
মারুফ বাবু, মোংলা প্রতিনিধিঃ
প্রতি বছরের মত এ বছরও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে মোংলায় সর্বসাধারণের জন্য নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ উন্মুক্ত করা হয়েছে। যা দেখতে জনসাধারণের উপচে পরা ভিড় লক্ষ করা গেছে।
আজ (মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর) মোংলা দিগরাজ নেভাল বার্থে বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত যুদ্ধজাহাজ বানৌজা আবু বকর উন্মুক্ত রাখা হয়। বিশেষভাবে সাজানো বাংলাদেশ নৌবাহিনী সব জাহাজকে দেখতে উৎসুক জনসাধারণের উপস্থিতি ছিল বেশ। সুশৃঙ্খলভাবে জনসাধারণ বানৌজা আবু বকর জাহাজটিতে প্রবেশ করেন।
এ সময় জাহাজটি দেখতে ভিড় করেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। সকলকেই দেখানো হয় জাহাজের খুঁটিনাটি সব কিছু। জাহাজের সকল অস্ত্র ও কার্যক্রম সকলের সামনে তুলে ধরেন জাহাজে কর্মরতরা। সব সময়ই এই যুদ্ধ জাহাজ গুলো থেকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ দেখতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা।
আগত দর্শনার্থীরা জানান, সাধারণত যুদ্ধজাহাজ সাধারণ মানুষের জন্য দেখার সুযোগ থাকে না। তাই এই দিনে গুলোতে শিশু, নারী, পুরুষ সব শ্রেণির মানুষ উপস্থিত হন যুদ্ধ জাহাজ দেখার জন্য।
এর আগে দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ বাদ যোহর নৌ অঞ্চলসমূহের মসজিদে স্বাধীনতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত, দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, কমান্ডার খুলনা নৌ অঞ্চল স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী বীরশ্রেষ্ঠ শহিদ রুহুল আমিন ও বীর বিক্রম শহিদ মহিবুল্লাহ’র সমাধিস্থলে ‘গার্ড অব অনার’ ও পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
এছাড়াও, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজসমূহের মধ্যে ঢাকা সদর ঘাঁটে বিএনডিবি গাংচিল, নৌ ইউনিট নারায়ণগঞ্জ নেভাল বার্থে বানৌজা শহীদ ফরিদ, চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে বানৌজা সমুদ্র জয়, খুলনা বিআইডব্লিউটিএ লঞ্চ টার্মিনালে বানৌজা পদ্মা, বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ ঘাঁটে বানৌজা অদম্য এবং পটুয়াখালী পায়রা বন্দর জেটিতে বানৌজা কুশিয়ারা দুপুর ১২টা হতে ৪টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের লাভলেইনে অবস্থিত মেরিটাইম মিউজিয়াম জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। নৌবাহিনীর জাহাজ ও মিউজিয়াম পরিদর্শন এবং বাদ্য পরিবেশনা উপভোগ করতে পেরে জনসাধারণ অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত।
এবছর ৫৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অর্জনের জন্য দশ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ৫৪ জন দক্ষ প্যারা জাম্পার পতাকা বহন করে প্যারা জাম্প করে। দিবসটিকে আরও মহিমান্বিত ও আকর্ষণীয় করে তুলতে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে মনোজ্ঞ ফ্লাই পাস্ট প্রদর্শিত হয়। নৌবাহিনীর সুদক্ষ প্যারা টুপারস এবং চৌকশ পাইলটগণ সেনা ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সাথে প্যারাজাম্প ও ফ্লাই পাস্টে অংশগ্রহণ করে অত্যন্ত সফলতার সাথে তাদের সক্ষমতা ও নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। এই আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ সুপ্রশিক্ষিত নৌসদস্যরা তাদের উদ্যম, শৃঙ্খলা ও পেশাগত সক্ষমতার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী বাহিনী গঠনে দেশের মানুষকে আশান্বিত করে। সেই সাথে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অন্যান্য বাহিনীর সাথে নৌবাহিনীর অর্কেস্ট্রা দল এবং চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সুসজ্জিত ব্যান্ড দল মনোমুগ্ধকর বাদ্য পরিবেশনার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।
এদিকে এসব যুদ্ধজাহাজের মাধ্যমে সমুদ্র সীমানায় নিরাপত্তা প্রদান, সমুদ্র পথে অবৈধ পাচার রোধ সহ সকল অপরাধ কর্ম রোধে নৌবাহিনীর কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানান বানৌজা আবু বকর এর অধিনায়ক।
মারুফ বাবু, মোংলা প্রতিনিধিঃ 






































