মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটার হননি তারেক রহমান, ফিরবেন মধ্য ডিসেম্বরে

ছবি: সংগৃহীত

দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রকাশিত কিছু খবর নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর— ‘‘ফ্রিল্যান্সিং ও এআই প্রশিক্ষণ/ ‘পলক–স্টাইল’ প্রকল্প এবার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে’’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে আগের আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রকল্প নেওয়া হয়। এসব প্রকল্পে নামমাত্র প্রশিক্ষণ, অদক্ষতা ও অনিয়মের অভিযোগ ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইসিটি বিভাগ নতুন প্রকল্প না নিলেও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দুটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে—একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ (৩০০ কোটি টাকা) এবং আরেকটি প্রাথমিক ও উন্নত এআই প্রশিক্ষণের প্রকল্প (৪৬ কোটি টাকা)।

 
বিশেষজ্ঞদের মত হলো, আলাদা এআই প্রকল্প নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না; ফ্রিল্যান্সিং প্রকল্পেই এআই অন্তর্ভুক্ত করা যেত। তাঁরা মনে করেন, এআই শেখার বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি এবং বড় প্রকল্প নেওয়ার আগে পাইলট কার্যক্রম প্রয়োজন। একই ধরনের একাধিক প্রকল্প নিলে অপচয়ের ঝুঁকি থাকে। অতীতে একই ধরনের প্রশিক্ষণ প্রকল্পের সুফল খুব বেশি দেখা যায়নি।
 
 

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বলছে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এআই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতেই নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তবে আগের প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন না করে নতুন প্রকল্প নেওয়ায় কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় এবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কতটা ফল দেবে, তা নিশ্চিত নয়।

ভোটার হননি তারেক রহমান, ফিরবেন মধ্য ডিসেম্বরে’ — সমকালের প্রথম পাতার খবরে শিরোনাম এটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনও ভোটার নন। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসের মধ্যভাগে দেশে ফিরে তিনি ভোটার হবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, বয়সসীমা পূরণ থাকা সত্ত্বেও কেউ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়লে যে কোনো সময় আবেদন করে ভোটার হতে পারেন। তবে যারা নতুন ভোটার হওয়ার সময়সীমা (৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর) মিস করেছেন, তাদের এখন আর অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। যেহেতু তারেক রহমান নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন, তাই মনোনয়নপত্র জমার আগেই তাঁকে ভোটার হতে হবে।

 ২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির সময় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান লন্ডনে ছিলেন। জোবাইদা রহমান সম্প্রতি দেশে ফিরে ভোটার হলেও তারেক এখনও আবেদন করেননি। ভোটার আইডির জন্য স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও আইরিশ বাধ্যতামূলক হওয়ায় দেশে ফিরেই তিনি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।
 
দলীয় নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে উৎসাহিত। ডিসেম্বরের শুরুতেই তফশিল ঘোষণার সম্ভাবনা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে তিনি মধ্য ডিসেম্বরে দেশে ফিরবেন। ফেরার আগে ওমরাহ পালনের বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে চার্টার্ড ফ্লাইটে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। তাঁর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকেও বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে, কেনা হয়েছে বুলেটপ্রুফ যানবাহন এবং আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের আবেদন করা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে বাধা নেই এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও দেওয়া হবে।
 
 
দেশে ফিরে তিনি গুলশান-২ অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন, যা সম্প্রতি খালেদা জিয়ার অনুকূলে নামজারি হয়েছে। বাড়িটি তাঁর উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সিসিটিভিসহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়েই তিনি অফিস করবেন।
 

দলীয় সূত্র বলছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন রাজধানীতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হবেন। দীর্ঘ ১৭ বছর লন্ডনে অবস্থানের পর তাঁর ফেরাকে দলটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখছে।

মানবজমিনের প্রথম পাতার খবর— ‘কড়াইল বস্তিতে কেন বারবার আগুন?

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড যেন নিত্যঘটনা। দুর্বল অবকাঠামো, অবৈধ গ্যাস–বিদ্যুৎ সংযোগ, পুরোনো তার, অসচেতনতা—বিভিন্ন তদন্তে এসবই আগুনের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। কেউ কেউ নাশকতার অভিযোগও তুলছেন। ফায়ার সার্ভিসের মতে, কড়াইলসহ বেশির ভাগ বস্তির আগুন বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকেই শুরু হয়।

 
মঙ্গলবার বিকালের আগুনে প্রায় দেড় হাজার ঘর ভস্মীভূত হয়। কয়েক হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার একের পর এক বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। যানজট ও সরু রাস্তাই ছিল আগুন নেভানোর বড় বাধা।
 
 
ফায়ার সার্ভিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যাদের ১৫ কার্যদিবসে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এর আগেও কড়াইলে বারবার আগুন লেগেছে— ফেব্রুয়ারি, গত বছরের মার্চ ও ডিসেম্বরেও বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রায় ৯০ একর জায়গায় ১০ হাজার ঘরের এই বস্তিতে দাহ্য পদার্থ, চোরাই সংযোগ ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
 
আগুনে সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মোসাম্মৎ বানুর মতো অসংখ্য মানুষ। কেউ পোড়া ঘরের ছাই থেকে শেষ সম্বল খুঁজছেন, কেউ ভাঙাড়ি বিক্রি করছেন। বিভিন্ন সংগঠন ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিচ্ছে, কিন্তু হাজারো পরিবারের সামনে এখন অনিশ্চয়তার অন্ধকার।

যুগান্তরের প্রথম পাতার প্রধান খবরের শিরোনাম— ‌‘নির্বাচিত সরকারের জন্য অশনিসংকেত/ লুটপাটে বিধ্বস্ত ব্যাংক খাত

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার লুটপাটের ভারে নাজুক হয়ে পড়েছে—বিশ্লেষকদের এমন মন্তব্যই এখন বেশি আলোচিত। ঋণ বিতরণে অনিয়ম, অবলোপন, নবায়ন ও দীর্ঘকাল আদালতে ঝুলে থাকা মামলার কারণে খেলাপি ঋণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। বর্তমানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫% এর বেশি। সরকার পরিবর্তনের পর গত এক বছরেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি।

 
এই লাগামহীন ঋণখেলাপির ধাক্কায় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি। প্রভিশন ঘাটতি তিন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে; কমছে ব্যাংকের আয়যোগ্য সম্পদ। ফলে অন্তত অর্ধেক ব্যাংক এখন কার্যত পঙ্গু অবস্থায়—আমানত ফেরত দেওয়া, নতুন আমানত আকর্ষণ করা– দুটোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
 

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪০% ছাড়িয়ে যেতে পারে। নতুন সরকারের সামনে তাই বড় চ্যালেঞ্জ—বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো। কিন্তু উচ্চ সুদের হার, পুঁজি সংকট এবং ব্যাংকের ওপর আস্থাহীনতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শীর্ষ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ সঙ্কট থেকে দেশ বের হতে পারবে না।

কালের কণ্ঠের শেষের পাতার খবর— ‌‘মব-সন্ত্রাসে ১০ মাসে নিহত ১৪০

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান বলছে, দেশে মব সহিংসতা ও গণপিটুনির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ২৫৬টি ঘটনায় ১৪০ জন নিহত ও ২৩১ জন আহত হয়েছে—এ সংখ্যা আগের দুই বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। আসক ও এইচআরএসএসের হিসাবে গত ১২ বছর ১০ মাসে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ, যার বেশির ভাগই ঢাকা বিভাগে। ছেলেধরা সন্দেহ, চুরি–ডাকাতির অভিযোগ, রাজনৈতিক বিভাজন ও ধর্ম অবমাননার গুজব—এসব নানা কারণে গণপিটুনি ঘটছে।

 
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের দুর্বল অবস্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিলম্বিত পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলের উদাসীনতায় মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। পুলিশ দুর্বল হলে বা নিষ্ক্রিয় থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, মব সহিংসতা রোধে কঠোর শাস্তির প্রয়োগ ও সরকারের দৃঢ় অবস্থানের বিকল্প নেই। চিকিৎসকদের মতে, এমন সহিংসতার মানসিক প্রভাব বিশেষত শিশুদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি রেখে যায়।
 
নির্বাচন সামনে এলে গণপিটুনির ঘটনা সাধারণত বাড়ে— পরিসংখ্যানে এমনই ধারা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মব সন্ত্রাস ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে। 
জনপ্রিয়

আকাশে ইতিহাস রচনা করলো তুরস্ক

ভোটার হননি তারেক রহমান, ফিরবেন মধ্য ডিসেম্বরে

প্রকাশের সময় : ১২:৪০:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫

দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় পত্রিকায় বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) প্রকাশিত কিছু খবর নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রথম আলোর প্রথম পাতার খবর— ‘‘ফ্রিল্যান্সিং ও এআই প্রশিক্ষণ/ ‘পলক–স্টাইল’ প্রকল্প এবার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে’’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তরুণদের আইটি দক্ষতা বাড়াতে আগের আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রকল্প নেওয়া হয়। এসব প্রকল্পে নামমাত্র প্রশিক্ষণ, অদক্ষতা ও অনিয়মের অভিযোগ ছিল। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আইসিটি বিভাগ নতুন প্রকল্প না নিলেও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দুটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে—একটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ (৩০০ কোটি টাকা) এবং আরেকটি প্রাথমিক ও উন্নত এআই প্রশিক্ষণের প্রকল্প (৪৬ কোটি টাকা)।

 
বিশেষজ্ঞদের মত হলো, আলাদা এআই প্রকল্প নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না; ফ্রিল্যান্সিং প্রকল্পেই এআই অন্তর্ভুক্ত করা যেত। তাঁরা মনে করেন, এআই শেখার বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদি এবং বড় প্রকল্প নেওয়ার আগে পাইলট কার্যক্রম প্রয়োজন। একই ধরনের একাধিক প্রকল্প নিলে অপচয়ের ঝুঁকি থাকে। অতীতে একই ধরনের প্রশিক্ষণ প্রকল্পের সুফল খুব বেশি দেখা যায়নি।
 
 

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বলছে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এআই দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতেই নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। তবে আগের প্রকল্পগুলোর মূল্যায়ন না করে নতুন প্রকল্প নেওয়ায় কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিজ্ঞতা ভালো না হওয়ায় এবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কতটা ফল দেবে, তা নিশ্চিত নয়।

ভোটার হননি তারেক রহমান, ফিরবেন মধ্য ডিসেম্বরে’ — সমকালের প্রথম পাতার খবরে শিরোনাম এটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনও ভোটার নন। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসের মধ্যভাগে দেশে ফিরে তিনি ভোটার হবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানায়, বয়সসীমা পূরণ থাকা সত্ত্বেও কেউ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়লে যে কোনো সময় আবেদন করে ভোটার হতে পারেন। তবে যারা নতুন ভোটার হওয়ার সময়সীমা (৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর) মিস করেছেন, তাদের এখন আর অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। যেহেতু তারেক রহমান নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন, তাই মনোনয়নপত্র জমার আগেই তাঁকে ভোটার হতে হবে।

 ২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা তৈরির সময় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবাইদা রহমান লন্ডনে ছিলেন। জোবাইদা রহমান সম্প্রতি দেশে ফিরে ভোটার হলেও তারেক এখনও আবেদন করেননি। ভোটার আইডির জন্য স্বাক্ষর, ১০ আঙুলের ছাপ ও আইরিশ বাধ্যতামূলক হওয়ায় দেশে ফিরেই তিনি সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন বলে জানা গেছে।
 
দলীয় নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে উৎসাহিত। ডিসেম্বরের শুরুতেই তফশিল ঘোষণার সম্ভাবনা থাকায় ধারণা করা হচ্ছে তিনি মধ্য ডিসেম্বরে দেশে ফিরবেন। ফেরার আগে ওমরাহ পালনের বিষয়টিও আলোচনায় রয়েছে। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে চার্টার্ড ফ্লাইটে ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানায়। তাঁর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপির পক্ষ থেকেও বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে, কেনা হয়েছে বুলেটপ্রুফ যানবাহন এবং আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের আবেদন করা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে বাধা নেই এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও দেওয়া হবে।
 
 
দেশে ফিরে তিনি গুলশান-২ অ্যাভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন, যা সম্প্রতি খালেদা জিয়ার অনুকূলে নামজারি হয়েছে। বাড়িটি তাঁর উপযোগী করে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সিসিটিভিসহ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়েই তিনি অফিস করবেন।
 

দলীয় সূত্র বলছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরার দিন রাজধানীতে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী জড়ো হবেন। দীর্ঘ ১৭ বছর লন্ডনে অবস্থানের পর তাঁর ফেরাকে দলটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখছে।

মানবজমিনের প্রথম পাতার খবর— ‘কড়াইল বস্তিতে কেন বারবার আগুন?

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড যেন নিত্যঘটনা। দুর্বল অবকাঠামো, অবৈধ গ্যাস–বিদ্যুৎ সংযোগ, পুরোনো তার, অসচেতনতা—বিভিন্ন তদন্তে এসবই আগুনের প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। কেউ কেউ নাশকতার অভিযোগও তুলছেন। ফায়ার সার্ভিসের মতে, কড়াইলসহ বেশির ভাগ বস্তির আগুন বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকেই শুরু হয়।

 
মঙ্গলবার বিকালের আগুনে প্রায় দেড় হাজার ঘর ভস্মীভূত হয়। কয়েক হাজার মানুষ নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার একের পর এক বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। যানজট ও সরু রাস্তাই ছিল আগুন নেভানোর বড় বাধা।
 
 
ফায়ার সার্ভিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যাদের ১৫ কার্যদিবসে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এর আগেও কড়াইলে বারবার আগুন লেগেছে— ফেব্রুয়ারি, গত বছরের মার্চ ও ডিসেম্বরেও বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রায় ৯০ একর জায়গায় ১০ হাজার ঘরের এই বস্তিতে দাহ্য পদার্থ, চোরাই সংযোগ ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
 
আগুনে সব হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মোসাম্মৎ বানুর মতো অসংখ্য মানুষ। কেউ পোড়া ঘরের ছাই থেকে শেষ সম্বল খুঁজছেন, কেউ ভাঙাড়ি বিক্রি করছেন। বিভিন্ন সংগঠন ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দিচ্ছে, কিন্তু হাজারো পরিবারের সামনে এখন অনিশ্চয়তার অন্ধকার।

যুগান্তরের প্রথম পাতার প্রধান খবরের শিরোনাম— ‌‘নির্বাচিত সরকারের জন্য অশনিসংকেত/ লুটপাটে বিধ্বস্ত ব্যাংক খাত

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ব্যাংক খাত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কার লুটপাটের ভারে নাজুক হয়ে পড়েছে—বিশ্লেষকদের এমন মন্তব্যই এখন বেশি আলোচিত। ঋণ বিতরণে অনিয়ম, অবলোপন, নবায়ন ও দীর্ঘকাল আদালতে ঝুলে থাকা মামলার কারণে খেলাপি ঋণ রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। বর্তমানে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকায়, যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৫% এর বেশি। সরকার পরিবর্তনের পর গত এক বছরেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ লাখ কোটি টাকারও বেশি।

 
এই লাগামহীন ঋণখেলাপির ধাক্কায় অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি। প্রভিশন ঘাটতি তিন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে; কমছে ব্যাংকের আয়যোগ্য সম্পদ। ফলে অন্তত অর্ধেক ব্যাংক এখন কার্যত পঙ্গু অবস্থায়—আমানত ফেরত দেওয়া, নতুন আমানত আকর্ষণ করা– দুটোই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
 

অর্থনীতিবিদদের মতে, প্রকৃত খেলাপি ঋণ ৪০% ছাড়িয়ে যেতে পারে। নতুন সরকারের সামনে তাই বড় চ্যালেঞ্জ—বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানো। কিন্তু উচ্চ সুদের হার, পুঁজি সংকট এবং ব্যাংকের ওপর আস্থাহীনতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, শীর্ষ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে এ সঙ্কট থেকে দেশ বের হতে পারবে না।

কালের কণ্ঠের শেষের পাতার খবর— ‌‘মব-সন্ত্রাসে ১০ মাসে নিহত ১৪০

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান বলছে, দেশে মব সহিংসতা ও গণপিটুনির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে ২৫৬টি ঘটনায় ১৪০ জন নিহত ও ২৩১ জন আহত হয়েছে—এ সংখ্যা আগের দুই বছরকে ছাড়িয়ে গেছে। আসক ও এইচআরএসএসের হিসাবে গত ১২ বছর ১০ মাসে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ, যার বেশির ভাগই ঢাকা বিভাগে। ছেলেধরা সন্দেহ, চুরি–ডাকাতির অভিযোগ, রাজনৈতিক বিভাজন ও ধর্ম অবমাননার গুজব—এসব নানা কারণে গণপিটুনি ঘটছে।

 
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের দুর্বল অবস্থান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিলম্বিত পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলের উদাসীনতায় মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। পুলিশ দুর্বল হলে বা নিষ্ক্রিয় থাকলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। মানবাধিকারকর্মীরা মনে করেন, মব সহিংসতা রোধে কঠোর শাস্তির প্রয়োগ ও সরকারের দৃঢ় অবস্থানের বিকল্প নেই। চিকিৎসকদের মতে, এমন সহিংসতার মানসিক প্রভাব বিশেষত শিশুদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি রেখে যায়।
 
নির্বাচন সামনে এলে গণপিটুনির ঘটনা সাধারণত বাড়ে— পরিসংখ্যানে এমনই ধারা দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে মব সন্ত্রাস ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে।