মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোদির থেকে ভালো ছিল মনমোহন

আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান :=

বাইরের কোনো সংস্থার সমীক্ষা নয়, সরকারেরই সমীক্ষা। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের জমানায় কতটা শূন্য হয়ে পড়েছে ঘরোয়া অর্থনীতি। শুক্রবার প্রকাশিত দেশটির পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এএফপি, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

গত চার দশকে এই প্রথম ভারতের গ্রামাঞ্চলের চাহিদা এক ধাক্কায় কমে গেছে অনেকটা। কারণ জীবনধারণের জন্য খরচই কমিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। সাত বছর আগেও প্রতি মাসে যে পরিমাণ খরচ তারা করতেন বা করতে পারতেন, এখন তাও করছেন না।এক দিকে জিনিসপত্রের দাম গত ৬ বছরে বেড়েছে। অন্যদিকে গ্রামের মানুষ খরচ করাই কমিয়ে দিয়েছে।

২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষের মাথাপিছু মাসিক খরচ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের তুলনায় ৮ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছে।

হিসাব মতো ২০১১-১২ সালে গ্রামে মাথাপিছু মাসে খরচের পরিমাণ ছিল ১২১৭ টাকা। তা কমে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছে ১১১০ টাকা। শহরের মানুষের খরচ অবশ্য বেড়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির হারও মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় একেবারেই নগণ্য। মাত্র ২ শতাংশ। ২০১১-১২ সালে গড়ে শহরের মানুষ মাথাপিছু মাসে খরচ করত ২২১২ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২২৫৬ টাকা।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রামে ও শহরে চাল, গম ইত্যাদি বাবদ খরচ কমিয়েছে মানুষ। গ্রামে তা কমেছে ২০ শতাংশ হারে, শহরে ৮ শতাংশ হারে। লবণ, চিনি, মসলা বাবদ খরচও গ্রামে ও শহরে অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ডাল, ভোজ্য তেল, ফলমূল সবই কেনা কমিয়েছেন গ্রাম-শহরের মানুষ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই রিপোর্টও নাকি চেপে রেখেছিল ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন। কারণ রিপোর্টে নানা নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। ঠিক যেভাবে লোকসভা ভোটের আগের এনএসএসও-র আর একটি রিপোর্ট চেপে রাখা হয়েছিল।

তাতে বলা হয়েছিল, গত চার দশকে এই প্রথমে কর্মসংস্থানের এত খারাপ অবস্থা দেশে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি এই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, মোদির তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি ছিল গ্রাম ও শহরে।

মনমোহন জমানায় গ্রাম ও শহরে জীবনধারণের জন্য মানুষের খরচ বেড়েছিল অনেকটাই। তাতে চাহিদাও বেড়েছিল অর্থনীতিতে। যেমন, ২০০৯-১০ সাল থেকে ২০১১-১২ সালে গ্রামে মানুষের মাথাপিছু খরচ বেড়েছিল ১৫ শতাংশেরও বেশি। ১০৫৪ টাকা থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ১২১৭ টাকা।শহরে তা বেড়েছিল সাড়ে ১১ শতাংশ হারে। ১৯৮৪ থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ২২১২ টাকা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জ সিজেডএমের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্রের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কৈজুরি পাথালিয়াপাড়া এলাকায় সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) এর জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্র নারী ও পুরুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৈজুরি বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও কৈজুরি মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মো. জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিজেডএমের জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র, শাহজাদপুর উপজেলা শাখার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. ইসমাইল হক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন একাউন্টস অ্যান্ড অ্যাডমিন অফিসার হাফিজুর রহমান, ফিল্ড অফিসার মো. শহিদুল ইসলামসহ জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। শীতবস্ত্র পেয়ে উপকারভোগী নারী ও পুরুষরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শীত মৌসুমে এ সহায়তাকে সময়োপযোগী ও মানবিক উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

মোদির থেকে ভালো ছিল মনমোহন

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৯
আলহাজ্ব মতিয়ার রহমান :=

বাইরের কোনো সংস্থার সমীক্ষা নয়, সরকারেরই সমীক্ষা। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকারের জমানায় কতটা শূন্য হয়ে পড়েছে ঘরোয়া অর্থনীতি। শুক্রবার প্রকাশিত দেশটির পরিসংখ্যান মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এএফপি, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

গত চার দশকে এই প্রথম ভারতের গ্রামাঞ্চলের চাহিদা এক ধাক্কায় কমে গেছে অনেকটা। কারণ জীবনধারণের জন্য খরচই কমিয়ে দিয়েছেন গ্রামের মানুষ। সাত বছর আগেও প্রতি মাসে যে পরিমাণ খরচ তারা করতেন বা করতে পারতেন, এখন তাও করছেন না।এক দিকে জিনিসপত্রের দাম গত ৬ বছরে বেড়েছে। অন্যদিকে গ্রামের মানুষ খরচ করাই কমিয়ে দিয়েছে।

২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের মানুষের মাথাপিছু মাসিক খরচ ২০১১-১২ আর্থিক বছরের তুলনায় ৮ শতাংশেরও বেশি কমে গিয়েছে।

হিসাব মতো ২০১১-১২ সালে গ্রামে মাথাপিছু মাসে খরচের পরিমাণ ছিল ১২১৭ টাকা। তা কমে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছে ১১১০ টাকা। শহরের মানুষের খরচ অবশ্য বেড়েছে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির হারও মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় একেবারেই নগণ্য। মাত্র ২ শতাংশ। ২০১১-১২ সালে গড়ে শহরের মানুষ মাথাপিছু মাসে খরচ করত ২২১২ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২২৫৬ টাকা।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, গ্রামে ও শহরে চাল, গম ইত্যাদি বাবদ খরচ কমিয়েছে মানুষ। গ্রামে তা কমেছে ২০ শতাংশ হারে, শহরে ৮ শতাংশ হারে। লবণ, চিনি, মসলা বাবদ খরচও গ্রামে ও শহরে অন্তত ১৫ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ডাল, ভোজ্য তেল, ফলমূল সবই কেনা কমিয়েছেন গ্রাম-শহরের মানুষ। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই রিপোর্টও নাকি চেপে রেখেছিল ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশন। কারণ রিপোর্টে নানা নেতিবাচক মন্তব্য রয়েছে। ঠিক যেভাবে লোকসভা ভোটের আগের এনএসএসও-র আর একটি রিপোর্ট চেপে রাখা হয়েছিল।

তাতে বলা হয়েছিল, গত চার দশকে এই প্রথমে কর্মসংস্থানের এত খারাপ অবস্থা দেশে। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি এই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাচ্ছে। তা হল, মোদির তুলনায় চাহিদা অনেক বেশি ছিল গ্রাম ও শহরে।

মনমোহন জমানায় গ্রাম ও শহরে জীবনধারণের জন্য মানুষের খরচ বেড়েছিল অনেকটাই। তাতে চাহিদাও বেড়েছিল অর্থনীতিতে। যেমন, ২০০৯-১০ সাল থেকে ২০১১-১২ সালে গ্রামে মানুষের মাথাপিছু খরচ বেড়েছিল ১৫ শতাংশেরও বেশি। ১০৫৪ টাকা থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ১২১৭ টাকা।শহরে তা বেড়েছিল সাড়ে ১১ শতাংশ হারে। ১৯৮৪ থেকে তা বেড়ে হয়েছিল ২২১২ টাকা।