শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুল পড়া ঠেকাবে ১০ খাবার

প্রফেসর জিন্নাত আলী।। 

বংশগত, পরিবেশগত, দুশ্চিন্তা, পুষ্টিহীনতা, স্ট্রেস ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে চুল পড়তে পারে। চুল যদি শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাড় করতে না পারে, তা হলে মাথায় কেবল তেল মেখে আর শ্যাম্পু করে চুল ঠিকঠাক রাখা যাবে না। চুল পড়া ঠেকানো এবং সুস্থ-সবল তরতাজা চুলের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় সহজলভ্য এই ১০টি খাবার রাখতে পারেন।

১.পালংশাক : ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ পালংশাক। এই শাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। হালকাভাবে সিদ্ধ করে একটু নুন-মরিচ দিয়ে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি বাহারি নানা পদে রান্না করেও খাওয়া যায় পালংশাক। আর কেবল পালংশাকই নয়, এমন নানা শাকই চুলের জন্য ভালো।

২.ওট : সকালের নাশতায় দারুণ সংযোজন হতে পারে ওট। ঝটপট নাশতায় দুধে ভিজিয়ে কিংবা কেবল পানিতে ভিজিয়েই ওট খেতে পারেন। দস্তা, তামা, ভিটামিন-বি এবং ভালো মানের প্রোটিনে সমৃদ্ধ ওট। নিয়মিত খাবার তালিকায় ওট রাখতে পারলে বাড়ন্ত চুলের পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য সুফল পেতে পারেন আপনি।

৩.ডিম : ডিমের পুষ্টি উপাদান দুইভাবে চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করতে পারে। ডিম খাওয়ার পাশাপাশি চুলে ডিম মাখলেও উপকার পাবেন। ডিমের সমৃদ্ধ জৈব প্রোটিন শরীরের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর মতোই চুলকেও পুষ্টি জোগায়। ডিমের সাদা অংশের মতোই কুসুমসহ পুরো ডিমও চুলে মাখা যায়। চুলের যত্নে ডিম খুবই উপকারী।

৪.গাজর : প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ গাজর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা জরুরি। চুলের বৃদ্ধিতে দারুণ উপকারী গাজর। গাজরের এই ভিটামিন মাথার ত্বকে ‘সিবাম’ নামের একটা তৈলাক্ত রাসায়নিক উৎপাদনে সাহায্য করে। এটা চুলের গোড়াসহ মাথার খুলির শুষ্কতা রোধে উপকারী। সকাল-বিকেল কাঁচা গাজর খাওয়ার মতোই নানাপদের রান্নাতেও গাজর রাখতে পারেন।

৫.বাদাম : নানা ধরনের বাদামে পাওয়া যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং তেল ত্বক, চুল, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ উপকারী। সাধারণ চীনাবাদাম থেকে শুরু করে, কাজুবাদাম, আখরোট ও অ্যালমন্ড—সবই দারুণ উপকারী খাবার। প্রতিদিনই হালকা খাবার হিসেবে খাওয়ার জন্য নিজের সঙ্গেই অল্প কিছু বাদাম রাখতে পারেন।

৬.মটরশুঁটি : চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান কেরাটিন। মটরশুঁটি ও ডাল এই প্রোটিনে সমৃদ্ধ। শক্তপোক্ত চুলের জন্য নিয়মিত মটর ও ডাল খেতে পারেন। এতে চুলের বৃদ্ধি যেমন হবে, তেমনি চুল থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে। টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।

৭.মাছ : সামুদ্রিক মাছ ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এমন মাছ খেতে পারেন। এসব মাছ আপনার চুল পড়া বন্ধে সাহায্যে করবে।সপ্তাহে ৩-৪ দিন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ খেলে চুল পড়া বন্ধ হবে।

৮.আমলকী: আমলকীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। চুলের পরিচর্যায় যুগ যুগ ধরেই আমলকীর ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন একটা করে আমলকী খেতে পারলে অকালে চুল ঝরে যাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

৯.ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল: ভিটামিন সি’র অভাবে চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে যায়। ফলে চুল ভঙ্গুর, দুর্বল ও চিকন হয়ে যায়। ভিটামিন সি’র অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলে। তাই ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণের জন্য দিনের মধ্যভাগের খাবার তালিকায় টকজাতীয় ফল যেমন- স্ট্রবেরি, কমলা লেবু বা পেঁপে এবং পেয়ারা রাখতে করুন।

১০.দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার : দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা চুলের বেড়ে উঠা এবং নতুন চুল গজানোর জন্য সবচাইতে জরুরী। তাই চুলের সুস্থতা চাইলে প্রতিদিন দুধ পান করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

চুল পড়া ঠেকাবে ১০ খাবার

প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৯
প্রফেসর জিন্নাত আলী।। 

বংশগত, পরিবেশগত, দুশ্চিন্তা, পুষ্টিহীনতা, স্ট্রেস ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে চুল পড়তে পারে। চুল যদি শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগাড় করতে না পারে, তা হলে মাথায় কেবল তেল মেখে আর শ্যাম্পু করে চুল ঠিকঠাক রাখা যাবে না। চুল পড়া ঠেকানো এবং সুস্থ-সবল তরতাজা চুলের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় সহজলভ্য এই ১০টি খাবার রাখতে পারেন।

১.পালংশাক : ভিটামিন ও নানা খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ পালংশাক। এই শাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। হালকাভাবে সিদ্ধ করে একটু নুন-মরিচ দিয়ে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি বাহারি নানা পদে রান্না করেও খাওয়া যায় পালংশাক। আর কেবল পালংশাকই নয়, এমন নানা শাকই চুলের জন্য ভালো।

২.ওট : সকালের নাশতায় দারুণ সংযোজন হতে পারে ওট। ঝটপট নাশতায় দুধে ভিজিয়ে কিংবা কেবল পানিতে ভিজিয়েই ওট খেতে পারেন। দস্তা, তামা, ভিটামিন-বি এবং ভালো মানের প্রোটিনে সমৃদ্ধ ওট। নিয়মিত খাবার তালিকায় ওট রাখতে পারলে বাড়ন্ত চুলের পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য সুফল পেতে পারেন আপনি।

৩.ডিম : ডিমের পুষ্টি উপাদান দুইভাবে চুলের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করতে পারে। ডিম খাওয়ার পাশাপাশি চুলে ডিম মাখলেও উপকার পাবেন। ডিমের সমৃদ্ধ জৈব প্রোটিন শরীরের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর মতোই চুলকেও পুষ্টি জোগায়। ডিমের সাদা অংশের মতোই কুসুমসহ পুরো ডিমও চুলে মাখা যায়। চুলের যত্নে ডিম খুবই উপকারী।

৪.গাজর : প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ গাজর নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখা জরুরি। চুলের বৃদ্ধিতে দারুণ উপকারী গাজর। গাজরের এই ভিটামিন মাথার ত্বকে ‘সিবাম’ নামের একটা তৈলাক্ত রাসায়নিক উৎপাদনে সাহায্য করে। এটা চুলের গোড়াসহ মাথার খুলির শুষ্কতা রোধে উপকারী। সকাল-বিকেল কাঁচা গাজর খাওয়ার মতোই নানাপদের রান্নাতেও গাজর রাখতে পারেন।

৫.বাদাম : নানা ধরনের বাদামে পাওয়া যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান এবং তেল ত্বক, চুল, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ উপকারী। সাধারণ চীনাবাদাম থেকে শুরু করে, কাজুবাদাম, আখরোট ও অ্যালমন্ড—সবই দারুণ উপকারী খাবার। প্রতিদিনই হালকা খাবার হিসেবে খাওয়ার জন্য নিজের সঙ্গেই অল্প কিছু বাদাম রাখতে পারেন।

৬.মটরশুঁটি : চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান কেরাটিন। মটরশুঁটি ও ডাল এই প্রোটিনে সমৃদ্ধ। শক্তপোক্ত চুলের জন্য নিয়মিত মটর ও ডাল খেতে পারেন। এতে চুলের বৃদ্ধি যেমন হবে, তেমনি চুল থাকবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে। টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।

৭.মাছ : সামুদ্রিক মাছ ও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে এমন মাছ খেতে পারেন। এসব মাছ আপনার চুল পড়া বন্ধে সাহায্যে করবে।সপ্তাহে ৩-৪ দিন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ খেলে চুল পড়া বন্ধ হবে।

৮.আমলকী: আমলকীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। চুলের পরিচর্যায় যুগ যুগ ধরেই আমলকীর ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিদিন একটা করে আমলকী খেতে পারলে অকালে চুল ঝরে যাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।

৯.ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল: ভিটামিন সি’র অভাবে চুলের গোঁড়া দুর্বল হয়ে যায়। ফলে চুল ভঙ্গুর, দুর্বল ও চিকন হয়ে যায়। ভিটামিন সি’র অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলে। তাই ভিটামিন সি’র চাহিদা পূরণের জন্য দিনের মধ্যভাগের খাবার তালিকায় টকজাতীয় ফল যেমন- স্ট্রবেরি, কমলা লেবু বা পেঁপে এবং পেয়ারা রাখতে করুন।

১০.দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার : দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারে প্রোটিনের পাশাপাশি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা চুলের বেড়ে উঠা এবং নতুন চুল গজানোর জন্য সবচাইতে জরুরী। তাই চুলের সুস্থতা চাইলে প্রতিদিন দুধ পান করুন