বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্ষেতলালে ৪০ শতাংশ জমির ’লাউ’ গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আবু বক্কর ( ৪৬) নামে এক প্রতিবন্ধী কৃষকের চল্লিশ শতাংশ জমির লাউ গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
গতকাল ১৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোররাতে উপজেলার হোপ পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় তিন জনকে আসামী করে কৃষক আবু বক্কর ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন— উপজেলার হোপ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত ছহির উদ্দিনের ছেলে কুদ্দুস মন্ডল (৪২), একই গ্রামের মৃত খয়ের উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৪৫) ও কুদ্দুস মন্ডলের ছেলে কায়েম (৩০)।
থানায় ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী কৃষক আবু বক্কর ও তার প্রতিপক্ষ আব্দুল কুদ্দুস দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল বলে জানা গেছে। এরআগেও দূর্বৃত্তরা তার ( বিশ শতাংশ) জমির করলাগাছ রাতের অন্ধকারে কেটেছে বলে অভিযোগ করেন কৃষক আবু বক্কর। যদিও আবু বক্করের নিজস্ব কোনো জমি নেই তিনি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। এবারও চলতি মৌসুমে তিনি তার বর্গা নেয়া (চল্লিশ শতাংশ) জমির উপর লকুচ কদু (লাউ) চাষ করেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে তার রোপনকৃত ওই (চল্লিশ শতাংশ) জমির সমস্ত লকুচ কদু (লাউ)গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট চলছিলো… ইতিপূর্বেও একবার তাঁর করলা গাছও কেটে দিয়েছিলো দূর্বৃত্তরা। আবারও আবু বক্করের (চল্লিশ শতাংশ) জমির লাউ গাছ কেটে একটা অমানবিক কাজ করেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে প্রতিবন্ধী আবু বক্করের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি মঙ্গলবার ভোর রাতে আমার জমি দেখার জন্য জমিতে যাই। জমিতে গেলে প্রতিপক্ষদের আমার জমি থেকে দৌড়ে পালাতে দেখি। পরে আমি জমি পর্যবেক্ষণ করে দেখি আমার জমিতে রোপণকৃত সমস্ত লকুচ কদু গাছ কাটা। পরে আমি বুঝতে পারি শত্রুপক্ষ আমার জমির সমস্ত লকুচ কদু গাছ কেটে দিয়ে পালিয়েছে। পরক্ষণেই আমি আমার ভগ্নিপতি সাজ্জাদুল কে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে অন্যায়ভাবে আমার ফসলের গাছ কাটার ব্যপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আমার ভগ্নিপতির মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারপিট খুন জখম করিবে মর্মে হুমকি প্রদান করে। তারা ইতিপূর্বেও আমার (বিশ শতক) জমির করোলাগাছ কেটে দিয়েছে আমি গরিব অসহায় মানুষ তাদের কিছুই করতে পারিনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আবারো আমার চল্লিশ  শতক জমির লকুচ কদু গাছ কেটে দিয়েছে। জমিতে প্রায় ২৫০০ পিচ লকুচ কদু ছিলো যার মূল্য প্রায় এক লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা। আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি তাই আমার সাথে এই অন্যায় কাজের সুষ্ঠ বিচার দাবি করতেছি।
অপরদিকে অভিযুক্ত কুদ্দুস ও তার ছেলে কায়েম এর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা কেউ এমন কাজের সাথে জড়িত নয়। বক্কর আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। কখন এমন ঘটনা ঘটেছে সেই ব্যপারে আমরা সত্যিই জানিনা অথচ তারা আমাদের কে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের লোকজন নিয়ে গায়ে পড়ে আমাদের সাথে ঝগড়া লাগে এবং মারধর করে।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানী বলেন, এই ঘটনায় তিন জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই একজন কে গ্রেফতার করেছি এবং অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
জনপ্রিয়

দেশের উদ্দেশ্যে বাসভবন ছাড়লেন তারেক রহমান

ক্ষেতলালে ৪০ শতাংশ জমির ’লাউ’ গাছ কেটেছে দুর্বৃত্তরা

প্রকাশের সময় : ০২:০৫:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ অগাস্ট ২০২২
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আবু বক্কর ( ৪৬) নামে এক প্রতিবন্ধী কৃষকের চল্লিশ শতাংশ জমির লাউ গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা।
গতকাল ১৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) ভোররাতে উপজেলার হোপ পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় তিন জনকে আসামী করে কৃষক আবু বক্কর ক্ষেতলাল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযুক্তরা হলেন— উপজেলার হোপ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত ছহির উদ্দিনের ছেলে কুদ্দুস মন্ডল (৪২), একই গ্রামের মৃত খয়ের উদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন (৪৫) ও কুদ্দুস মন্ডলের ছেলে কায়েম (৩০)।
থানায় ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী কৃষক আবু বক্কর ও তার প্রতিপক্ষ আব্দুল কুদ্দুস দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল বলে জানা গেছে। এরআগেও দূর্বৃত্তরা তার ( বিশ শতাংশ) জমির করলাগাছ রাতের অন্ধকারে কেটেছে বলে অভিযোগ করেন কৃষক আবু বক্কর। যদিও আবু বক্করের নিজস্ব কোনো জমি নেই তিনি অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। এবারও চলতি মৌসুমে তিনি তার বর্গা নেয়া (চল্লিশ শতাংশ) জমির উপর লকুচ কদু (লাউ) চাষ করেন। গতকাল মঙ্গলবার ভোররাতে তার রোপনকৃত ওই (চল্লিশ শতাংশ) জমির সমস্ত লকুচ কদু (লাউ)গাছ কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট চলছিলো… ইতিপূর্বেও একবার তাঁর করলা গাছও কেটে দিয়েছিলো দূর্বৃত্তরা। আবারও আবু বক্করের (চল্লিশ শতাংশ) জমির লাউ গাছ কেটে একটা অমানবিক কাজ করেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে প্রতিবন্ধী আবু বক্করের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি মঙ্গলবার ভোর রাতে আমার জমি দেখার জন্য জমিতে যাই। জমিতে গেলে প্রতিপক্ষদের আমার জমি থেকে দৌড়ে পালাতে দেখি। পরে আমি জমি পর্যবেক্ষণ করে দেখি আমার জমিতে রোপণকৃত সমস্ত লকুচ কদু গাছ কাটা। পরে আমি বুঝতে পারি শত্রুপক্ষ আমার জমির সমস্ত লকুচ কদু গাছ কেটে দিয়ে পালিয়েছে। পরক্ষণেই আমি আমার ভগ্নিপতি সাজ্জাদুল কে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে অন্যায়ভাবে আমার ফসলের গাছ কাটার ব্যপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আমার ভগ্নিপতির মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারপিট খুন জখম করিবে মর্মে হুমকি প্রদান করে। তারা ইতিপূর্বেও আমার (বিশ শতক) জমির করোলাগাছ কেটে দিয়েছে আমি গরিব অসহায় মানুষ তাদের কিছুই করতে পারিনি এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তারা আবারো আমার চল্লিশ  শতক জমির লকুচ কদু গাছ কেটে দিয়েছে। জমিতে প্রায় ২৫০০ পিচ লকুচ কদু ছিলো যার মূল্য প্রায় এক লক্ষ পঁচাত্তর হাজার টাকা। আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ, অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি তাই আমার সাথে এই অন্যায় কাজের সুষ্ঠ বিচার দাবি করতেছি।
অপরদিকে অভিযুক্ত কুদ্দুস ও তার ছেলে কায়েম এর সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা কেউ এমন কাজের সাথে জড়িত নয়। বক্কর আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। কখন এমন ঘটনা ঘটেছে সেই ব্যপারে আমরা সত্যিই জানিনা অথচ তারা আমাদের কে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাদের লোকজন নিয়ে গায়ে পড়ে আমাদের সাথে ঝগড়া লাগে এবং মারধর করে।
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানী বলেন, এই ঘটনায় তিন জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই একজন কে গ্রেফতার করেছি এবং অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।