সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন সফল রাজনীতিবিদ ছিলেন: হুমাম কাদের 

এম. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমাম কাদের চৌধুরী বলেছেন ‘ভোটের আগে অনেকে অনেক ধরণের ওয়াদা করে ‘হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা’ তবে ভোট শেষ হবার পর সব ভুলে যায়।’
১৬ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দ. রাজানগরের ফুলবাগিচা আজিজুল উলূম মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার বাবার উদ্দেশ্য ছিল রাঙ্গুনিয়ার যেই মাদ্রাসা গুলো ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে ওগুলোর পাশে দাঁড়ানো। আলহামদুলিল্লাহ, যদ্দূর পেরেছে, যদ্দূর আল্লাহ হায়াত দিয়েছে একাজের সাথে জড়িত ছিল। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের দোয়ার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতির মধ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন সফল রাজনীতিবিদ হতে পেরেছে।’
হুমাম কাদের চৌধুরী বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে, নির্বাচনের সময় আপনারা যাকে সত্যি করে মনে করেন আপনার এলাকার উন্নয়নের সাথে জড়িত থাকবে, যাকে বিশ্বাস করেন যে একজন ভালো মানুষ এবং আপনাদের পরিবারের পাশে থাকবে। আমি অনুরোধ করবো আপনারা তাকে ভোট দিবেন। আমি মাদ্রাসার এই সভার মঞ্চে বসে ভোটের ভিক্ষা করবোনা। আমি এখানে এসে আরেকটি ভিক্ষা চেয়ে যাচ্ছি। ওটা হচ্ছে দোয়ার ভিক্ষা। আমার বাবা মরহুম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আমার জন্য অনেক সম্পদ রেখে যেতে পারেনি। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমার জন্য মানুষের দোয়া রেখে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন প্রায় ৯বছর আগে আমাকে এই জালিম সরকার গুম করেছিল, আয়না ঘরে ছিলাম ৭মাস। বহু নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তবে আমি জীবিত ফেরৎ আসতে পেরেছি, আমি সুস্থ থাকতে পেরেছি আপনাদের দোয়ার কারণে।
আমি যখন ফিরে আসি, আমার কাছে শত শত ছবি পাঠানো হয়। সেখানে এমাদ্রাসারও ছবি আছে। আমার মুরব্বিরা গোপনে এখানে আমার জন্য দোয়া পড়িয়েছিল। কারণ প্রকাশ্যে যদি দোয়া চাওয়া হতো, তখন হয়তো এই মাদ্রাসার ফান্ডিং বন্ধ হয়ে যেতো। এ মাদ্রাসায় যারা যারা কাজ করে, হয়তো তাদের আটক করা হতো।
তিনি বলেন এই পবিত্র মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সব গুলোর ওপর নজরধারী ছিল। কারণ তাদের মনেপ্রাণে একটা বিশ্বাস ছিল যে, যারা ঈমরানের সাথে চলাফেরা করে, তাদেরকে হয়তো কাবু করা অত সহজ হবেনা।
আপনাদের সামনে একটি বিষয় তুলে ধরতে চাই, এই জুলাই আন্দোলন সময় যারা বড় বড়, সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দিয়েছেন, তারা মাঠ গরম করার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু যারা মিছিলে ছিল, লড়াই করেছে, যারা বুক পেতে দাঁড়িয়েছিল, সবার মাথায় টুপি, গালে দাঁড়ি। এই ঈমানদার মুসল্লীদের কারণে আজকে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে বক্তব্য রাখতে পারছি। আশাকরি আপনারা সকলে আমার বাবাকেও মনে রাখবেন। যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন ঈমানদার মুসলমান ছিলেন।
আজকে আপনাদের কাছে আমি দু’টো জিনিস চাইব, ১. আমি এই ২২ নভেম্বর শনিবার কাদের নগর আব্বার জন্য একটা দোয়া মাহফিল করছি। কারণ ১০ বছর ধরে আব্বার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করার সুযোগ আমরা পাইনি। এবার আমরা আশা করেছি রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে যেখানে আব্বা দাফন হতে চেয়েছিলেন এখানে আমরা দোয়া মাহফিল করবো। দ্বিতীয়ত,আমি যেহেতু  রাজনীতির মাঠে নেমেছি, হয়তো আপনারা এখন মনে করছেন যে, রাস্তা অনেক সোজা হবে। এখানে তো আওয়ামী লীগ নেই, সেজন্য হয়তো জানের ভয় নেই। আমি আপনাদের দোয়া নিয়ে যাচ্ছি, কারণ এখনো অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার দলের বিরুদ্ধে।
নিজের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আমি যেন ঈমানের সাথে জীবিত থাকতে পারি এবং ঈমানের সাথে আমি যেন মৃত্যু বরণ করতে পারি আপনারা আমার জন্য সে দোয়া করবেন। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার চাওয়া পাওয়া নাই। আমার জানের ভিক্ষা আপনারা দোয়ায় চেয়েছিলেন আল্লাহ কাছে। আজকে আপনারা দোয়া করবেন, আমি যেন একজন সফল মুসলমান, সফল রাজনীতিবিদ হতে পারি।
রাজনীতিবিদদের দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বক্তব্যের রেশ টেনে হুমাম কাদের চৌধুরী বলেন, এখন অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ আপনাদের কাছে এসে বলবে, ‘আমি দিতে এসেছি, কিছু নিতে আসিনি’। আমাকে মাফ করে দিবেন, আমি নাটক করতে পারিনা। আপনাদের কাছ থেকে যখন আমার নেওয়ার ইচ্ছে হবে, খোলামেলা আপনাদেরকে বলবো। কারণ আপনারা সকলে আমার ঘরের মানুষ। আপনাদের যদি কিছু চাওয়ার থাকে, আমার বাড়ীতে চলে আসবেন, কারণ আমি আপনাদের আপন মানুষ। সম্পর্কটা এরকম হওয়া উচিত।
রাজনীতিবিদরা জনগণের চাকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতদিন ধরে আপনাদেরকে ও বাংলাদেশের মানুষকে শেখানো হয়েছে যে, ‘রাজনীতিবিদরা হলো মালিক, বাকি সবাই তাদের জন্য চাকরি করে! নাহ্ রাজনীতি যারা করে, তারা চাকরি করে, মালিক হচ্ছে জনগণ আপনারা’। আপনারা ঠিক করে দিবেন চাকরি কতদিন থাকবে আর কতদিন থাকবেনা। আশাকরি এই চাকরি দেয়ার সুযোগ যখন আসবে,  আপনাদের আমাকে দিবেন, আমি আপনাদের জন্য চাকরি করে কিছু সওয়াব কামানোর সুযোগ পাবো আমি।’
মাও. ইছহাকের সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নাছির উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা হুবাইব বিন তৈয়ব।
ক্যাপসন: রাঙ্গুনিয়ার ফুলবাগিচা আজিজুল উলূম মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখছেন হুমাম কাদের চৌধুরী।
জনপ্রিয়

শার্শার বাগআঁচড়ায় খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া-মাহফিল 

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন সফল রাজনীতিবিদ ছিলেন: হুমাম কাদের 

প্রকাশের সময় : ১০:০০:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
এম. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম-৭ রাঙ্গুনিয়া আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হুমাম কাদের চৌধুরী বলেছেন ‘ভোটের আগে অনেকে অনেক ধরণের ওয়াদা করে ‘হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা’ তবে ভোট শেষ হবার পর সব ভুলে যায়।’
১৬ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দ. রাজানগরের ফুলবাগিচা আজিজুল উলূম মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার বাবার উদ্দেশ্য ছিল রাঙ্গুনিয়ার যেই মাদ্রাসা গুলো ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে ওগুলোর পাশে দাঁড়ানো। আলহামদুলিল্লাহ, যদ্দূর পেরেছে, যদ্দূর আল্লাহ হায়াত দিয়েছে একাজের সাথে জড়িত ছিল। আমি বিশ্বাস করি আপনাদের দোয়ার কারণে বাংলাদেশের রাজনীতির মধ্যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন সফল রাজনীতিবিদ হতে পেরেছে।’
হুমাম কাদের চৌধুরী বলেন, সামনে নির্বাচন আসছে, নির্বাচনের সময় আপনারা যাকে সত্যি করে মনে করেন আপনার এলাকার উন্নয়নের সাথে জড়িত থাকবে, যাকে বিশ্বাস করেন যে একজন ভালো মানুষ এবং আপনাদের পরিবারের পাশে থাকবে। আমি অনুরোধ করবো আপনারা তাকে ভোট দিবেন। আমি মাদ্রাসার এই সভার মঞ্চে বসে ভোটের ভিক্ষা করবোনা। আমি এখানে এসে আরেকটি ভিক্ষা চেয়ে যাচ্ছি। ওটা হচ্ছে দোয়ার ভিক্ষা। আমার বাবা মরহুম সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী আমার জন্য অনেক সম্পদ রেখে যেতে পারেনি। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ আমার জন্য মানুষের দোয়া রেখে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন প্রায় ৯বছর আগে আমাকে এই জালিম সরকার গুম করেছিল, আয়না ঘরে ছিলাম ৭মাস। বহু নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তবে আমি জীবিত ফেরৎ আসতে পেরেছি, আমি সুস্থ থাকতে পেরেছি আপনাদের দোয়ার কারণে।
আমি যখন ফিরে আসি, আমার কাছে শত শত ছবি পাঠানো হয়। সেখানে এমাদ্রাসারও ছবি আছে। আমার মুরব্বিরা গোপনে এখানে আমার জন্য দোয়া পড়িয়েছিল। কারণ প্রকাশ্যে যদি দোয়া চাওয়া হতো, তখন হয়তো এই মাদ্রাসার ফান্ডিং বন্ধ হয়ে যেতো। এ মাদ্রাসায় যারা যারা কাজ করে, হয়তো তাদের আটক করা হতো।
তিনি বলেন এই পবিত্র মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল যতগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে, সব গুলোর ওপর নজরধারী ছিল। কারণ তাদের মনেপ্রাণে একটা বিশ্বাস ছিল যে, যারা ঈমরানের সাথে চলাফেরা করে, তাদেরকে হয়তো কাবু করা অত সহজ হবেনা।
আপনাদের সামনে একটি বিষয় তুলে ধরতে চাই, এই জুলাই আন্দোলন সময় যারা বড় বড়, সুন্দর সুন্দর বক্তব্য দিয়েছেন, তারা মাঠ গরম করার জন্য দিয়েছেন। কিন্তু যারা মিছিলে ছিল, লড়াই করেছে, যারা বুক পেতে দাঁড়িয়েছিল, সবার মাথায় টুপি, গালে দাঁড়ি। এই ঈমানদার মুসল্লীদের কারণে আজকে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে বক্তব্য রাখতে পারছি। আশাকরি আপনারা সকলে আমার বাবাকেও মনে রাখবেন। যে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী একজন ঈমানদার মুসলমান ছিলেন।
আজকে আপনাদের কাছে আমি দু’টো জিনিস চাইব, ১. আমি এই ২২ নভেম্বর শনিবার কাদের নগর আব্বার জন্য একটা দোয়া মাহফিল করছি। কারণ ১০ বছর ধরে আব্বার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করার সুযোগ আমরা পাইনি। এবার আমরা আশা করেছি রাঙ্গুনিয়ার মাটিতে যেখানে আব্বা দাফন হতে চেয়েছিলেন এখানে আমরা দোয়া মাহফিল করবো। দ্বিতীয়ত,আমি যেহেতু  রাজনীতির মাঠে নেমেছি, হয়তো আপনারা এখন মনে করছেন যে, রাস্তা অনেক সোজা হবে। এখানে তো আওয়ামী লীগ নেই, সেজন্য হয়তো জানের ভয় নেই। আমি আপনাদের দোয়া নিয়ে যাচ্ছি, কারণ এখনো অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, আমার ও পরিবারের বিরুদ্ধে, আমার দলের বিরুদ্ধে।
নিজের জন্য দোয়া চেয়ে তিনি বলেন, আমি যেন ঈমানের সাথে জীবিত থাকতে পারি এবং ঈমানের সাথে আমি যেন মৃত্যু বরণ করতে পারি আপনারা আমার জন্য সে দোয়া করবেন। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার চাওয়া পাওয়া নাই। আমার জানের ভিক্ষা আপনারা দোয়ায় চেয়েছিলেন আল্লাহ কাছে। আজকে আপনারা দোয়া করবেন, আমি যেন একজন সফল মুসলমান, সফল রাজনীতিবিদ হতে পারি।
রাজনীতিবিদদের দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বক্তব্যের রেশ টেনে হুমাম কাদের চৌধুরী বলেন, এখন অনেক বড় বড় রাজনীতিবিদ আপনাদের কাছে এসে বলবে, ‘আমি দিতে এসেছি, কিছু নিতে আসিনি’। আমাকে মাফ করে দিবেন, আমি নাটক করতে পারিনা। আপনাদের কাছ থেকে যখন আমার নেওয়ার ইচ্ছে হবে, খোলামেলা আপনাদেরকে বলবো। কারণ আপনারা সকলে আমার ঘরের মানুষ। আপনাদের যদি কিছু চাওয়ার থাকে, আমার বাড়ীতে চলে আসবেন, কারণ আমি আপনাদের আপন মানুষ। সম্পর্কটা এরকম হওয়া উচিত।
রাজনীতিবিদরা জনগণের চাকর উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতদিন ধরে আপনাদেরকে ও বাংলাদেশের মানুষকে শেখানো হয়েছে যে, ‘রাজনীতিবিদরা হলো মালিক, বাকি সবাই তাদের জন্য চাকরি করে! নাহ্ রাজনীতি যারা করে, তারা চাকরি করে, মালিক হচ্ছে জনগণ আপনারা’। আপনারা ঠিক করে দিবেন চাকরি কতদিন থাকবে আর কতদিন থাকবেনা। আশাকরি এই চাকরি দেয়ার সুযোগ যখন আসবে,  আপনাদের আমাকে দিবেন, আমি আপনাদের জন্য চাকরি করে কিছু সওয়াব কামানোর সুযোগ পাবো আমি।’
মাও. ইছহাকের সঞ্চালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নাছির উদ্দিন।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা হুবাইব বিন তৈয়ব।
ক্যাপসন: রাঙ্গুনিয়ার ফুলবাগিচা আজিজুল উলূম মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখছেন হুমাম কাদের চৌধুরী।