
লালমনিরহাট প্রতিনিধি ##
নয়জনের পরিবারে পাঁচজনই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। সেই পরিবারের নুরন্নবীই (২৪) একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। দোতারার তালে তালে গান গেয়ে উপার্জনের টাকায় কোনোরকমেই চলছে তাদের সংসার। এমনকি করোনাকালীন সময়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হত দরিদ্রদের সহযোগিতা দিলেও কেউ রাখেনি এ পরিবারটির খোঁজ। তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোনো সহায়তা লালমনিরহাটের সীমান্ত এলাকা আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের চওড়াটারী গ্রামের প্রতিভাবান দোতারাবাদক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নুরন্নবী (২৪)। ৯ সদস্যের পরিবারে বাবা, ভাই-বোন মিলে ৫ জনই তার মত দৃষ্টিশক্তিহীন।
অভাব অনটনের সংসারে জীবন যখন দুর্বিষহ, তখন গ্রামীণ জনপদের হাটবাজার আর শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে দিনভর দোতারার তারে সুর তুলে গান গেয়ে প্রতিদিন ৩/৪ শত টাকা জোটে তার ভাগ্যে। নুরন্নবী তা তুলে দেয় মায়ের হাতে সংসার চালাতে।
অন্ধ দোতারাবাদক নুরন্নবী সময় সংবাদকে জানান, তার শরীর ও আবহাওয়া ভালো থাকলে দোতারা নিয়ে বাইরে গান করতে যান। রিকশা কিংবা অটোচালকদের সাথে এরই মধ্যে তার ভালো সখ্যতা গড়ে উঠেছে। অনেকেই তাকে চিনেন। তারা নামিয়ে দেন নুরন্নবীকে তার গন্তব্যে। দীর্ঘদিনের চলা ফেরায় তিনি রপ্ত করে ফেলেছেন কোথায় গান করলে উপার্জন ভালো হয়।
তিনি জানান, কখনো দুর্গাপুর, সঠিবাড়ি,দুরারকুটিসহ গ্রামীণ জনপদের হাটবাজার আবার কখনো লালমনিরহাটের মিশন মোড়, শেখ রাসেল পার্কের পেছনের মাঠ, সাপ্টিবাড়ি বাজারসহ বিভিন্ন যায়গায় দোতারায় সুর তুলে গান গান। তার গান শুনে অনেকেই পাঁচ, দশ টাকা করে দান করেন। সকলের এই সহযোগিতায় প্রতিদিন তার খরচ বাদে ৩/৪ শত টাকা উপার্জন হয়। বাড়ি ফিরে তা তুলে দেন মা নূরজাহান বেগমের হাতে।
নুরন্নবীর বাবা এনতাজুল সময় সংবাদকে বলেন, অভাবের এই সংসারে শুধুমাত্র সরকার থেকে ৫ জন প্রতিমাসে সাড়ে সাত শত টাকা করে ৩৭৫০ টাকা পাই। এ দিয়ে ৯ জনের সংসারে একবেলা না খেয়ে দিন চলে আমাদের। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, করোনাকালীন সময়ে সরকার অনেক সাহায্য করলেও আমার ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। এমনকি ঈদ পর্বেও চেয়ারম্যান, মেম্বার আমাদেরকে কোনো সহযোগিতা করেনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর বলেন, একই পরিবারে ৫ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীসহ ৯ সদস্যের পরিবারটিকে সহযোগিতা করাসহ প্রয়োজনীয় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিজস্ব সংবাদদাতা 



















