মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেদ্দায় বৈঠকে গুরত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নিলো মুসলিম বিশ্বের নেতারা

নুরুজ্জামান লিটন :=-

সৌ’দি আরবের রা’জধানী জেদ্দায় গত’কাল ইহুদি’বাদী ইসরাইলি একটি পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনার জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি’র

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দখলদার ইসরাইল জর্দান নদীর পশ্চিম তীরকে অধিকৃত ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে জেদ্দায় আলোচনা হয়েছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার এক নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, তার দল বিজয়ী হলে এবং নতুন সরকার গঠন করতে পারলে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরসহ আরো

গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকা অধিকৃত ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুসলিম দেশগুলো নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের আহ্বানে জেদ্দায় ওআইসি’র

বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ বৈঠক কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এতে প্রমাণিত হয় ফিলিস্তিন এখনো মুসলিম বিশ্বের প্রধান সংকট ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই

জর্দান নদীর পশ্চিম তীর এলাকাকে দখল করে নেয়ার যে হুমকি নেতানিয়াহু দিয়েছেন তা এতো সহজ হবে না। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল এসাফ ওআইসির বৈঠকে বলেছেন, ফিলিস্তিন

সংকট মুসলিম দেশগুলোর প্রধান সমস্যা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ বিশেষ করে জর্দান নদীর

পশ্চিম তীর দখলের হুমকির ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তা এবং এ ব্যাপারে আমেরিকার সমর্থনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জেদ্দা বৈঠকে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগ্লু পশ্চিম তীর দখলে নেয়ার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর হুমকিকে নির্লজ্জ অভিহিত করে বলেছেন, “কয়েকটি দেশের সমর্থন নিয়ে ইসরাইল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং দখলদারিত্ব

চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এখন বর্ণবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।” তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “মুসলিম বিশ্ব যদি এ ব্যাপারে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতো তাহলে ইসরাইল ও আমেরিকার কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হতো না এবং তারা এতো ঔদ্ধত্য দেখাতো না।” জেদ্দা বৈঠকের চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখল করে

নেয়ার ইসরাইলি হুমকিকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। সুতরাং এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ওআইসি’র মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমাদ বলেছেন, নেতানিয়াহুর এ ঘোষণা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন। পঞ্চম বিষয়টি হচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো যদি কেবল বিবৃতি প্রকাশ না কোরে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়

তাহলেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটা কিছু করতে পারবে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে শুধু মৌখিক নিন্দা জানিয়ে কোনো লাভ হবে না। কারণ ইসরাইল এ ধরণের নিন্দা জানানোর তোয়াক্কা করে না। এ অবস্থায় ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল করে নেয়ার যে হুমকি দিয়েছে তা মোকাবেলার জন্য মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার কোনা বিকল্প নেই বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

সিরাজগঞ্জ সিজেডএমের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্রের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কৈজুরি পাথালিয়াপাড়া এলাকায় সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) এর জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে ৬০০ হতদরিদ্র নারী ও পুরুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৈজুরি বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও কৈজুরি মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা মো. জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল খালেক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিজেডএমের জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্র, শাহজাদপুর উপজেলা শাখার প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. ইসমাইল হক। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন একাউন্টস অ্যান্ড অ্যাডমিন অফিসার হাফিজুর রহমান, ফিল্ড অফিসার মো. শহিদুল ইসলামসহ জীবিকা উন্নয়ন কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। শীতবস্ত্র পেয়ে উপকারভোগী নারী ও পুরুষরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং শীত মৌসুমে এ সহায়তাকে সময়োপযোগী ও মানবিক উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন।

জেদ্দায় বৈঠকে গুরত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নিলো মুসলিম বিশ্বের নেতারা

প্রকাশের সময় : ০৬:২০:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ মার্চ ২০২০
নুরুজ্জামান লিটন :=-

সৌ’দি আরবের রা’জধানী জেদ্দায় গত’কাল ইহুদি’বাদী ইসরাইলি একটি পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনার জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি’র

পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দখলদার ইসরাইল জর্দান নদীর পশ্চিম তীরকে অধিকৃত ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে জেদ্দায় আলোচনা হয়েছে।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার এক নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, তার দল বিজয়ী হলে এবং নতুন সরকার গঠন করতে পারলে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরসহ আরো

গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকা অধিকৃত ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুসলিম দেশগুলো নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের আহ্বানে জেদ্দায় ওআইসি’র

বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ বৈঠক কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এতে প্রমাণিত হয় ফিলিস্তিন এখনো মুসলিম বিশ্বের প্রধান সংকট ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই

জর্দান নদীর পশ্চিম তীর এলাকাকে দখল করে নেয়ার যে হুমকি নেতানিয়াহু দিয়েছেন তা এতো সহজ হবে না। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল এসাফ ওআইসির বৈঠকে বলেছেন, ফিলিস্তিন

সংকট মুসলিম দেশগুলোর প্রধান সমস্যা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ বিশেষ করে জর্দান নদীর

পশ্চিম তীর দখলের হুমকির ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তা এবং এ ব্যাপারে আমেরিকার সমর্থনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জেদ্দা বৈঠকে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগ্লু পশ্চিম তীর দখলে নেয়ার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর হুমকিকে নির্লজ্জ অভিহিত করে বলেছেন, “কয়েকটি দেশের সমর্থন নিয়ে ইসরাইল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং দখলদারিত্ব

চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এখন বর্ণবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।” তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “মুসলিম বিশ্ব যদি এ ব্যাপারে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতো তাহলে ইসরাইল ও আমেরিকার কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হতো না এবং তারা এতো ঔদ্ধত্য দেখাতো না।” জেদ্দা বৈঠকের চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখল করে

নেয়ার ইসরাইলি হুমকিকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। সুতরাং এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ওআইসি’র মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমাদ বলেছেন, নেতানিয়াহুর এ ঘোষণা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন। পঞ্চম বিষয়টি হচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো যদি কেবল বিবৃতি প্রকাশ না কোরে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়

তাহলেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটা কিছু করতে পারবে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে শুধু মৌখিক নিন্দা জানিয়ে কোনো লাভ হবে না। কারণ ইসরাইল এ ধরণের নিন্দা জানানোর তোয়াক্কা করে না। এ অবস্থায় ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল করে নেয়ার যে হুমকি দিয়েছে তা মোকাবেলার জন্য মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার কোনা বিকল্প নেই বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।