শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উল্লাপাড়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছে, নেই শুধু শিক্ষার্থী 

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের দাদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী আছে অবকাঠামো,আলমারি, চেয়ার-টেবিল ও শিক্ষাসামগ্রী। শুধু নেই কোনো শিক্ষার্থী।
তবে বিভিন্ন শ্রেণির হাজিরা খাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি।
সরেজমিনে দেখা যায়,এ বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী নেই।কিন্তু হাজিরা খাতায় শিক্ষকরা নিয়মিত শিক্ষার্থী উপস্থিতি দেখিয়ে আসছেন।পড়ে থেকে শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলোতে জমেছে ধুলোর স্তর।বিদ্যালয়ের অফিস চেয়ারে বসে খোশ গল্প করছেন শিক্ষকরা।এই চিত্র প্রতিকার্য দিবসের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবার গিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে।
সেখানে কর্মরত ওয়াশ ব্লকের মিস্তিরিরা জানান,তারাও গত ছয় দিন যাবৎ কাজ করছেন তবে গত ছয় দিনে কোন ছাত্রছাত্রীর দেখা মেলেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী ও সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা এই প্রতিষ্ঠানটির।এ ছাড়া ভূমি দাতার ছেলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের অনেক আগে থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকায় অনেক আগে থেকেই  শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পরেছে বিদ্যালয়টি।এর আগেও শিক্ষার্থী শুন্যর বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। কাগজ-কলমে ৫৪ জন  শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে ৮-১০ জনও পাঠগ্রহণ করে না।তাও আবার স্কুলে আসে না কেউই।তবে শিক্ষার্থী হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি দেখানো হয়।কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থী ছাড়াই চলছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ,শিক্ষার্থী শূন্য প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে সেটি বোধগম্য নয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানা বলেন,বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই  তা তো দেখতেই পারছেন।ধান কাটাকাটি শুরু হয়েছে তাই বাচ্চারা স্কুলে আসে না। আমরা কি করব আমাদের আসতেই হয়। তিনি সভাপতির স্ত্রী কিনা জানতে চাইলে তিনি কথা এড়িয়ে যান।
সাইমা সুলতানা নামের আরেক সহকারী শিক্ষিকা বলেন,‘শিক্ষার্থী শুন্য দেখতেই তো পাচ্ছেন,এটা অস্বীকার করার কিছুই নেই,প্রতি ক্লাসে দুই তিন জন করে  তাও আসেনা।আমি নতুন এসেছি তবে অনেক আগেই থেকে দ্বন্দ্বের কারনে এখানে কেউ শিক্ষার্থীদের দেয় না।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলো সত্য নয়।শিক্ষার্থী আছে এখন নেই খন্দের সময় তাই কেউই আসে নাই।
পূর্বে থেকেই একটা দ্বন্দের কারনে  শিক্ষার্থী একটু কম।
এ বিষয়ে ভূমিদাতা মৃত আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুল জলিল সাবেক প্রধান শিক্ষকের দিকে অভিযোগ এনে বলেন স্কুলের এই অবস্থার জন্য উনিই দ্বায়ী৷তবে চেষ্টা চলছে প্রতিষ্ঠান কে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার৷
উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন বলেন,ওই প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থা সেটি আমার জানা নেই।তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন,প্রতিষ্ঠানটির খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লাপাড়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছে, নেই শুধু শিক্ষার্থী 

প্রকাশের সময় : ০৫:০৭:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের দাদনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী আছে অবকাঠামো,আলমারি, চেয়ার-টেবিল ও শিক্ষাসামগ্রী। শুধু নেই কোনো শিক্ষার্থী।
তবে বিভিন্ন শ্রেণির হাজিরা খাতায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতি।
সরেজমিনে দেখা যায়,এ বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেনী থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী নেই।কিন্তু হাজিরা খাতায় শিক্ষকরা নিয়মিত শিক্ষার্থী উপস্থিতি দেখিয়ে আসছেন।পড়ে থেকে শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলোতে জমেছে ধুলোর স্তর।বিদ্যালয়ের অফিস চেয়ারে বসে খোশ গল্প করছেন শিক্ষকরা।এই চিত্র প্রতিকার্য দিবসের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবার গিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসে।
সেখানে কর্মরত ওয়াশ ব্লকের মিস্তিরিরা জানান,তারাও গত ছয় দিন যাবৎ কাজ করছেন তবে গত ছয় দিনে কোন ছাত্রছাত্রীর দেখা মেলেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী ও সভাপতি আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারনে শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা এই প্রতিষ্ঠানটির।এ ছাড়া ভূমি দাতার ছেলে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা ও সাবেক প্রধান শিক্ষকের অনেক আগে থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকায় অনেক আগে থেকেই  শিক্ষার্থী শুন্য হয়ে পরেছে বিদ্যালয়টি।এর আগেও শিক্ষার্থী শুন্যর বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এসেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,চলমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা স্কুল থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে। কাগজ-কলমে ৫৪ জন  শিক্ষার্থী দেখানো হলেও বাস্তবে ৮-১০ জনও পাঠগ্রহণ করে না।তাও আবার স্কুলে আসে না কেউই।তবে শিক্ষার্থী হাজিরা খাতায় সন্তোষজনক উপস্থিতি দেখানো হয়।কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থী ছাড়াই চলছে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এতে করে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে অভিভাবক ও স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ,শিক্ষার্থী শূন্য প্রতিষ্ঠানে কীভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদান করা হচ্ছে সেটি বোধগম্য নয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাদিয়া সুলতানা বলেন,বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই  তা তো দেখতেই পারছেন।ধান কাটাকাটি শুরু হয়েছে তাই বাচ্চারা স্কুলে আসে না। আমরা কি করব আমাদের আসতেই হয়। তিনি সভাপতির স্ত্রী কিনা জানতে চাইলে তিনি কথা এড়িয়ে যান।
সাইমা সুলতানা নামের আরেক সহকারী শিক্ষিকা বলেন,‘শিক্ষার্থী শুন্য দেখতেই তো পাচ্ছেন,এটা অস্বীকার করার কিছুই নেই,প্রতি ক্লাসে দুই তিন জন করে  তাও আসেনা।আমি নতুন এসেছি তবে অনেক আগেই থেকে দ্বন্দ্বের কারনে এখানে কেউ শিক্ষার্থীদের দেয় না।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইরফান আলী বলেন,‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, সেগুলো সত্য নয়।শিক্ষার্থী আছে এখন নেই খন্দের সময় তাই কেউই আসে নাই।
পূর্বে থেকেই একটা দ্বন্দের কারনে  শিক্ষার্থী একটু কম।
এ বিষয়ে ভূমিদাতা মৃত আব্দুল করিমের ছেলে আব্দুল জলিল সাবেক প্রধান শিক্ষকের দিকে অভিযোগ এনে বলেন স্কুলের এই অবস্থার জন্য উনিই দ্বায়ী৷তবে চেষ্টা চলছে প্রতিষ্ঠান কে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার৷
উল্লাপাড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সরোয়ার হোসেন বলেন,ওই প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থা সেটি আমার জানা নেই।তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন,প্রতিষ্ঠানটির খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’