মাফ চাইবে না, যা করেছে জাতির কাছে দিবালোকের মতো স্পষ্ট তার পরও লজ্জিত হয়নি, এগুলোর জন্য তাদের অনুতপ্ত হওয়া উচিৎ। সেইগুলা না করে তারা জাতিকে অস্থির করতে চায়।
জামায়াত আমীর যুবকদের উদ্দেশ্য বলেন, আমি যুবকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই তোমাদের নেতৃত্বের হাত ধরে বাংলাদেশ পরিবর্তন হয়েছে। সাড়ে ১৫ বছর জালিমদের যাতাকলে অতিষ্ঠ হয়েছি, প্রতিবাদ করেছি, আন্দোলন করেছি, ফ্যাসিবাদীদের আমরা বিদায় করতে পারি নাই। যুবকরাই সফল হয়ছো। আমরা একটা বিশৃঙ্খল বাংলাদেশ দেখতে চাইনা, মানবিক বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই। আগামী দিনে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে তোমরাই আরো সাহসী ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর তোমরা ভোট দিতে পারো নাই। এখনও যাদের বয়স হয় নাই। কিন্তু ভোটের আগে যাদের বয়স হয়ে যাবে। সরকারের কাছে অনুরোধ এই যুবকরাই লড়াই করে অধিকার ফিরিয়ে এনেছে। যাদের বয়স নির্বাচনের সিডিউলের আগে ১৮ বছর হয়ে যাবে তাদের ভোটাধিকার অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এবারের ভোটে কোন কালো শক্তি তাদের হাত দিতে আসে, তাহলে জুলাইতে যেভাবে কালো শক্তিদের বিতাড়িত করা হয়েছে সেইভাবে এখনও মোকাবিলা করবে। এবারের ভোটের লড়াইয়ে যুবকদের নেতৃত্বে হবে।
নির্বাচন নিয়ে জামায়াত আমীর বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চাই। তিনি ইতিমধ্যে বলেছেন আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যখানে নির্বাচন দিবেন। তিনি যেন জাতিকে দেয়া তার ওয়াদা রক্ষা করেন। আমরা বলেছিলাম নির্বাচন রমজানের আগে হলে ভালো হয়। একান্ত কোন কারণে নির্বাচন পেছালে সেটি অবশ্যই এপ্রিল মাস অতিক্রম করা উচিত নয়। এই নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, জনগণ যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে জামায়াত আমীর বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। এই শিক্ষা নৈতিক চরিত্রের অধিকারী বানায় না। শিক্ষা অর্জনের পর ফাইল নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে চাকরি পাওয়া যায়না। এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে বদলে দিতে হবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে প্রথমে শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। শিক্ষা অর্জন করার পর নিজেই চাকরি করবে চয়েজ করবে। শিক্ষা অর্জন করে একজন লোকও বেকার থাকবে না।
বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমীর এমদাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আব্দুল বাছিতের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, সেক্রেটারি মোঃ ইয়ামীর আলী, মৌলভীবাজার-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ঢাকা পল্টন থানা আমীর শাহিন আহমদ খাঁন, ড. আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু, সিলেট মহানগর শিবিরের সভাপতি শরীফ মাহমুদ, খেলাফত মজলিস উপজেলা সভাপতি মাওলানা এনামুল হক, মৌলভীবাজার শহর শিবিরের সভাপতি তারেক আজিজ, জেলা সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাবেক ছাত্রনেতা ডক্টর আব্দুল ওয়াদুদ টিপু, উপজেলা নায়েবে আমীর আব্দুল্লাহ আল মাফুজ সুমন ও হুমায়ুন কবির সাজু প্রমুখ।
ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষে আমিরে জামায়াত বড়লেখা উপজেলায় ঈদের দিন কোরবানির গোস্ত বিতরণ করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত দুই ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে পিতা আলাউদ্দিন আলাই মিয়াকে সান্তনা দেন ও উপস্থিত সকলকে নিয়ে তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন।
তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: 







































