শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়তলীতে মাদক-সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন

হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সকল ধরণের মাদক ইয়াবা, গাঁজা, মদ, বিয়ার, হেরোইন। বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগতরা এসে এই মাদক কিনে নিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যেই। এসব সরাসরি দেখছে এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণ-যুবকেরা। দিনের পর দিন এসব চললেও অসংখ্যবার এই বিষয়ে থানাসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোনোভাবেই বন্ধ হয় না মাদকের এই প্রকাশ্য বেচাকেনা। ফলে এলাকার কিশোর-তরুণরা এমনকি শিশুরাও আসক্ত হচ্ছে মাদকে। জড়িত হচ্ছে মাদক বহন ও বিক্রিতে। এতে করে অসংখ্য পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক রীতিনীতি। শুধু তাই নয়, এলাকায় রাজনীতির নামে উঠতি কিশোর-তরুণদের জোড় করে বিপথগামী করছে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। শিশু ও কিশোরদের নিয়ে তারা কিশোর গ্যাং করে দিনে রাতে এলাকার অলিতে-গলিতে আড্ডায় মশগুল হচ্ছে। এলাকায় চুরি-ছিনতাই হচ্ছে তাদেরকে দিয়ে। এলাকার বাইরে থেকে এসে এলাকার কিশোর-তরুণদের গ্রুপিং এর কারণে মেরে চলে যাচ্ছে। পতিতা ব্যবসা থেকে শুরু করে নানান অপরাধে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। এতোসব অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী এবার রাস্তায় নেমেছেন মাদক-সন্ত্রাস-অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধের দাবি নিয়ে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জুম’আর নামাজের পরপরই চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানাধীন ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আব্দুর পাড়া আদর্শ সমাজ ও শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির ডাকে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এতে আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের হাজারো মুসল্লীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মাদক সন্ত্রাস বন্ধ ও এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করার পর এ-ব্লক বাস স্ট্যান্ড মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে হাজারো অংশগ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দারা একটি গণমিছিল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর পাড়া আদর্শ সমাজ এবং শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির অসংখ্য সচেতন নাগরিকসহ সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ। অংশ নেন আশেপাশের বেশ কয়েকটি মসজিদের কয়েকশত মুসল্লিও।
প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে মাদক সেবন, সে সাথে কিশোর গ্যাং এর উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবত এই এলাকাটিতে চিহ্নিত কয়েকটি পরিবারের নারী, পুরুষ, যুবক যুবতি প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানান এলাকার সাধারণ জনগণ।
স্থানীয় আব্দুরপাড়া সমাজের মুরুব্বি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন সওদাগর জানান, গতকাল বৃহ্স্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আমাদের আব্দুর পাড়া এলাকায় দুপুর ২ টার সময় আনা খাতুন নামের এক মধ্যবয়সী নারীকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় এলাকাবাসী। বিষয়টি পাহাড়তলী থানাকে অবহিত করা হলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ঐ মহিলাকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এলাকাটিতে মাদক বিক্রেতা এবং কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। অসংখ্যবার জানানোর পরেও যারা এটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাই রাস্তায় নেমেছে আজকে।
আব্দুর পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার মসজিদের খুৎবায়, এলাকার মিটিং সিটিং এ আমরা মাদক সন্ত্রাস, অসামাজিক কার্যকলাপ এবং সবচাইতে বেশি যেটা আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে সেটা হচ্ছে কিশোর গ্যাং। তাদের অত্যাচারে এবং এসব অপকর্মে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারছে না। উঠতি কিশোর-তরুণদের বাধ্য করে কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হতে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামেও এখানে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কিছু হচ্ছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। বিপথে যাচ্ছে। তাই এলাকাবাসী আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা আমাদের সমাজের সাথে বসবেন। উনাদেরও আমরা আমাদের এলাকার বিষয়গুলো বলবো।
স্থানীয়দের অনুরোধে মানববন্ধনে অংশ নেয়া দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সহ-সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমার বাড়ি উত্তর কাট্টলীতে হলেও দক্ষিণ কাট্টলীর অসংখ্য সংগঠনের সাথে আমার সম্পৃক্তা আছে। আব্দুরপাড়া ও শাপলা এলাকায় যেভাবে কিশোর গ্যাং এর সংখ্যা বাড়ছে এবং যে হারে মাদক ব্যবসা, সেবন ও পতিতা ব্যবসা বেড়েছে- এতে উঠতি শিশু-কিশোর ও যুব-তরুণরা বেশ ঝুঁকিতে আছে। কিছুদিন আগে আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাং এর অপরাধকান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক চিকিৎসককে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই না এই ধরণের ঘটনা আর ঘটুক। যারাই এসবের সাথে জড়িত, তারা যত বড় প্রভাবশালীই হোক এদের আইনের আওতায় আনা ও যেভাবেই সম্ভব তাদের অপরাধকান্ড থেকে সরিয়ে আনতে প্রশাসনকেই মূখ্যভূমিকা রাখতে হবে।
দক্ষিণ কাট্টলীর স্পৃহা ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মো. জমির আলম বলেন, এখানকার যুব সমাজ প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করছে না বলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদের মনোভাব সব সময় রাখেন তাহলে অচিরেই মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং কর্মকান্ড বন্ধ হবে।
মানববন্ধনে শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও যুব সমাজ প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সমাজের সবাই একতাবদ্ধ থাকলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুরুব্বিদের এবং এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের যদি নিরপেক্ষভাবে আমাদের পাশে পাই, তাহলে আমরাই এসব বন্ধ করতে পারবো। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এলাকায় কারা মাদক ব্যবসা করছে, কিশোর গ্যাং করছে, কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক, সহায়তাকারী- তাদের যদি তালিকাভুক্ত করে আইনী পদক্ষেপ নেয় এবং ধরে তাহলে এটা কমে যাবে।
স্থানীয় মসজিদের মুসল্লী সরোয়ার জাহান মুকুল বলেন, আমরা পুলিশকে তথ্য দেই। কিন্তু অপরাধীরা তথ্যদাতার তথ্য জেনে যায়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। কয়েকদিন আগে বাইরে থেকে কিশোরদের এনে আমাদের এলাকার এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে গেছে। এভাবেতো চলতে পারে না। ৯৯৯ নম্বরে কল করলেও অপরাধীরা কলদাতার তথ্য পেয়ে যায়। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও এইসব অপরাধীদের মদদদাতা। জ্বলন্ত উদাহরণ আকবরশাহ এলাকার নির্মম ঘটনটি। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার কারণে সন্তান ও পিতার উপর হামলা হয়েছে। পিতা মারা গেছে। অথচ চিহ্নিতরা, অভিযুক্তরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি, ওপেন ঘোরাঘুরি করছে। আমি আজকের এই মানববন্ধনের কথা শুনে নিজে থেকেই এসেছি আমার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করতে। সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

পাহাড়তলীতে মাদক-সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশের সময় : ০৬:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সকল ধরণের মাদক ইয়াবা, গাঁজা, মদ, বিয়ার, হেরোইন। বিভিন্ন এলাকা থেকে বহিরাগতরা এসে এই মাদক কিনে নিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যেই। এসব সরাসরি দেখছে এলাকার শিশু-কিশোর-তরুণ-যুবকেরা। দিনের পর দিন এসব চললেও অসংখ্যবার এই বিষয়ে থানাসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কোনোভাবেই বন্ধ হয় না মাদকের এই প্রকাশ্য বেচাকেনা। ফলে এলাকার কিশোর-তরুণরা এমনকি শিশুরাও আসক্ত হচ্ছে মাদকে। জড়িত হচ্ছে মাদক বহন ও বিক্রিতে। এতে করে অসংখ্য পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক রীতিনীতি। শুধু তাই নয়, এলাকায় রাজনীতির নামে উঠতি কিশোর-তরুণদের জোড় করে বিপথগামী করছে কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। শিশু ও কিশোরদের নিয়ে তারা কিশোর গ্যাং করে দিনে রাতে এলাকার অলিতে-গলিতে আড্ডায় মশগুল হচ্ছে। এলাকায় চুরি-ছিনতাই হচ্ছে তাদেরকে দিয়ে। এলাকার বাইরে থেকে এসে এলাকার কিশোর-তরুণদের গ্রুপিং এর কারণে মেরে চলে যাচ্ছে। পতিতা ব্যবসা থেকে শুরু করে নানান অপরাধে অতিষ্ঠ এলাকার মানুষ। এতোসব অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী এবার রাস্তায় নেমেছেন মাদক-সন্ত্রাস-অসামাজিক কার্যক্রম বন্ধ ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বন্ধের দাবি নিয়ে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জুম’আর নামাজের পরপরই চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানাধীন ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডের আব্দুর পাড়া আদর্শ সমাজ ও শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির ডাকে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এতে আশেপাশের কয়েকটি মসজিদের হাজারো মুসল্লীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মাদক সন্ত্রাস বন্ধ ও এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করার পর এ-ব্লক বাস স্ট্যান্ড মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে হাজারো অংশগ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দারা একটি গণমিছিল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন অলি-গলি প্রদক্ষিণ করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর পাড়া আদর্শ সমাজ এবং শাপলা আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির অসংখ্য সচেতন নাগরিকসহ সমাজের মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গ। অংশ নেন আশেপাশের বেশ কয়েকটি মসজিদের কয়েকশত মুসল্লিও।
প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে মাদক সেবন, সে সাথে কিশোর গ্যাং এর উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন যাবত এই এলাকাটিতে চিহ্নিত কয়েকটি পরিবারের নারী, পুরুষ, যুবক যুবতি প্রকাশ্যেই মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানান এলাকার সাধারণ জনগণ।
স্থানীয় আব্দুরপাড়া সমাজের মুরুব্বি ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম হোসেন সওদাগর জানান, গতকাল বৃহ্স্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আমাদের আব্দুর পাড়া এলাকায় দুপুর ২ টার সময় আনা খাতুন নামের এক মধ্যবয়সী নারীকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে সক্ষম হয় এলাকাবাসী। বিষয়টি পাহাড়তলী থানাকে অবহিত করা হলে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে ঐ মহিলাকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এলাকাটিতে মাদক বিক্রেতা এবং কিশোর গ্যাং এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ জনগণ। অসংখ্যবার জানানোর পরেও যারা এটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে তাদের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তাই রাস্তায় নেমেছে আজকে।
আব্দুর পাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রতি শুক্রবার মসজিদের খুৎবায়, এলাকার মিটিং সিটিং এ আমরা মাদক সন্ত্রাস, অসামাজিক কার্যকলাপ এবং সবচাইতে বেশি যেটা আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে সেটা হচ্ছে কিশোর গ্যাং। তাদের অত্যাচারে এবং এসব অপকর্মে আমরা অতিষ্ঠ। আমাদের ছেলে-মেয়েরা নিরাপদে চলতে পারছে না। উঠতি কিশোর-তরুণদের বাধ্য করে কিশোর গ্যাংয়ে যুক্ত হতে। রাজনৈতিক সংগঠনের নামেও এখানে কিশোর গ্যাং সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতিবাদ করেও কিছু হচ্ছে না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা মাদকাসক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে। বিপথে যাচ্ছে। তাই এলাকাবাসী আজ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় পাহাড়তলী থানার কর্মকর্তারা আমাদের সমাজের সাথে বসবেন। উনাদেরও আমরা আমাদের এলাকার বিষয়গুলো বলবো।
স্থানীয়দের অনুরোধে মানববন্ধনে অংশ নেয়া দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার সহ-সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমার বাড়ি উত্তর কাট্টলীতে হলেও দক্ষিণ কাট্টলীর অসংখ্য সংগঠনের সাথে আমার সম্পৃক্তা আছে। আব্দুরপাড়া ও শাপলা এলাকায় যেভাবে কিশোর গ্যাং এর সংখ্যা বাড়ছে এবং যে হারে মাদক ব্যবসা, সেবন ও পতিতা ব্যবসা বেড়েছে- এতে উঠতি শিশু-কিশোর ও যুব-তরুণরা বেশ ঝুঁকিতে আছে। কিছুদিন আগে আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাং এর অপরাধকান্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক চিকিৎসককে জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই না এই ধরণের ঘটনা আর ঘটুক। যারাই এসবের সাথে জড়িত, তারা যত বড় প্রভাবশালীই হোক এদের আইনের আওতায় আনা ও যেভাবেই সম্ভব তাদের অপরাধকান্ড থেকে সরিয়ে আনতে প্রশাসনকেই মূখ্যভূমিকা রাখতে হবে।
দক্ষিণ কাট্টলীর স্পৃহা ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মো. জমির আলম বলেন, এখানকার যুব সমাজ প্রতিবাদ করে আসছে। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করছে না বলে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সবাই যদি সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদের মনোভাব সব সময় রাখেন তাহলে অচিরেই মাদক সন্ত্রাস, কিশোর গ্যাং কর্মকান্ড বন্ধ হবে।
মানববন্ধনে শাপলা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা ও যুব সমাজ প্রতিনিধি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সমাজের সবাই একতাবদ্ধ থাকলে এসব অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা মুরুব্বিদের এবং এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের যদি নিরপেক্ষভাবে আমাদের পাশে পাই, তাহলে আমরাই এসব বন্ধ করতে পারবো। তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এলাকায় কারা মাদক ব্যবসা করছে, কিশোর গ্যাং করছে, কারা তাদের পৃষ্ঠপোষক, সহায়তাকারী- তাদের যদি তালিকাভুক্ত করে আইনী পদক্ষেপ নেয় এবং ধরে তাহলে এটা কমে যাবে।
স্থানীয় মসজিদের মুসল্লী সরোয়ার জাহান মুকুল বলেন, আমরা পুলিশকে তথ্য দেই। কিন্তু অপরাধীরা তথ্যদাতার তথ্য জেনে যায়। এতে তারা ক্ষীপ্ত হয়ে আমাদের হুমকি-ধমকি দেয়। কয়েকদিন আগে বাইরে থেকে কিশোরদের এনে আমাদের এলাকার এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে গেছে। এভাবেতো চলতে পারে না। ৯৯৯ নম্বরে কল করলেও অপরাধীরা কলদাতার তথ্য পেয়ে যায়। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও এইসব অপরাধীদের মদদদাতা। জ্বলন্ত উদাহরণ আকবরশাহ এলাকার নির্মম ঘটনটি। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার কারণে সন্তান ও পিতার উপর হামলা হয়েছে। পিতা মারা গেছে। অথচ চিহ্নিতরা, অভিযুক্তরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি, ওপেন ঘোরাঘুরি করছে। আমি আজকের এই মানববন্ধনের কথা শুনে নিজে থেকেই এসেছি আমার জায়গা থেকে প্রতিবাদ করতে। সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসতে হবে।