সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাঙ্গুনিয়ায় জনবসতি এলাকায় পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণ, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

এমন. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মুহাম্মদপুরে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা ও জনবসতি এলাকায় পৌরসভার ডাস্টবিন স্থাপনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
দ্রুত পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণ প্রকল্প অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মুহাম্মদপুর উত্তর পাড়ায় ডাস্টবিন স্থানান্তরের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।
এদিকে, গত ১০ নভেম্বর ডাস্টবিন নির্মাণ না করার জন্য পৌর প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়া।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে এসময় এলাকাবাসী  অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ এখানে বসবাস করে আসছি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লবের পর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর ও পৌর ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিনের যোগসাজশে এখানে ব্যাক্তি মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জায়গায় পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণের জন্য রাস্তা খননের কার্যক্রম শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে তাঁরা এই এলাকার চলাচলের রাস্তার পাশে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
 তাঁরা আরও বলেন, এই এলাকায় প্রায় ২ থেকে আড়াই’শ বসতি আছে। এখানে একটি মসজিদ ও হাজারো অধিক মানুষ বসবাস করছে। রাস্তাধারে ময়লার ভাগাড়ের কারণে এখানকার শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নরক যন্ত্রণায় পর্যবসিত করেছে। ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ এক-দেড় কিলোমিটার ছড়াচ্ছে। মশা-মাছির উৎপাত এবং উৎকট গন্ধে ওই এলাকায় থাকাটা দায় হয়ে পড়েছে। খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ডাম্পিং করায় ও রিসাইক্লিং ব্যবস্থা না থাকায় পচে গলে বর্জ্যের দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পরিবেশ। হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য।
তাঁরা আরও অভিযোগ করে বলেন, আশপাশের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ পরিবারেই রোগবালাই লেগে আছে। ময়লার ভাগাড়ের পশ্চিম ও উত্তর পাশে আবুল বশর হোসাইনী জামে মসজিদ। আর দক্ষিণ ও পূর্বে রয়েছে ঘরবাড়ি। সেখানেও কয়েক শত মানুষের বসবাস করছে। ময়লার দুর্গন্ধে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সবাই। ময়লার উৎকট দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে বিভিন্ন ঘরবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবে অপরিকল্পিত ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পৌরসভার স্বাভাবিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি এসব বর্জ্যের দুর্গন্ধে জনস্বাস্থ্যের মারত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও ডাস্টবিন নির্মাণ অন্যত্র স্থানান্তরের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পৌর প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জানতে মোঠোফোনে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জমির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমি কোন কথা বলবোনা, পৌর প্রশাসকের সাথে কথা বলুন।’
এব্যাপারে পৌর প্রশাসক দেব ব্রত দাশ বলেন,’আমার পৌরসভায় তো আলাদা কোন জায়গা নেই, যেখানে ডাস্টবিন করবো। আর নদীতে মায়লা ফেলার জন্য অলরেডি পৌরসভা উকিল নোটিশ পেয়েছে। পৌরসভাতে ময়লা ফেলার জন্য আর কোন জায়গা নাই। ঐখানে শুধুমাত্র পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য আলাদা একটা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে।’ ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা যদি নাহয়, তাহলে পৌরসভার ময়লা কোথায় ফেলবো, এটা আমার প্রশ্ন?
তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভায় ময়লার ডাস্টবিন সমস্যা দীর্ঘদিনের। যদি ওখানে ডাস্টবিন নির্মাণ করা নাহয় তাহলে যেখানে করা যায় সে-রকম একটা জায়গা নির্ধারণ করে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা এ সমস্যাটির সুন্দর  সমাধান করব। যাতে জনসাধারনের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উন্নতি সাধিত হয়।’
জনপ্রিয়

যশোরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবক জখম

রাঙ্গুনিয়ায় জনবসতি এলাকায় পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণ, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ০৭:১০:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
এমন. মতিন, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মুহাম্মদপুরে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা ও জনবসতি এলাকায় পৌরসভার ডাস্টবিন স্থাপনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
দ্রুত পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণ প্রকল্প অন্যত্র স্থানান্তরের দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের মুহাম্মদপুর উত্তর পাড়ায় ডাস্টবিন স্থানান্তরের দাবিতে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন এলাকাবাসী।
এদিকে, গত ১০ নভেম্বর ডাস্টবিন নির্মাণ না করার জন্য পৌর প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয়া।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে এসময় এলাকাবাসী  অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ এখানে বসবাস করে আসছি। কিন্তু গত ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লবের পর কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর ও পৌর ইঞ্জিনিয়ার জমির উদ্দিনের যোগসাজশে এখানে ব্যাক্তি মালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জায়গায় পৌরসভার ডাস্টবিন নির্মাণের জন্য রাস্তা খননের কার্যক্রম শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে তাঁরা এই এলাকার চলাচলের রাস্তার পাশে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।
 তাঁরা আরও বলেন, এই এলাকায় প্রায় ২ থেকে আড়াই’শ বসতি আছে। এখানে একটি মসজিদ ও হাজারো অধিক মানুষ বসবাস করছে। রাস্তাধারে ময়লার ভাগাড়ের কারণে এখানকার শিশু, বয়োবৃদ্ধ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নরক যন্ত্রণায় পর্যবসিত করেছে। ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ এক-দেড় কিলোমিটার ছড়াচ্ছে। মশা-মাছির উৎপাত এবং উৎকট গন্ধে ওই এলাকায় থাকাটা দায় হয়ে পড়েছে। খোলা জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ডাম্পিং করায় ও রিসাইক্লিং ব্যবস্থা না থাকায় পচে গলে বর্জ্যের দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে পরিবেশ। হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্য।
তাঁরা আরও অভিযোগ করে বলেন, আশপাশের বাসিন্দাদের বেশিরভাগ পরিবারেই রোগবালাই লেগে আছে। ময়লার ভাগাড়ের পশ্চিম ও উত্তর পাশে আবুল বশর হোসাইনী জামে মসজিদ। আর দক্ষিণ ও পূর্বে রয়েছে ঘরবাড়ি। সেখানেও কয়েক শত মানুষের বসবাস করছে। ময়লার দুর্গন্ধে রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সবাই। ময়লার উৎকট দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে বিভিন্ন ঘরবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ছে। এভাবে অপরিকল্পিত ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পৌরসভার স্বাভাবিক পরিবেশ ও সৌন্দর্য যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি এসব বর্জ্যের দুর্গন্ধে জনস্বাস্থ্যের মারত্মক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ ও ডাস্টবিন নির্মাণ অন্যত্র স্থানান্তরের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পৌর প্রশাসকের প্রতি আহ্বান জানান এলাকাবাসী।
এবিষয়ে জানতে মোঠোফোনে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জমির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে আমি কোন কথা বলবোনা, পৌর প্রশাসকের সাথে কথা বলুন।’
এব্যাপারে পৌর প্রশাসক দেব ব্রত দাশ বলেন,’আমার পৌরসভায় তো আলাদা কোন জায়গা নেই, যেখানে ডাস্টবিন করবো। আর নদীতে মায়লা ফেলার জন্য অলরেডি পৌরসভা উকিল নোটিশ পেয়েছে। পৌরসভাতে ময়লা ফেলার জন্য আর কোন জায়গা নাই। ঐখানে শুধুমাত্র পৌরসভার ময়লা ফেলার জন্য আলাদা একটা প্রজেক্ট নেয়া হয়েছে।’ ডাস্টবিন স্থাপনের ব্যবস্থা যদি নাহয়, তাহলে পৌরসভার ময়লা কোথায় ফেলবো, এটা আমার প্রশ্ন?
তিনি আরও বলেন, ‘পৌরসভায় ময়লার ডাস্টবিন সমস্যা দীর্ঘদিনের। যদি ওখানে ডাস্টবিন নির্মাণ করা নাহয় তাহলে যেখানে করা যায় সে-রকম একটা জায়গা নির্ধারণ করে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সবাইকে নিয়ে আমরা এ সমস্যাটির সুন্দর  সমাধান করব। যাতে জনসাধারনের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উন্নতি সাধিত হয়।’